চট্টগ্রামের সাথে নোয়াখালীর সীমানা নির্ধারণে সন্দ্বীপবাসীর স্মারকলিপি প্রদান

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : ১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সালে প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপ অনুযায়ী চট্টগ্রামের সাথে নোয়াখালীর সীমানা নির্ধারণের দাবিতে (১৯৫৪ সালে সংশোধিত থানা ম্যাপ) এবং চট্টগ্রাম জেলার অধীন সন্দ্বীপ উপজেলার অন্তর্গত সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসান চর-কে নোয়াখালী জেলার অধীন থানা ঘোষণার প্রতিবাদে গতকাল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান করেন সন্দ্বীপবাসী। সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের উদ্যোগে উপরোক্ত বিষয়ে চট্টগ্রাম-ঢাকা ও সন্দ্বীপে আন্দোলনরত সংগঠন সমূহের যৌথ সমন্বয়ে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে, চিরাচরিত নিয়মে নদীর এপার ভাঙ্গে ওপার গড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ৬৩০ বর্গমাইল বিশিষ্ট সন্দ্বীপ পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে ভাঙ্গণের শিকার হয়ে এখন মাত্র ৮০ বর্গমাইলে পরিণত হয়েছে। সন্দ্বীপ থেকে সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসান চরের দূরত্ব মাত্র ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার আর আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলা হাতিয়ার নলাচির ঘাট থেকে ভাসান চর প্রায় ২০ কিলোমিটার পূর্বে। সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসান চর জেগে উঠার পর থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের বন বিভাগ থেকে সন্দ্বীপ বন রেঞ্জের মাধ্যমে বনায়ন করা হচ্ছিল। সঙ্গত কারণেই সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসান চর সন্দ্বীপ মানচিত্রের অংশ।

কিন্তু সম্প্রতী ভাসান চর-কে নোয়াখালী জেলা তাদের ভূমি দাবি করায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সন্দ্বীপবাসী এর প্রতিবাদ করে চলছে। সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম শেষ করার জন্য সন্দ্বীপবাসী ভূমি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে ভূমি মন্ত্রণালয় জরিপকাজ সম্পন্ন করার জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ অফিস আদেশ জারি করে। জরিপ কাজ শুরু হওয়ার পূর্বেই গত ২১ অক্টোবর ২০১৯ আকস্মিকভাবে সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়নকে নোয়াখালী জেলার অধীন ভাসান চর নামে থানা হিসেবে ঘোষণা করে। সীমানা নির্ধারণ না করেই এমন ঘোষণা অনাঙ্কাখিত এবং অনিয়মতান্ত্রিক।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ২০১৬ এর ২ মার্চ মাননীয় ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে ১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সালে প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপের উপর ভিত্তি করে ২ মাসের মধ্যে জি.পি.এস মান নির্ণয় ও ডাটা সংগ্রহ করে আন্তঃজেলার সীমানা নির্ধারণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে ঐ সিদ্ধান্ত আজো বাস্তবায়ন হয়নি। আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধাারণ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে সন্দ্বীপবাসী দায়ের করা একাধিক মামলা বিচারাধীন আছে।

বক্তারা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ্য উত্তরসূরী গণপ্রজাতান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনি সারা বাংলার অবিসংবাদিত নেত্রী। বাংলার কোন মানুষ যখন অনিয়মতান্ত্রিকতার শিকার হন তখন তীর্থের কাকের মত আপনার দিকেই চেয়ে থাকে। আপনি ১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সালের প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপ অনুযায়ী সঠিকভাবে আন্তঃজেলা (চট্টগ্রামের সাথে নোয়াখালীর) সীমানা নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে নিদের্শনা প্রদান করবেন এটাই আমাদের আকুল আবেদন। আমরা সন্দ্বীপবাসী উপরোক্ত বিষয়ে আপনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

স্মারকলিপি প্রদানকালে প্রতিনিধিদলে ছিলেন, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি মোঃ এনায়েত উল্লাহ্, সন্দ্বীপ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম লিমিটেড ঢাকার সভাপতি মো: নূরুল আকতার, সাবেক জেলা জজ মোঃ আবু সুফিয়ান, গ্রামীণ ব্যবসা বিকাশের সাবেক এমডি সালেহা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক পরিচালক শামছুল কবির খান, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক দিদারুল আলম, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শাহ আলম, এস.এম ইব্রাহিম, মোশাররফ হোসাইন, হাজী আবদুল বাতেন সওদাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট লায়ন আলহাজ মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ, কালাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল হক চৌধুরী বায়রন, সন্দ্বীপ লেখক ফোরামের উপদেষ্টা কবিয়াল কে.এম আজিজ উল্যা, সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, মুক্তিযোদ্ধা মাইনুর রহমান, মাসিহাতা গ্রুপের ডিজিএম আনোয়ারুল আলম মঞ্জু, সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান বাবু, অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট আকবর মাহমুদ বাবর, সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়নের ৩ বারের মেম্বার সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তীর পুত্র তরুণ চক্রবর্তী, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন সন্দ্বীপ উপজেলার সাবেক সভাপতি মাওলানা দিদারুল মাওলা, এ.কে একাডেমি গাছুয়ার প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সভাপতি মোসাদ্দেক আহমেদ, সম্মিলিত সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব সাংবাদিক ইব্রাহিম অপু প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.