শ্রীলঙ্কায় নতুন ইতিহাসঃ ছোট ভাই প্রেসিডেন্ট, বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী

0

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ এশিয়ার দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কায় শুরু হলো নতুন ইতিহাস। শ্রীলঙ্কার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে বুধবার তার বড় ভাই এবং দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন। এখন দুই সহোদরই দেশটির দুই ক্ষমতাধর ব্যাক্তি। দুইজনই প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। এর মাধ্যমে এক নতুন ইতিহাস তৈরি হতে চলেছে দেশটিতে। কেননা এর আগে সরকারের প্রধান দুটি পদে সহোদরকে দেখা যায়নি।

জানা যায়, বড় ভাই মাহিন্দা রাজপাকসেকে (৭৪) প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ করাবেন তার ছোট ভাই গোটাবায়া রাজপাকসে (৭০)। তাদের দুই ভাই বাসিল ও চামাল রাজপাকসেও রাজনীতিতে সক্রিয়। গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে পরিবারটি শ্রীলঙ্কার রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ নাম। মাহিন্দা রাজপাকসে যখন প্রথমবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তখন দেশটির সংসদের স্পিকার ছিলেন তার বড় ভাই চামাল রাজপাকসে।

মাহিন্দা রাজপাকস ক্ষমতায় থাকার সময় দুই মেয়াদেই দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল তার ছোট ভাই ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজপাকসে। সরকারের মুখপাত্র বিজয়ানন্দ হেরাথ বলেছেন, মাহিন্দা রাজপাকসে শপথ নেয়ার পরপরই তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করবেন।

এদিকে প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের পরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংহে। বৃহস্পতিবার তিনি প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিবেন বলেও জানিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে বিক্রমাসিংহে বলেন, আমাদের পার্লামেন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠঅ তারপরও আমরা প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। তিনি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার গঠন করতে পারেন এজন্যই আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ‘আমি গণতন্ত্রকে সম্মান করি এবং গণতান্তিক উপায়ে দেশ পরিচালনায় বিশ্বাসী।’

শ্রীলঙ্কার চলতি পার্লামেন্টে বিক্রমাসিংহের দল এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ। চাইলে শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার আগে আগামী মার্চ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন বিক্রমাসিংহে।

শ্রীলঙ্কায় ২০১৫ সালের আগস্টে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত এই পার্লামেন্টের মেয়াদ আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত। সাংবিধানিকভাবে তার আগে সরকার ভেঙে দিতে পারবেন না প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া। এখন তার সামনে দুটি পথ খোলা আছে। মার্চে নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত একটি কেয়ারটেকার সরকারকে নিয়োগ দিবেন প্রেসিডেন্ট গোয়াবাট। অথবা পার্লামেন্টের বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়া অব্দি আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে।

গত শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসাকে পরাজিত করে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন গোটাবায়া রাজাপাকসে। তবে দুইবারের প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজপাকসে আইনি জটিলতার কারণে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন নি। তবে তার ছোট ভাই সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেয়ার পর তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.