খালেদার মুক্তির বিষয়ে সরকার সহযোগিতা করেনি: ফখরুল

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আমরা তার মুক্তির মাধ্যমে সুচিকিৎসার দাবী জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কোনো সহযোগিতা করেনি। আমরা আবারো বলছি, বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তাকে মুক্তি দিন।

আজ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল বিএনপির। কিন্তু বিক্ষোভ মিছিলের পরিবর্তে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে দলটি। পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

এদিকে আজ সকালে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করলে বিএনপি কার্যালয় এলাকা থেকে কিছুটা দুরে অবস্থান নেয়। পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের গলিতে গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবিসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রস্তুত রাখা হয় প্রিজন ভ্যান, এপিসি, জলকামান।

পরে মিছিলের পরিবর্তে পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি দিলে মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হতে শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে নয়াপল্টন এলাকা মুখর করে তোলে তারা।

ধীরে ধীরে নেতাকর্মীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কিছুটা পিছু সরে গিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ। সমাবেশস্থল থেকে প্রিজন ভ্যান, এপিসি, জলকামান সরিয়ে কিছুটা দূরে নিয়ে রাখা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তাকেও ২ বছর ৭ দিন যাবত কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। আমরা তার মুক্তির মাধ্যমে সুচিকিৎসার দাবী জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কোনো সহযোগিতা করেনি। আমরা আবারো বলছি, বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ তাকে মুক্তি দিন।

তিনি বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের নয়নের মনি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি ছিলো বিক্ষোভ মিছিল। এতে পুলিশ বাধা দিয়েছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে এবং কার্যালয়ের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিয়েছে।

ফখরুল বলেন, সরকার মনে করেছে এভাবে দমন নিপীড়ন বাধ দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন কে বাধাগ্রস্ত করবে। জনগণের যে প্রাণের দাবি তাকে বাধাগ্রস্ত করবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এভাবে দমন নিপীড়ন করে কখনও ক্ষমতায় থাকা যায় না। জনগণের ন্যায্য দাবীকে কখনও দমন নিপীড়ন করে দমন করা যায় না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ নসরকার বেআইনি, দখলদারী সরকার, জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়া তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। একদলীয় শাসন কায়েম করতে সমস্ত দমন নিপীড়ন, নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। আজ সরকারের উপর জনগণের কোনো আস্থা নেই।

মিলনকে গ্রেফতার করে নিযে যাচ্ছে পুলিশ
মিলনকে গ্রেফতার করে নিযে যাচ্ছে পুলিশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করেছেন বলেই আজ তিনি কারাগারে। আমরা বলতে চাই খালেদা জিয়াকে নয় সারা বাংলাদেশকে কারাগারে রাখা হয়েছে।

দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শত প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। আমাদেরকে খালেদা জিয়ার প্রতি ভালোবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের গ্রেপ্তার করুক, নির্যাতন করুক, গুম ও খুন করুক কোনো, এরপরও কিছুতেই প্রতিবাদ থামবে না। আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে খালেদা জিয়াকে জামিন দিচ্ছে না। কারণ সরকার জানে খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে রাজপথে নামলে জনগণের স্রোতে সরকার ভেসে যাবে। তাই খালেদা জিয়ার জামিন বাধাগ্রস্ত করছে। তাকে আটকে রাখছে।

এদিকে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় নাইটিংগেল মোড় থেকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনকে আটক করে পুলিশ। এর আগে সকালে নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে থেকে দুই কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দলটি।

বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনসহ বেশ কেয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

এর আগে সকাল থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘিরে রাখা হয় বিএনপির কার্যালয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.