ওমানে বাংলাদেশ স্কুলের জন্য সরকারের সহযোগীতা প্রয়োজনঃ এমএন আমিন

0

জুবায়ের সিদ্দিকীঃ চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কৃতি সন্তান, সাবেক ছাত্রনেতা, বিশিস্ট সংগঠক, রাজনীতিবিদ ও সালতানাত অব ওমানের বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এন আমিন। দীর্ঘ দুইযুগ ধরে সাংবাদিকতা করছেন ওমানে আজকের সূর্যোদয়ের ওমান প্রতিনিধি হিসেবে। প্রবাসে থাকলেও নিজ এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ও গ্রামের দুঃস্থ মানুষের সাহায্য সহায়তা প্রদান করছেন।

সামাজিক কর্মকান্ডে দীর্ঘদিন যাবত মানুষের কল্যানে কাজ করছেন এম এন আমিন বলেন। একান্ত সাক্ষাৎকারে এম এন আমিন, বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাব ওমান সরকার কর্তৃক অনুমোদিত একটি বৃহৎ বাংলাদেশী কমিউনিটির একমাত্র সংগঠন। এই সংগঠনের দায়িত্বভার আমরা নিয়েছি। সোস্যাল ক্লাবকে আমরা সার্বজনীন করা ছিল কাজ।

এটা আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি। কমিউনিটির সবাইকে নিয়ে আমরা প্রবাসীর কল্যানে কাজ করে যাচ্ছি। আপনি বলতে পারেন, অতীতের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাব অনেক শক্তিশালী। আমরা যারা ক্লাবের বোর্ডে আছি তারা সবাই বিভিন্ন আদর্শের ও বিভিন্ন মতের রয়েছেন। ক্লাবের কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে কখেনো মতানৈক্য হয়নি। বিভেদ-বিভাজন ছাড়াই ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে ক্লাবটি সৃশৃংখলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। মান্যবার রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। মান্যবর রাস্ট্রদূত সব সময় আমদের পরামর্শ ও উপদেশ দিয়ে থাকেন। তাদের সহযোগীতায় সোস্যাল ক্লাব অনেক গতিশীল হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সোস্যাল ক্লাবের অবস্থান ও সাংগঠনিক ভিত্তি আরো সুদৃঢ় হবে।

বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সংগঠক এম এন আমিন বলেন, সোস্যাল ক্লাবের সম্মানিত সভাপতি সিরাজুল হক সাহেবসহ আমাদের কয়েকজন প্রবাসী শুভাকাংখী মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহ্বিুল হাসান চৌধুরীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। ওমানে বাংাদেশ কমিউনিটির যে স্কুল আছে তা এখন আর্থিক সংকটের দিকে যাচ্ছে।

এর কারণ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক মন্দা থাকায় স্কুলে ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। যার ফলে আর্থিক সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওমানে বাংলাদেশী কমিউনিটির সন্তানদের শিক্ষার প্রতীক ও প্রবাসীদের আস্থার প্রতীক স্কুলটি আমাদের অহংকার। স্কুলকে রক্ষা করা কমিউনিটির সকলের দায়িত্ব।

মন্ত্রী মহোদয়কে বলেছি, বর্তমানে ভাড়া জায়গায় স্কুল ভবন নির্মিত হয়েছে। এই স্কুলের জায়গার লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কয়েকগুন ভাড়া বেড়ে যাবে। ওমান সরকার নামমাত্র মূল্যে স্কুলের জন্য যে জায়গা দিয়েছেন ঐ জায়গাতে নতুন ভবন নির্মাণে আমাদের দেশের সরকারের সহযোগীতা একান্ত প্রয়োজন। কারণঃ সময়মত ভবন নির্মাণ না হলে বরাদ্ধ বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।

মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী সাহেবকে বিষয়টি অবগত করেছি। তিনি ধৈর্য সহকারে ও আন্তরিকতার সাথে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং বলেছেন, আবেদন করার জন্য ও দূতাবাসকে লিখিতভাবে জানাতে। মন্ত্রী মহোদয় স্কুলের ব্যাপারে মাননীয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে দেশের বাইরে বাংলাদেশ স্কুলগুলোর জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে সুযোগ মাস্কাটে বাংলাদেশ স্কুলও পেতে পারে। সোস্যাল ক্লাবের মাধ্যমে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট প্রবাসী সংগঠক এম এন আমিন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে আসছে। গালফের প্রায় সব দেশে একই অবস্থা। অনেক লোক দেশে ফেরৎ আসছে।

আমরা আশাকরি এটা পরিবর্তন হবে শ্রম বাজার আবার চাঙ্গা হবে এই প্রত্যাশা আছে। তারপরে দেশ থেকে এখন অনেক শ্রমিক চাকুরী নিয়ে ওমানে যাচ্ছেন। প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার লোক বিভিন্ন পেশায় যাচ্ছে। আবার পুরাতন অনেক লোক ভিসা বাতিল করে দেশে ফিরছে।

এ বছর থেকে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ হবে বলে আমরা আশাবাদী। বাঙালিদের ভিসার সরকারী কোন গেজেট নেই। তবে ওমান শ্রম দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। এক্ষেত্রে বাঙালিরা শতকরা ১০ ভাগ ভিসা পান অবশিষ্টগুলো অন্যান্য দেশ পেয়ে থাকে। এ ব্যাপারে আমরা মান্যবর রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসকে অবহিত করেছি। দূতাবাস গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছেন। ওমানে মহামান্য নতুন যিনি সুলতান হয়েছেন তিনি প্রবাসীদের ব্যাপারে খুব আন্তরিক।

তিনি ক্ষমতায় এসেই বলেছেন সুলতান কাবুসের স্বপ্ন বাস্তাবায়ন করবেন। আমরা আশাকরি এর কোন ব্যাতিক্রম হবেনা। আমরা বাঙালিরাও কোন সংকটে পড়বনা। তিনি অত্যন্ত ভাল মানুষ।

বিশিষ্ট সংগঠক ও সমাজসেবক এম এন আমিন বলেন, আমরা প্রবাসীরা দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছি। আমাদের রেমিটেন্সে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি চট্টগ্রাম নগরীতে প্রবাসীদের হোল্ডিং ট্যাক্স ও আয়কর এর পরিমান কমানোর জন্য সরকার যেন বিবেচনা করেন। তাহলে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠাতে আরো বেশী আগ্রহ প্রকাশ করবে।

দেশে এসেছি মাত্র ১ সপ্তাহ হল। সোস্যাল ক্লাবের সম্মানিত সভাপতিসহ আমরা কয়েকজন প্রবাসী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। তিনি বলেন, দেশে প্রচুর উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে এবং অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামেও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রবাসে আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছি। প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের আরো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আবেদন থাকবে।

আমরা প্রবাসীরা দেশের যে কোন সংকটে দেশবাসীর পাশে ছিলাম এবং এখনও আছি। প্রবাসে আমরা প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করছি। প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণ, নিরাপত্তা ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিসহ বিমানবন্দরে হয়রানী বন্ধে সরকারকে আরো আন্তরিক হতে আহ্বান জানাব।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.