সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নির্মাণ হবে বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল ও ইকোনমিক জোন

0

সিটি নিউজ : চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল হবে। এছাড়া সাতকানিয়ার মৌলভীর দোকান থেকে কেরানীহাট পর্যন্ত সড়কের পশ্চিম পাশে করা হবে ইকোনমিক জোন। কেরানীহাট ও আমিরাবাদে ছয় লেনের দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণও করা হবে।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরাম, চট্টগ্রাম আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী। ফোরামের সভাপতি ও দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিন সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শুভে”ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার মিজানুল ইসলাম।

আলোচনায় অংশ নেন এমপি পত্নী ও মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রদীপ নন্দী, জামালউদ্দিন ইউসুফ, সরোয়ার আমিন বাবু, সৈয়দ গোলাম নবী, আহমেদ মুসা, ওমর ফারুক, আকতার হোসেন, জোবায়ের মনজু, জয়া শর্মা, সৈয়দা সাজিয়া আফরিন, মিনহাজুল ইসলাম, সুজন আচার্য্য প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ফোরামের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভীকে শুভে”ছা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বলেন, ‘সাঙ্গু ও ডলু নদীর ভাঙনরোধে ৫৭৭ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৩৩ কোটি টাকার কাজ বর্তমানে চলমান। বাংলাদেশের কোনো এমপি নদী ভাঙনরোধে এতো টাকা পেয়েছে? আমিই পেয়েছি। মফস্বল এরিয়াতে সবচেয়ে আলোচিত রাস্তা, দেশের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা হবে দুই মাসের মধ্যে, সাতকানিয়া রাস্তার মাথা থেকে গুনাগরী পর্যন্ত। এটা পটিয়া বাইপাসের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর হবে। ১০৬ কোটি টাকায় কাজটি হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে সাতকানিয়ায় এ রকম রাস্তা কেউ দেখেনি। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করাবো।’

মাদার্শার পশ্চিমে দেশের সবচেয়ে সুন্দর ও বড় ইকোপার্ক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইকোপার্ক করার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়ে গেছে। সেখানে ক্যাবল কার হবে। আধুনিক রেস্টহাউস হবে। ঝুলন্ত ব্রিজ হবে, স্পিড বোট থাকবে। চুনতিতে ইসহাক মিয়া সড়ক, অহরহ কলেজ ভবন, প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন করেছি। ৬০ কোটি টাকায় সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় দুটি কারিগরি স্কুল ও কলেজ হবে। বড় বড় শেল্টার ভবন নির্মাণ শুরু হতে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য নদভী বলেন, ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় এলএনজি টার্মিনাল হবে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় রেলস্টেশন হচ্ছে। দেওদিঘী খাসমহলে যে ১০-১২ একর জায়গা আছে সেখানে হাইটেক পার্ক হবে। হাইটেক পার্কের জন্য ৫০ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়া হয়। জুনায়েদ আহমেদ পলকের সাথে এ ব্যাপারে আমার কথা হয়েছে, উনাকে আমি সাতকানিয়ায় নিয়ে আসবো।’

আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বলেন, ‘শাহ জব্বারিয়া রোড চুনতি বাজার থেকে শুরু করে চরতি পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়ক হয়ে গেছে। সেটা এখন ডাবল করার জন্য পরিকল্পনা করছি। টংকাবতীতে বহুমুখী সেতু করার জন্য ইতিমধ্যে ডিও দেওয়া হয়ে গেছে। এটার কাজ শুরু হবে। এটা শুধু আমার ঘোষণা নয়, আবেদিন মামারও (প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব) ঘোষণা। ডলু খালের উপর ডলু ব্রিজ ছাড়া আর কোন ব্রিজ আপনারা দেখেননি অতীতে। এখন সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া মিলে নয়টি ব্রিজের কাজ চলছে ডলু খালের ওপর।’

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাংসদ নদভী বলেন, ‘দেশে কয়টি স্কুল জাতীয়করণ হয়েছে? আপনারা জানেন, এমপিওভুক্তির জন্য মানুষ পাগল হয়ে যায়। কারণ এমপিওভুক্তি মানে সরকার এটার দায়িত্ব নিয়েছে। সাড়ে তিনশজন এমপির মধ্যে ভাগ করলে জনপ্রতি ৬-৭টি করে এমপিওভুক্ত স্কুল পড়ে। কিন্তু ৫০ জন এমপি-মন্ত্রী একটাও পায়নি। আমি একা পেয়েছি ২৫টি। এটা চাট্টিখানি বিষয়!’

তিনি বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম করেছি, যদিও এটা আমার দখলে নেই। এটা যাদের দখলে আছে, একটা ছেঁড়া কাগজও দেখাতে পারবে না, তারা বিদেশ থেকে এক টাকা এনেছে। ডকুমেন্টস সব আমার কাছে আছে। কাতার, কুয়েত, সৌদি আরব, ওআইসি, শেখ জায়েদ ফাউন্ডেশনের সাথে আমিই চুক্তি করেছি। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে এখন ১০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। বাংলাদেশে এত সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় আর নেই। এটা আমি করেছি। এরকম একটি বিশ্ববিদ্যালয় সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার জমিতে আমি করবোই, করবো।’

‘হাসপাতাল একটা দরকার। যেহেতু ছয় লেন হয়ে যাচ্ছে, রেললাইন হয়ে যাচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো, চেষ্টা করবো একটা সুন্দর জায়গায় যাতে একটা মেডিকেল করা যায়। কেরানীহাট ও আমিরাবাদে দুটি ফ্লাইওভার হবে। এজন্য আমি সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলে ফেলেছি। এগুলো ছয়লেনের ফ্লাইওভার হবে’ – বলেন সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী।

সাতকানিয়ায় ইকোনমিক জোন করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মৌলভীর দোকান থেকে কেরানীহাট পর্যন্ত পশ্চিম পাশের জমিগুলো পুকুর হয়ে গেছে। যেহেতু পুকুর হয়ে গেছে আর কাজে আসবে না। এক বছর পর ইটভাটা উঠে যাবে, আরব দেশের মত ব্লক ইট আসছে। সেখানে ইকোনমিক জোন করার জন্য আমি উদ্যোগ নিয়েছি। এটা ইকোনমিক জোন হলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া কিভাবে আলোকিত হবে, আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.