রোহিঙ্গাদের এনআইডি প্রদানঃ ইসি কর্মচারীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিটি নিউজঃ রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মচারীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কমিশন।
আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে সিএমপির কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
তারা হলেন- চট্টগ্রাম নগরীর ডাবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী মো. জয়নাল আবেদীন (৩৫)। তার বন্ধু পটিয়া উপজেলার মৃত হারাধন দাসের ছেলে বিজয় দাস (২৬) ও তার বোন সীমা দাস ওরফে সুমাইয়া আক্তার (২৪)। এর মধ্যে বিজয় দাস পেশায় গাড়িচালক। আর সুমাইয়া চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আয়া পদে অস্থায়ীভিত্তিতে কর্মরত রয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীন বলেন, নির্বাচন কার্যালয়ে থেকে আটক ৩জনসহ মোট ৫ জনকে আসামী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং নির্বাচন কমিশন আইনে মামলাটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ গুরুত্বের সাথে মামলার তদন্তকাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য- ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে গায়েব হয়ে যায় এনআইডি কার্ডের তথ্য ইনপুট করার জন্য ব্যবহৃত বিশেষ একটি ল্যাপটপ।
বিশেষ কিছু কম্পিউটার ছাড়া এনআইডির তথ্য ইনপুটের সুযোগ না থাকায় ভোটার তালিকা তৈরির জন্য ব্যবহৃত ওই ল্যাপটপটি দিয়েই রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরি করা হচ্ছে বলে ধারণা দুদক কর্মকর্তাদের। সেই ধারণার ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়েই সোমবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের এই তিনজনকে আটক করা হয়।
এর আগে, রবিবার সকালে রোহিঙ্গাদের ভুয়া পরিচয়পত্রের বিষয়ে তদন্তের জন্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল সেখানে এ অভিযান চালায়। দুদক টিম নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে রোহিঙ্গাদের এনআইডি সংরক্ষিত থাকার প্রমাণ এবং এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধিসহ এই দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি লাকী ওরফে রমজান বিবি নামে এক রোহিঙ্গা নারী জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে এসে পুলিশের হাতে আটক হন। পরে তার স্মার্টকার্ড পরীক্ষা করে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে থাকা কোড নম্বরের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। জানা যায়, ঐ রোহিঙ্গা নারী ভুয়া ঠিকানা দিয়ে তৈরি করিয়েছেন জাল এনআইডি।
এর আগে সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার করা এবং স্মার্টকার্ড পাইয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।