মিথিলা-ফাহমির অন্তরঙ্গ ছবি নিয়ে নেট  ‍দুনিয়ায় তোলপাড়

0

বিনোদন জগৎঃ বেশ কয়দিন ধরে বাংলাদেশের সোস্যাল মিডিয়া ও নেটিজেনদের কাছে আলোচনার বিষয় মিথিলা। গত সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে হঠাৎ করেই নির্মাতা ফাহমির সঙ্গে মিথিলার অন্তরঙ্গ ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইফতেখার আহমেদ ফাহমি নামের ফেসবুক পেজ থেকে ওই অন্তরঙ্গ ছবিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। আর মুহুর্তেই তা ছড়িয়ে গেছে বিভিন্ন দিকে।

পেজের প্রথম পোস্টে দুটি অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার দিয়ে তার ক্যাপশনে ফাহমি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ মিথিলা আর আমার পরকীয়া হয়েছে। একবার নয় অনেকবার। আর এটা নিয়ে মজা করার কিছুই নেই। আমরা দুজন জাস্টফ্রেন্ড।’

নেটিজেনরা বিষয়টি ‘শুধুই বন্ধুত্ব’ ধরে নিয়েছিল। কিন্তু রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশের সংখ্যা। একই পেজ থেকে প্রথম ছবি প্রকাশে ঠিক দুই ঘন্টা পর আরও অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘আমারও পরানে যাহা চায়, আমি পাই, আমি খাই গো।’

সর্বশেষ বেশ খোলামেলা ছবি শেয়ার করে ফাহমি লিখেন, ‘মিসেস (অপ্রকাশযোগ্য শব্দ) মিথিলা। বন্ধু # t তোমার হয়ে প্রতিশোধ নিলাম।’ এ ক্যাপশন দেখে অনেকেই নড়েচড়ে বসেন। তাহসানের হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছেন ফাহমি? এমন প্রশ্নও শোনা যায় বিভিন্ন মহলে।

এ প্রশ্নের উত্তর জানতে নির্মাতা ফাহমির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি তাকে। এদিকে, সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিথিলার অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করা নিয়ে শোবিজে শুরু হয়েছে নতুন ঝড়।

চিত্রনায়িকা পরীমনি এ ঘটনা নিয়ে পত্রিকায় অপ্রকাশিত শব্দে তার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন। তার এ পোস্টে একপ্রকার ফাহমির পক্ষ নিয়েছেন বলেও মত দিয়েছেন শোবিজের অনেকে।

অন্যদিকে, ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা একহাত নিয়েছেন ফাহমিকে। পাশে দাঁড়িয়েছেন মিথিলার। নিজের ফেসবুকে প্রভা লিখেছেন, কারো ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি শেয়ার বা পোস্ট করার ইথিকালি রাইট আপনি রাখেন না, বিকৃত মানসিকতার আমূল পরিবর্তন হোক।

মিথিলা তুমি কার? দিনভর এমন প্রশ্নই শোনা যাচ্ছে তাকে ঘিরে। কেউ কেউ বলছেন অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশের পর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে তাদের। যদিও ভিডিওর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে বিষয়টি এখানেই শেষ হওয়া জরুরি বলেও মত দিয়েছেন অনেকে।

অধিকাংশের মতে- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ছবি ছড়িয়ে সেটিকে অসামাজিক করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মিথিলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি তাকেও। তবে গত সোমবার দেশীয় একটি গণমাধ্যমকে ছবিগুলোর ব্যাপারে মিথিলা বলেছেন- এগুলো অস্বাভাবিক কোনো ছবি নয়।

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী, মডেল ও অভিনেত্রী। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট ভালোবেসে সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসানকে বিয়ে করেন। মিথিলা-তাহসান দম্পতির একমাত্র কন্যা সন্তান আইরা তাহরিম খান।

২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল জন্ম হয় আইরার। এরপর নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় ২০১৭ সালের ২০ জুলাই বিচ্ছেদের পথে হাটেন মিথিলা-তাহসান। ইতি টানেন প্রায় ১১ বছরের সংসার জীবনের।

তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর অভিনেতা ও গায়ক জন কবিরকে ঘিরে আলোচনায় আসেন মিথিলা। ২০১৮ সালের শেষের দিকে তাদের একটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিতে দুজনকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায়।

নিজের ফেসবুকে ওই ছবিটি শেয়ার করেছিলেন জন কবির। বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল ছবিটি নিয়ে। ওই সময় ধারণা করা হয়েছিল- তাহসানকে ছেড়ে জন কবিরের সঙ্গে প্রেম করছেন মিথিলা।

যদিও এ ধারণাকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন জন কবির। গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন- তারা ভালো বন্ধু। দেশীয় একটি টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের রের্কডিং শেষে ছবিটি তুলেছিলেন। আর মজা করেই ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করেন বলেও জানান জন।

এরপর চলতি বছর শুরুর দিকে নতুন গুঞ্জন উঠে মিথিলাকে ঘিরে। রটিয়ে পড়ে- ওপার বাংলার নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছেন মিথিলা। সৃজিতের সঙ্গে মিথিলার একাধিক ছবির কারণেই এমন খবর রটেছিল।

কলকাতায় একান্তে সময় কাটানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন পার্টিতেও একসঙ্গে দেখা গেছে তাদের। ফলে তৈরি হয় রহস্য। কিন্তু সৃজিতও ব্যাপারটিকে ‘শুধুই বন্ধুত্ব’ বলে দাবি করেন।

চলতি বছর মার্চ মাসের দিকে ওপার বাংলার একাধিক গণমাধ্যম বেশ গুরুত্ব সহকারে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিল। এপার বাংলার প্রথম সারির গণমাধ্যম থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল বিষয়টি।

জল ঘোলা হওয়ার পর আবার যেন থেকে গিয়েছিল সৃজিত-মিথিলার রহস্য। কিন্তু গেল দুর্গাপূজাতেও একসঙ্গে বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন সৃজিত মিথিলা। সে ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তারপর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে সৃজিত-মিথিলার সর্ম্পক।

অনেকেই ভেবেছিলেন- ভোরের ট্রেনে মঙ্গলবার সৃজিতের কাছে পৌঁছে যাবে মিথিলা। কিন্তু তিনি আগের ষ্টেশনে নেমে চলে গেছেন ফাহমির কাছে। তবে গত কিছুদিন তাহসান আর মিথিলা তাদের একমাত্র মেয়ে আইরা তাহরিম খানকে বিদেশেও ঘুরে এসেছেন। তখন অনেকেই বলাবলি করেছেন, তাদের ভাঙ্গা ঘর হয়তো আবার জোড়া লাগবে এবার। কিন্তু না। অনেকেই বলছেন মিথিলা অনেকের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন এবং খাচ্ছেন। এ অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবিতো আর মিথ্যা না।

 

অবস্থান পরিষ্কার করলেন মিথিলা

রাফিয়াত রশিদ মিথিলাসাইবার অপরাধ বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানালেন অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নিলেন তিনি। তার তথ্য অনুযায়ী, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজেই এসব তথ্য জানান তিনি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসের শুরুতেই মিথিলা বলেছেন, ‘কী ঘটেছে তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে আসিনি। বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার কিছু ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে যা হয়েছে সেই সম্পর্কে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাই। এসব ছবির কিছু বাস্তব, কিছু মনগড়া। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কিছু অপরাধী প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এগুলো অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে।’

নির্মাতা ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে মিথিলার প্রেম ছিল। ২০১৭-১৮ সালে সেই সম্পর্কে থাকাকালে তোলা কিছু ছবি ফাঁস হয়েছে। তিনি তা জানিয়ে উল্লেখ করেন, ‘তার (ফাহমি) ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক হয়েছিল। তখনই অপরাধীরা খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য এগুলো খুঁজে নিয়েছে। এখানে ডেটিং শব্দটির ওপর জোর দিতে চাই, যার অর্থ আমরা একটি সম্পর্কে ছিলাম। সহজভাবে বললে দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে জড়ালে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটায়, ছবি তোলে। প্রযুক্তির যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এগুলো ভাগ করে নেয়। তবে নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারার দায় আমারই।’

ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মোটেও লজ্জিত নন মিথিলা। স্ট্যাটাসে তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, ‘আমার লজ্জা লাগছে এই ভেবে, দেশের কিছু কুৎসিত লোক আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইচ্ছেমতো পোস্ট, শেয়ার ও ব্যবহারের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে। আমার খ্যাতি ও ভাবমূর্তিকে অসম্মান করে তারা সাবস্ক্রিপশন বাড়াচ্ছে ও নানান খবর ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমাকে কার্যত ধর্ষণ করা হচ্ছে। আমার লজ্জা হয় সেসব মিডিয়ার জন্য, বিশেষ করে কয়েকটি নিউজ পোর্টাল আমার অনুমতি ছাড়াই আমাকে উদ্ধৃত করে এ খবর প্রকাশ করেছে। অথচ আমি এ নিয়ে কখনোই কথা বলিনি বা কোনও বক্তব্য দেইনি। ঘরে-বাইরে, ভার্চুয়াল জগৎসহ সর্বত্র যেকোনও জায়গায় নারীদের যৌন হেনস্তা করা হলে একইভাবে লজ্জিত ও ক্ষিপ্ত হই।’

নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে মিথিলা লিখেছেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার সম্মান ও মর্যাদা শুধু আমার আকার আর পোশাকের কিংবা ব্যক্তিগত ছবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জীবনে কঠোর পরিশ্রম, সৃজনশীলতা ও শিক্ষার মাধ্যমে সব অর্জন করেছি। আমার অতীতের ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো চুরি করে কিছু অপরাধীর কুকর্মের কারণে এসব ভেঙে যাওয়ার মতো ঠুনকো নয়।’

মিথিলার ফেসবুক স্ট্যাটাস ও অভিযোগনামা

নিজেকে শান্ত রাখতে ও ইতিবাচক মনোভাবের ওপর জোর দিতেই গত ২৪ ঘণ্টা ফাঁস হওয়া ছবি নিয়ে মুখ খোলেননি বলে জানান মিথিলা। তার আশা ছিল, এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে পারবেন। তবে যেসব ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও অনলাইন পোর্টাল অনুমতি ছাড়া ফাঁস হওয়া ছবিসহ খবর প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

সাইবার অপরাধ বিভাগে অভিযোগ জানানোর তথ্য দিয়ে মিথিলা হুঁশিয়ার করেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় যারা আমার মান-সম্মান নিয়ে খেলেছে সেই দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে ছাড়বো। শপথ করছি, নিজের জন্য এবং হ্যাকার ও সাইবার অপরাধীদের শিকার হওয়া সবার জন্য লড়বো।’

সবশেষে দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি মিথিলা। যদিও মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলা হয়েছে।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.