কক্সবাজারে বদি কন্যার কোটি টাকার রাজকীয় বিয়ে

0

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ) আসনের বহুল আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও একই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার চৌধুরীর এক মাত্র কন্যা সামিয়ার রহমান সানী’র রাজকীয়ভাবে মহা ধুমধামে হয়ে গেলো বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ার ঐতিহ্যবাহী মরহুম এজাহার মিয়া ‘কোম্পানির বাড়িতে’ এ রাজ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। মেজবানে ৬৮টি গরু ও মহিষ, ২৩৫টি ছাগল জবাই করে এমপি দম্পতি কন্যার এই বিশাল আয়োজনে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষকে খাওয়ানো হয়। কক্সবাজারসহ সারাদেশ থেকে আগত ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার দাওয়াতি ও ভিআইপি এবং ৪০ হাজার থেকে ৪২ হাজার নিজ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ এমপি দম্পতির বিয়ে খেয়েছেন। এ বিয়েতে খরচ হয়েছে প্রায় ২ কোটি টকার উপরে বলে জানান এলাকার একজন সাবেক চেয়ারম্যান।

বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে সাজসজ্জার সরঞ্জামাদি আনা হয়। আয়োজনের পুরোটা তদারকি করেন আবদুর রহমান বদি। টেকনাফের ইতিহাসে এমন রাজকীয় বিয়ে আর দেখেনি স্থানীয়রা। মূল ফটক থেকে বর-কনের মঞ্চ, খাবারের প্যান্ডেল পর্যন্ত কারুকাজ ছিল। প্রধান গেট থেকে পুরো এলাকাজুড়ে বর্ণিল, চোখ ধাঁধানো আলোর বিচ্ছুরণ ছিল। এ আয়োজন ঘিরে টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার এমপি শাহীন আক্তার চৌধুরী ও আবদুর রহমান বদির বাড়ির আঙিনা অভিজাত সাজে সাজানো হয়।

সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ব্যক্তিগত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন বলেন, বর নেত্রকোনার জয়নগরের ঐতিহ্যবাহী বুনিয়াদি পরিবারের মনোয়ারা ম্যানশনের সুরত আলী ও বেগম মনোয়ারা আক্তারের ছেলে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীন।এমপি কন্যা সামিয়া রহমান সানির সঙ্গে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীনের প্রায় নয় মাস আগে আকদ সম্পন্ন হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজকীয় এ বিয়ের জন্য সপ্তাহ ধরে শুধু মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি এবং সাজসজ্জার কাজ করা হয়। একজন ডেকোরেশন কর্মী জানিয়েছেন, খাবার বাদ দিলে শুধু সাজসজ্জায়ই ব্যয় হয়েছে কোটি টাকার ওপর।

আবদুর রহমান বদির পারিবারিক বাসস্থান কোম্পানি বাড়ির পার্শ্বে প্রায় কোয়ার্টার কিলোমিটারজুড়ে সুসজ্জিত প্যান্ডেল ও রান্নাবান্নার ব্যবস্থা, অতিথিদের অভ্যর্থনার ব্যবস্থা পৃথক খাওয়ার প্যান্ডেল এবং ওয়াশ রুমের ব্যবস্থা করা হয়। মেজবানে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বয়, বাবুর্চি, ভলান্টিয়ার, ওয়াশবয় দায়িত্ব পালন করেছে। বর-কনের জন্য করা হয়েছে আলিশান রাজকীয় স্টেজ। প্রতি ব্যাচে প্রায় ৫ হাজার মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু করে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এই খাওয়াদাওয়া চলে।

এ বিষয়ে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ব্যক্তিগত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন বলেন, বর নেত্রকোনার জয়নগরের ঐতিহ্যবাহী বুনিয়াদি পরিবারের মনোয়ারা ম্যানশনের সুরত আলী ও বেগম মনোয়ারা আক্তারের ছেলে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীন। এমপি কন্যা সামিয়া রহমান সানির সঙ্গে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীনের প্রায় নয় মাস আগে আকদ সম্পন্ন হয়। আবদুর রহমান বদি ও শাহীন আক্তার চৌধুরীর মেয়ে সামিয়া রহমান সানি বর্তমানে ঢাকার লন্ডন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজে অনার্স তৃতীয় সেমিস্টারে পড়েন।

এদিকে আবদুর রহমান বদির একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিয়েও রাজনীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

তাদের অভিযোগ, বদি মেয়ের বিয়ে নিয়েও সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি কেবল তার অনুসারী হিসেবে পরিচিতদের মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছেন। বিয়েতে নিমন্ত্রণ না পেয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। উখিয়া উপজেলা যুবলীগ পাল্টা আয়োজন হিসেবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজের আয়োজন করে। নেতাকর্মীরা চাঁদা তুলে এ আয়োজন করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, আবদুুর রহমান বদির সংসদ সদস্য নির্বাচন ও বদিপত্নী শাহীন আকতার চৌধুরীর সংসদ সদস্য নির্বাচনে যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানবাজি রেখে কাজ করলেও মেয়ের বিয়েতে যুবলীগকে মূল্যায়ন করেনি। এ নিয়ে যুবলীগের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুব্ধ। চাঁদা তুলে ভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দাওয়াতবঞ্চিত ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.