কক্সবাজারে এসপিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা সংবর্ধিত
শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজারঃ বাংলাদেশ পুলিশের সর্ব্বোচ্চ পদক প্রাপ্তিতে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার)ও আইজিপি ব্যাজ প্রাপ্ত তাঁর সহকর্মীরা নাগরিক সংবর্ধনায় সিক্ত হলেন।
পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের সময়েই মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত কক্সবাজার বিনির্মাণে পুলিশ প্রশাসন অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন এবং বর্তমানেও আছেন। মাদক,সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত কক্সবাজার জেলা বিনিমার্ণে কক্সবাজার জেলা পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করছেন।রাষ্ট্র সেই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএমকে দ্বিতীয় বারের মতো বিপিএম পদক-২০১৯ তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে সেই পদক গ্রহণ করেছেন পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন বিপিএম।
জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম, কক্সবাজারের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবর্ধনার জবাবে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে এর পুরো কৃতিত্বই তাঁর অধিনস্ত পুলিশ বাহিনী ও কক্সবাজারবাসীকে দিয়ে বললেন, রাষ্ট্রের একজন কর্মচারী হিসেবে তিনি কোনো ধরনের সংবর্ধনা গ্রহণ করতে পারেন না। কক্সবাজারের মানুষ যদি সমর্থন না দিতো, সহযোগীতা না করতো কক্সবাজার জেলাকে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদমুক্ত করার কাজে সহযোগিতা না করতো তাহলে এই পুরস্কার পাওয়া সম্ভব হতো না।
সংবর্ধনার জবাবে তিনি আরো বলেন, সীমান্ত এলাকা হিসেবে কক্সবাজারে মাদক একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ। তবে, চ্যালেঞ্জ যতোটা সম্ভব লাঘব করার জন্যই আমাদের কাজ করে যেতে হবে।
রবিবার ১৯ জানুয়ারী বিকেলে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসনের সভাপতিত্বে শহরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা সভার আয়োজন করেন কক্সবাজার জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম৷
পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন বিপিএম আরো বলেন, চলতি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত পুলিশ সপ্তাহে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ প্রশাসনকে নিজ নিজ জেলায় মাদক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করতে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন । আর আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি৷ বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পদবী ‘বিপিএম’ পদকপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বক্তব্যে এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, আমাদের পথ খুব সহজ নয়। কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগুচ্ছি। কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করতে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। এখনো কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসেনি। শুধু আইন দিয়ে পুরোপুরি মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন। আমাদের দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা চাই।
সংবর্ধনায় সভায় বক্তারা বলেন, কক্সবাজার জেলায় যেভাবে মাদকের আগ্রাসন শুরু হয়েছিল পুলিশ যদি তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিতো, তাহলে আরেকটা আইয়ামে জাহেলিয়াতের জন্ম হতো।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের স্বীকৃতির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বক্তারা বলেছেন, ভালো কাজের স্বীকৃতি পেলে ভালো মানুষের জন্ম হয়। জনগণের বন্ধু পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে। তাহলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ থাকবে। দেশের উন্নতি হবে। বিকাল চারটার দিকে সমস্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি তোফায়েল আহমদ।
স্বাগত বক্তব্যে তিনি সবাইকে সোনার মানুষ হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভালো কাজ করলে স্বীকৃতি পাওয়া যায়। যে যার অবস্থান থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার মতো কাজ করা সম্ভব। সেটা নির্ভর করে নিজের মানসিকতার উপর। এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ তৈয়ব।
বক্তব্য রাখেন -আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, জাফর আলম এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর সোমেশ্বর চক্রবর্ত্তী, এডভোকেট শাহনেওয়াজ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান, জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাস, শ্রিম্প হ্যাচারী এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেভ) এর সভাপতি মুহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সদরের ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, মুফতি মাওলানা সাইদুল ইসলাম। ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন -জেলা কমিউনিটি পুলিশের কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট প্রতিভা দাস, সোহেল আহমেদ বাহাদুর ও তোফায়েল আহমেদ।
সংবর্ধিত হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) পুরস্কার প্রাপ্ত কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন (বিপিএম বার) ছাড়াও আইজিপি ব্যাজ প্রাপ্ত কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন, মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর, টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সনজিব দত্তকেও অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত করা হয়।
সফল পুলিশ কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এডভোকেট ফরিদুল আলম (পিপি), আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট আবু হেনা মোস্তফা কামাল, যুবলীগ নেতা মো. ইসমাঈল সিআইপি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দ আবু মো. শাহজাহান কবির,ওসি তদন্ত খায়রুজ্জামান, অপরেশন মো. ইয়াছিন, উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল মনসুর,রামু থানার ওসি অপারেশন কাজী মিজানুর রহমান, ডিবির ইন্সপেক্টকর মাসুম খান, মানষ বড়ুয়াসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন,সাংবাদিক, কমিউনিটি পুলিশিং নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক,বিভিন্ন সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।