১০ বছরে ১২ লক্ষ মামলায় ২৫ লক্ষ নেতাকর্মী আসামীঃ ডা. শাহাদাৎ

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিগত ১০ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১২ লক্ষ মামলায় ২৫ লক্ষ আসামী করা হয়েছে। সরকারের নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে অনেকেই ঘর-বাড়ী ছাড়া হয়ে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে। অনেকেই দিনে আনে দিনে খায়। আর ভোটারবিহীন সরকারের শিল্পমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি ৩০ ট্রাক চামড়া কিনে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে? আওয়ামী সিন্ডিকেট চামড়া ব্যবসায়ীদের কারসাজীর কারণে চামড়া শিল্পের এ করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পমন্ত্রী নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপির উপর দোষ চাপিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেছে। এ ধরনের অবান্তর, অনৈতিক ও কাল্পনিক বক্তব্য দেয়ার জন্য জাতির কাছে তার ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করা উচিত।

তিনি আজ ১৯ আগষ্ট সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় চত্বরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে ডা. শাহাদাত হোসেন আরো বলেন, আওয়ামী সিন্ডিকেট চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া ব্যবসার নামে শত শত কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছে। কিন্তু সেই টাকা চামড়া খাতে ইনভেস্ট না করে তারা দেশ বিদেশে ভ্রমণ করছে। দেশ বিদেশে বাড়ীগাড়ী কিনে অন্য ব্যবসায় টাকা ইনভেস্ট করেছে। যার ফলে সরকারী নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে চামড়ার মজুদ করেনি। সরকারের এ ব্যর্থতায় শিল্পমন্ত্রী কোনমতেই দায় এড়াতে পারে না। এ দায় সরকারের। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেছেন, এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার নজিরবিহীন দরপতন সরকারের ব্যর্থতা বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিনাভোটে নির্বাচিত অবৈধ শিল্পমন্ত্রী বলছে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিএনপিই কোরবানি পশুর চামড়া কিনে ফেলে দিয়েছে। শিল্পমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে ‘হাস্যকর ও আজগুবি’। মন্ত্রীর এমন বক্তব্য জাতীর সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়? এমন হাস্যকর বক্তব্যবের জন্য শিল্প মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিষ্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মামলা, হামলা, গুম, খুন জলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা নি:শ্ব হয়ে গেছে। বর্তমান অবৈধ সরকারের আমলে দেশের মানুষে মানুষের কোন অধিকার নেই, সমাজিক মর্যাদা নেই। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিকল্প নেই। জাতীয়তাবাদী স্বেচছাসেবক দলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই তারা দেশ চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সুপরিকল্পিতভাবে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। এখন তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তাদের মন্ত্রী এমপিরা অর্বাচীনের মত কথা বলছে।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান বলেন, ১৯৮০ সালের ১৯ আগস্ট বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান দেশের বিভিন্ন দুর্যোগ মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চিন্তা থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করেছিলেন। তাই গণতন্ত্র পুন:রুদ্ধার ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে স্বেচ্ছাসেবক দল নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর পরিচালনায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ আজিজ, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহ আলম, আর. ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, কাউন্সিলর আবুল হাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন মুবিন, নগর মহিলা দলের সভাপতি কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান দিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদ প্রমুখ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপি কর্মসূচি পালিত হয়। সকাল ৬ টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১১ টায় নগরীর বিপ্লব উদ্যানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.