করোনাভাইরাসে সচেতনতার প্রচারনায় ঘাটতি রয়েছে- ড.হোসেন জিল্লুর রহমান

0

গোলাম সরওয়ার,সিটি নিউজ :  বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। দেশে এই প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলো।বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সরকার ও জনগণ কতটা সচেতন ?

এ বিষয়ে পিপিআরসি (PPRC) নির্বাহী চেয়ারম্যান,চট্টগ্রাম রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (সিআরআই) প্রধান সমন্বয়ক ও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড.হোসেন জিল্লুর রহমান সিটি নিউজকে বলেন,দেশে করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার প্রচারনায় ঘাটতি রয়েছে।বাংলাদেশে করোনাভাইরাস জনিত মৃত্যুর সংবাদ প্রচার শুরু হলো। এটা শুরু। আমরা আতংকে আছি যে, এটা এখানে থামবে নাকি একটা মৃত্যুর মিছিল শুরু হবে। এটাতে সরকার কতটুকু সচেতন কে কতটুকু সচেতন এ প্রশ্নের উর্ধ্বে এখন মৃত্যু শুরু হয়েছে।

আসলে এটা বিশ্বব্যাপী মহা সংকট তৈরী হয়েছে। আমাদের দেশে শুরুতে এমন একটা মনোভাব ছিলো যে এটা তেমন সমস্যা তৈরী করতে পারবে না। এগুলো খুব দ্রুত না আসলে এ ধরনে চিন্তা ভাবনার অর্থ হচ্ছে বোকার স্বর্গে বাস করা। এখানে সরকার ও কে কতটুকু করেছে তা চিন্তা ভাবনা করে লাভ নেই। এটাতে অস্তিত্বের সংকটের আশংকা আছে। এখানে ২টা সংকট একটা স্বাস্থ্য সংকট, আরেকটা অর্থনৈতিক সংকট তৈরী হয়েছে। দুইটার দুইরকম ভিন্নতা ও ভয়াবহতা আছে। আমাদের যেমন অহেতুক আতংক খুব একটা কাম্য নয়। উদাসিনতা ও এক ধরনের ব্যাখ্যার মধ্যে এটাকে আটকিয়ে রাখা কাম্য নয়।

পিপিআরসি

এখন দরকার নানাভাবে কাজ করা। এ সংকটের ব্যাখ্যা সবাইকে বুঝতে হবে। দেশে যখন বন্যা হলো, দুর্যোগ হলো, সেসব মোকাবেলায় যে যেভাবে পেরেছে সবাই কাজ করেেছ। এই মুহুর্তে যে সংকট তৈরী হয়েছে তা এখানে ঠিক ঐ রকম নয়।এই সংকটে ভিন্নতা আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব বার বার বলছেন,এসব রোগ সনাক্ত করনে পরীক্ষাগুলো করার জন্য, যে আক্রান্ত তাকে আইসোলাইট করা, রোগ যেন সংক্রমিত না হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা, হাত-মুখ ধোয়া,পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।

আমাদের দেশে যা হচ্ছে এসব মানতে জেল জরিমানা করা এগুলো না। আমাদের সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। সচেতনতা বলতে ফেসবুক ও অনান্য সামাজিক মাধ্যমসহ আমাদের তিন জায়গায় কাজ করা যেতে পারে। সচেতনতার ফেসবুক, সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা আছে। কিন্তু সচেতনতার প্রচারনায় ঘাটতি রয়েছে।

এখানে সতর্ক ও সচেতনতায় সমন্বয় করে সব ধরনের সংস্থার মাঠে নামার প্রয়োজন আছে। যেমন সরকারী সংস্থাগুলো, সিটি কর্পোরেশন, গার্মেন্টস সেক্টরে প্রচারণা করা দরকার। পরামর্শ দিয়ে শুধু ক্ষান্ত হলে হবেনা। এগুলো কাজে লাগাতে হবে। হাত ধোয়া, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, মাস্ক ব্যবহার করা, আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাসায় আবদ্ধ রাখা কিংবা কোয়ারেন্টাইনে রাখা। পরামর্শ শুধু কাগজে কলমে থাকলে হবেনা। এগুলো মানতে হবে।

পরীক্ষা ব্যবস্থা স্বাস্থ্য বিভাগের পরীক্ষাহীনতা রয়েছে। করোনার টেস্টিং কীট পর্যাপ্ত পরিমান নাই। শুধু একটা মেডিকেলে থাকলে হবে না। কীট ব্যবস্থা সব হাসপাতালে থাকতে হবে। টেস্টিং কীট উৎপাদন প্রক্রিয়ায় রয়েছে এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন ।

সব হাসপাতালে টেস্টিং কীট এর মাধ্যমে পরীক্ষাগুলো করা । আমরা দেখছি যে, কোয়ারেন্টাইন বলতে ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের এক জায়গায় ঢুকিয়ে আটকে রাখা।কোয়ারেন্টাইনে মানে ওদেরকে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা। বর্তমানে দেশের এ পরিস্থিতিতে হাসপাতাল ম্যানেজমেন্টের এই জায়গায় কাজ করার জন্য বিশাল সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে সরকারী হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারী হাসপাতালগুলোর।

সবাইকে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে নিয়মিত, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে,মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।পরিশেষে আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতনত হওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সংকটের পর সচেতন হওয়াটা সঠিক নয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.