বিয়ের গেইট দিয়ে বর সেজে নয়-লাশের খাটিয়াই বের হলো সোলায়মানের

0

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ কি নিদারুণ মর্মান্তিক ঘটনা। বিধাতার কি খেলা। যে সাজানো গেইট দিয়ে বর সেজে কনের বাড়ি যাওয়ার কথা সেই গেইট দিয়ে খাটিয়ায় করে লাশ হয়ে কবরে গেলেন প্রবাসী যুবক সোলেয়মান। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শান্তি নিকেতন এলাকায় হৃদয় বিদারক এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্তম্বিত, শোকে মুয্যমান পুরো এলাকা।

বিয়ের আগে গায়ে হলুদের দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মোহাম্মদ সোলাইমান (৩০) নামে এই প্রবাসীর যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোলাইমান উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের মোগলের হাট নলুয়ারপাড়া এলাকার মোহাম্মদ জাফর আহম্মদের ছেলে।

বুধবার সকাল ৯টা দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী সোলাইমানের মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। বুধবার তাার মেহেদি রাত ছিল এবং বৃহস্পতিবার বিয়ের মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

হোছনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা সেকান্দর জানান, মঙ্গলবার রাত থেকেই সোলাইমান তার শরীর খারাপ লাগার বিষয়টি বাড়ির লোকদের জানিয়েছিল। সকালে বাগ্‌দত্তা তরুণীর সঙ্গে তার ফোনে কথা হচ্ছিল। কিন্তু কথা বলতে বলতেই খারাপ লাগছে বলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সোলাইমান। পরে তাকে চন্দ্রঘোনা ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা সেকান্দর হোসেন আরও বলেন, পাত্রীর সঙ্গে ১০ দিন আগে সামাজিকভাবে সোলাইমানের আক্দ সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। এ জন্য কমিউনিটি সেন্টার, ঘর সাজানো, বাড়িতে প্যান্ডেল করা, অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল।

স্বজনেরা জানান, সোলাইমান পরিবারের বড় সন্তান। দীর্ঘ সময় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরলে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শান্তিনিকেতন এলাকার এক মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ের ঠিক হয়।

বিয়ে বাড়ির সব আয়োজন শেষ। অপেক্ষা শুধু নতুন বউ ঘরে তোলার। কথা ছিল নব বধু নিয়ে স্টেইজে বসার কিন্তু সব ঠিক থাকলেও বরের নিথর দেহ পড়ে আছে বাড়ীর উঠানে খাটের উপর। সাজানো প্যান্ডেলে বাড়িভর্তী মেহেমান সহ পরিবারের স্বজনরা যেখানে আনন্দ-উৎসব করার কথা ছিল, সেখানে লাশের কফিনকে ঘিরে বাড়িতে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ছে। কে দেবে কাকে সান্তনা। বিয়ে বাড়ির এমন শোকের মাতম ছড়িয়ে পড়েছে পুরা উপজেলায়।

পরিবারের স্বজনরা জানায়, নিহত সোলাইমান পরিবারের সবার বড় সন্তান। দীর্ঘ সময় প্রবাসে ছিল সে। সম্প্রতি দেশে ফিরলে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শান্তিনিকেতন এলাকা থেকে তার বিয়ের পাত্রি ঠিক হয়। গত ১০ দিন আগে তার আকদও সম্পন্ন হয় ওই মেয়ের সাথে। সেই থেকে ফোনে তাদের নিয়মিত কথা হতো। মারা যাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তার সাথে কথা হয়েছিল বর সোলাইমানের। কিন্তু যেদিন তার মেহেদী রাত ছিল সেদিন বিয়ের আসরেই সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। একই দিন বাদে আ’সর জানাজা নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.