ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬
সিটি নিউজ ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ রেলস্টেশন এলাকায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় আরও একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহটি একটি শিশুর। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬ জনে। সকাল ১১ টার পর চট্টগ্রামের সাথে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) নাসির উদ্দিন আহমেদ।
দুর্ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা ২০ মিনিটে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহটি টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
এর আগে আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সকাল সোয়া ৭টা পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। ঘটনাস্থলে ৯ জন, কসবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনজন, বৃাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে দুই জন ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়।
তবে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বগির নিচে ছিল সর্বশেষ পাওয়া শিশুটির মৃতদেহ। এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। অনেকের কাটা হাত-পা উদ্ধার হয়েছে। তবে সর্বশেষ পাওয়া শিশুটির মৃতদেহ ভেতরে রয়ে যায়। সকাল ৭টা নাগাদ তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে সকাল সোয়া ৯টা ২০ মিনিটে উদ্ধার হয় শিশুটির মৃতদেহ।
দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের বগির নিচে এখনো অনেকে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করছে রেল সচিব। এ ঘটনায় রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে দুটি রিলিফ ক্রেন।
আখাউড়া রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কান্তি দাস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। হতাহতদের উদ্ধার কাজ চলছে। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বগির নিচে আরো মরদেহ থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সিলেট থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাওয়া উদয়ন এক্সপ্রেস মন্দবাগ লুপ লাইনে প্রবেশ করছিল। একই সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তুর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস পেছন থেকে উদয়নের শেষের ৩ কোচকে ধাক্কা দেয়।
দুর্ঘটনার পর সেখানে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজে ছুটে আসে। দুর্ঘটনায় উদয়নের অন্তত ২টি কোচ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। কোনো হতাহতের পরিচয় পেলেই জানানো হচ্ছে তথ্যকেন্দ্র থেকে।
কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। হতাহতের পরিচয় পেলেই জানানো হচ্ছে। আর আটকে পড়া যাত্রীদের খাবারের ব্যবস্থাও করেছে উপজেলা প্রশাসন।
চেয়ারম্যান আরও জানান, আইনমন্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন যাত্রীদের সুবিধামতো স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যেন পর্যাপ্ত গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। আইনমন্ত্রীর বাড়ি এই কসবা উপজেলায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমানও ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশ সার্বিকভাবে চেষ্টা করছে উদ্ধারকাজে।