আজ চট্টল শার্দুল মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৭৫তম জন্মদিন

0

সিটি নিউজঃ আজ ১ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৭৫তম জন্মদিন ।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে উত্থান-পতন ও নানা ঘটনাপ্রবাহে চট্টলবীরে পরিণত হওয়া মহিউদ্দিনকে গতবছর জন্মদিন রাজধানী ঢাকাতেই বিশ্রামে থেকে উদ্যাপন করতে হয়েছে। এরপর চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ওই বছর ১৫ ডিসেম্বর সকলকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চিরবিদায় নেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক।

সাংসারিক জীবনে দুই ছেলে ও চার কন্যা সন্তানের জনক মহিউদ্দিন চৌধুরী শারীরিকভাবে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মোকাবেলা করলেও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তাঁর মনোবল ও সাহস ছিল অটুট। চট্টগ্রামবাসীর বিপদের গন্ধ পেলেই অনেকটা সুস্থ মানুষের মতই ছুটে গেছেন অকুস্থলে। চট্টগ্রামে প্রগতিশীল চেতনার বাতিঘর এই রাজনৈতিক ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’ প্রয়াত হলেও তার নাম শুনলেই এখনও দুর্বার গতিতে ছুটে যান দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা। কলেজ পড়ুয়া ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে প্রবীণ রাজনীতিক সকলের আস্থায় আজও দেদীপ্যমান মহিউদ্দিন চৌধুরী।

জানা যায়, ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টলার রাজনীতির উর্বরভূমি হিসেবে পরিচিত রাউজানের গহিরার সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ছাত্রজীবন থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দ্বিতীয় দিনে নুর আহাম্মদ সড়কের নেভাল এভিনিউ মোড়ে লড়াই করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। এরপর ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে গিরিশংকুল পাহাড়ি এলাকা দিয়েই সদলবলে ঢুকেন দেশে। প্রাণপণ লড়াই করেন দেশমাতৃকার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের পর ক্রমেই শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

১৯৭৫ সালে হত্যা করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তখনই বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ফিরে এসে চট্টগ্রামকে ‘সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন’ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে এসে হারান ঘনিষ্ঠ বন্ধু মৌলভী সৈয়দকে।

পরবর্তী দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় মহিউদ্দিনকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়েছিল। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের স্বার্থরক্ষার আন্দোলনে বেরিয়ে পড়তেন সবার আগে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র। টানা ১৭ বছর এ সংস্থাকে সফলভাবে পরিচালনা করে নগরবাসীকে একটি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দিতে সক্ষম হন।

সাংসারিক জীবনে দুই ছেলে ও চার কন্যা সন্তানের জনক মহিউদ্দিন চৌধুরী শারীরিকভাবে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মোকাবেলা করলেও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তাঁর মনোবল ও সাহস ছিল অটুট। তিনি দেশ স্বাধীনতার পর থেকে মৃত্যু অবধি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কয়েক দফায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের নগর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালে ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সকলকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চিরবিদায় নেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক।

চট্টগ্রাম এর গণমানুষের নেতা চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচী আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.