বঙ্গবন্ধুর জন্যই আজ বাংলাদেশ বিশ্বসভায় এক বিস্ময়ের নাম

0

সিটি নিউজঃ স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের অস্তিত্বের শিকড়। আজ থেকে শতবর্ষ আগে বঙ্গীয় জনপদের এক নিভূত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিয়েছিলেন বাঙালির ইতিহাসের রাখাল রাজা ‘খোকা’ নামের শিশুটি, যিনি পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; যাঁর নাম বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে খোদিত হয়েছে।

তিনি দ্রোহ, বিপ্লব, বিদ্রোহ এবং শোষণের বিরুদ্ধে শোষিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাপী একটি প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশলাকা। ক্ষণজন্মা এ মহামানব বার-বার প্রতিক্ষণ প্রতিদিন আমাদের চেতনাকে শাণিত করে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন পরিষদ চট্টগ্রাম আয়োজিত গতকাল রবিবার নগরীর জেলা শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত করে ৩ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে আয়োজক পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আন্তর্জাতিক সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্মে ছিলেন বলেই আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম। ইতিহাসের এ মহানায়ক তাঁর জীবন-যৌবন উৎসর্গ করে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর জীবনের চেয়েও দেশ ও জনগণকে ভালবেসেছিলেন। ইতিহাসের এমন কিংবদন্তি মহানায়ক পৃথিবীতে বার বার জন্মাবে না।

বিশ্বনন্দিত এ মহানায়ক আর আসবেন না এ পৃথিবীতে। তাঁর জীবনী ও কর্ম দেশের সকল নাগরিককে পাঠ করে, অনুশীলন করে তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। সাংস্কৃতিক উৎসবে ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অভিন্ন সত্ত্বা। তাই বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের মাপ ছিল ৫৬ হাজার বর্গ মাইল। শৈশব থেকেই সাহস, সংকল্প ও দেশপ্রেমের অপরনাম ছিল শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তৃণমূল থেকে তাঁর শক্তি সঞ্চয় করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্যই আজ বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে বিশ্বসভায় এক বিস্ময়ের নাম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাব। এটাই বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী ও মুজিববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।

সভাপতির ভাষণে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন (আইইবি)’র চেয়ারমান ও আয়োজক পরিষদের সদস্য সচিব প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। রাষ্ট্র পরিচালনার সাড়ে ৩ বছরে তিনি সে রাষ্ট্রের ভীতও গড়ে দিয়েছিলেন। তবে তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে কাক্সিক্ষত দেশ গড়ার পথ রুদ্ধ করা হয়। এখনও ধনী গরিবের ব্যবধান বাড়ছে। তাই চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে জোর দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু চর্চা আদি-অন্ত:হীন। এ চর্চা করে যেতে হবে। একটি বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে লড়াই বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন তা বাধাগ্রস্থ করতেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। যারা দেশে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে চাই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন বাংলাদেশ একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর বড় অর্জন। এটি অনেক কঠিন কাজ। এ রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য অসাম্প্রদায়িকতা।

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী সাংস্কৃতিক সংগঠক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ৩ দিনব্যাপি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগি অধ্যাপক ডা. হোসেন আহম্মদ, জেলা শিশু একাডেমির শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা নার্গিস সুলতানা, নগর যুবলীগ নেতা ওয়াহিদুল আলম শিমুল, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত প্রমুখ। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ৩ দিনব্যাপি সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় নৃত্য ও দলীয় সংগীত, দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন জেলা শিশু একাডেমির শিল্পবৃন্দ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.