আবরারের রক্তে এদেশে ফ্যাসিবাদ পতনের বীজ রোপন হয়েছেঃ মোশাররফ

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আবরারের রক্তে এদেশে ফ্যাসিবাদ পতনের বীজ রোপন হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে চারটি চুক্তি বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী ও জনস্বার্থ বিরোধী।

আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

পুলিশের অনুমতি উপেক্ষা করে রাজধানীতে পূর্বঘোষিত এ জনসভা করেছে বিএনপি। জনসভায় আগে সভার অনুমতির জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছে যান বিএনপির দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

অনুমতির বিষয়ে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, অনুমতি পাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুমতি দেয়া হয়নি। ভারতে সাথে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি শীর্ষক এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারের জন্য ভারতকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন, আমাদের বন্দরগুলোকে ভারতকে ব্যবহার করতে দেবে, আমাদের উপকূলে ভারত রাডার বসাবে এবং আমরা যে এলপিজি গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করি তা ভারতকে দেবে। এসব চুক্তির প্রতিটি অংশে বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী ও জনস্বার্থ বিরোধী।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা পত্রিকায় দেখেছি, ভারতে ইতিমধ্যে ৩৬টি পাম্প বসিয়েছে ৭২ কিউসেক পানি জোর করে নিয়ে যাচ্ছে! আর আপনি ১.৮২ কিউসেক পানির চুক্তি করে এসেছেন। এই কারণে ফেনী নদী পাশে আমাদের যে কৃষি কাজ হয়, সেটা ব্যহত হবে। আর ভারতের সঙ্গে এসব চুক্তির কারণে আমাদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখীন হবে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ভারতে সঙ্গে চারটি চুক্তির একটিও জনগণের স্বার্থে নয়। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এসকল চুক্তি সরকার করে এসেছে। আর এসব চুক্তির উদ্দেশ্য হচ্ছে, ক্ষমতা।

আবরার ফাহাদ হত্যার প্রসঙ্গে সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আবরারকে হত্যা করেন নাই, জনগণের স্বার্থকে হত্যা করেছেন। দেশে আধিপত্যবাদ বিস্তার করার জন্য আবরারকে হত্যা করেছেন। আবরার তার রক্ত দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলনের সূত্রপাত করে গেছেন। আর আবরারের রক্তের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য জনগণ ঐক্যবদ্ধ হবে। আমি বিশ্বাস করি, আবরারের রক্ত এদেশের জনগণ বৃথা যেতে দেবে না। তিনি বলেন, আবরারের রক্তে এদেশে ফ্যাসিবাদ পতনের বীজ রোপন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ।

ক্যাসিনোর বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ ও এই সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। এমন খাদে পরেছে যে, এই খাদ থেকে উঠে আসতে পারবে না। সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় এসেছে। আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে মাধ্যমে এদেশের মানুষ আইনের শাসন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ফিরে পাবে।

এদিকে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সসহ আশ-পাশে কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

অপরদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে দুপুর ১২টা থেকেই দলটির নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেত হতে দেখা গেছে। আর জনসভা শুরুর পর ব্যানার ও মিছিল নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জনসভায় যোগ দিতে দেখা গেছে।

এদিকে পুলিশের অনুমতি ছাড়াই রাজধানীতে পূর্বঘোষিত জনসভা করছে বিএনপি। আর এতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এ জনসভা শুরু হয়।

‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারতে সাথে দেশবিরোধী চুক্তি ও আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে চেয়ার পেতে বসে এ জনসভায় আসন গ্রহণ করেছেন দলটির নেতৃবৃন্দরা।

সমাবেশ করার অনুমতি নেই বলে নয়াপল্টনে বিএনপিকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপির দাবি এটি পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। অনুমতি না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। এজন্য তারা কর্মসূচি পালন করতে চায়। পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় নয়াপল্টনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উপস্থিত আছে র‌্যাবের অনেক সদস্যও। মোতায়েন করা হয়েছে সাঁজোয়া যান এবং জলকামানবাহী গাড়ি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী-খান সোহেলের সভাপতিত্বে জনসভায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আফরোজ্জা আব্বাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.