অধ্যাপক অজয় রায়ের শেষ যাত্রায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশে পদকজয়ী পদার্থবিদ মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক অজয় রায়ের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সর্বস্তরের মানুষ।

আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় শহীদ মিনারে আনা হয় তার মরদেহ। এর আগে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের শেষ দেখার জন্য সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসভবনে নেওয়া হয় অজয় রায়ের মরদেহ।

এরপর তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা ১২টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় অধ্যাপক অজয় রায়ের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে।

সেখান থেকে জগন্নাথ হলে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হবে। এরপর অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ গবেষণার জন্য রাজধানীর বারডেম হাসপাতালকে দান করা হবে।

অজয় রায়ের ছোট ছেলে অনুজিৎ রায় সাংবাদিকদের জানান, বাবার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালে দান করা হবে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বেলা ১২ টা ৩৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে মারা যান অজয় রায়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে জড়িত মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের বয়স হয়েছিলো ৮৪ বছর। ২৫ নভেম্বর জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।।

২০১২ সালে তিনি একুশে পদক পান। এছাড়া এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলোশিপ, বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ, ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব ম্যাথেমাটিকাল ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স কর্তৃক সম্মাননা পান এ গুণী লেখক।

ড. অজয় রায় ১৯৩৫ সালের ১ মার্চ দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল এবং কলেজজীবনে পড়াশোনা করেছেন দিনাজপুরে। ১৯৫৭ সালে এমএসসি পাশ করে যোগ দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে।

তিনি ১৯৫৯ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে সেখানেই করেন পোস্ট ডক্টরেট।

১৯৬৭ সালে শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় যোগদান করেন এবং অবসর নেয়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন।

দেশি এবং বিদেশি বহু জার্নালে তার পেপার প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি পদে ছিলেন।

তিনি সম্প্রীতি মঞ্চের সভাপতি, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং এশিয়াটিক সোসাইটির বিজ্ঞান বিভাগের সম্পাদক।

তাঁর বড় ছেলে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী রাতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিনি খুন করা হয়। তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর পিতা অজয় রায় ছেলে হত্যার বিচারটাও দেখে যেতে পারলেন না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.