চকরিয়ার খালে ভাসছে বুনোহাতির মরদেহঃ ছড়াচ্ছে দৃর্গন্ধ

0

চকরিয়া প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের গহীন অরণ্যে একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে মৃত হাতিটি দুর্গম বনাঞ্চলের ফান্ডাছড়ি ঝিরির পানিতে ভাসতে থাকলে ও বনবিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন কিংবা এলাকার কোন লোকজন মৃত হাতিটি উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। এতে হাতিটির শরীরে পচন ধরে বাতাসে ছড়াচ্ছে দূর্ঘন্ধ। দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্খা। খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিৎ করেছে।

বনাঞ্চলের পাশ্ববর্তী কালাপাড়ার বাসিন্দা শামশুল আলম সহ কয়েক ব্যক্তি জানান, ৩ দিন ধরে হাতির মরদেহটি পানিতে ভাসলেও বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায় নি।

সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের অধিন খুটাখালী বনবিটের কালাপাড়া গ্রামের ফান্ডার ঝিরির কানাইয়া খোলা নামক ছড়াখালে গত বুধবার (১৮ মাচর্) সকালে কোন এক সময় হাতির মৃত দেহটি পানিতে ভাসতে দেখেন কয়েকজন রাখাল। পরে ভিলেজারেরা বিষয়টি স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও রেঞ্জ কর্মকর্তা সাইয়েদ আবু জাকারিয়াকে অবহিত করলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান তারা। দুই দিন পর গত ২০ মার্চ হাতির মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে সাংবাদিকদের জানান স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ২১ মার্চ (শনিবার) সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে দেখা যায় ঝুপের আড়ালে একটি হাতির মরদেহ পানিতে ভাসছে। কে বা কারা হাতির মরদেহটি পানির ঝুপের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে। পরে স্থানীয় বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আবু জাকারিয়াকে মোবাইলে অবহিত করা হয়।

ফুলছড়ী রেঞ্জ কর্মকতা ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের দায়ীত্বরত বন্যপ্রাণীর চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন একথা বলে তিনি দুপুরে ৩/৪ জন বনকর্র্মী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও সংগে যাননি ভেটেরনারী চিকিৎসক মোস্তাফিজ। পরে তাঁরা নিজেরাই হাতির মরদেহটি দেখেন এবং স্থানীয় কয়েকজন ভিলেজারকে মরদেহটি পুঁতে ফেলার জন্য নির্দেশ দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।

এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, হাতির ভাসমান মরদেহটি পুঁতে ফেলার কথা থাকলেও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে মৃত হাতিটি এখনো পানিতে ভাসছে। কয়েকজন কাঠুরিয়া ও রাখাল জানান, পানিতে পঁচন ধরায় সন্ধ্যার দিকে মরদেহ থেকে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা আরো জানান, মৃত হাতির দুর্গন্ধযুক্ত এ পানি ফান্ডাছড়ি ছড়াখাল হয়ে খুটাখালীর নিম্নঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পানি পান ও ব্যবহারের ফলে মারাত্মক রোগব্যাধি ছড়াতে পারে।

এ ব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, এলাকার বেশকয়েকজন ভিলেজার ও খুটাখালীর বনবিট কর্মকর্তা রেজাউল করিমকে বলে দেয়া হয়েছে। তারা দ্রুত মরদেহটি মাটিতে পুঁতে ফেলবেন।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক সোহেল রানা জানান মৃত হাতিটি ময়না তদন্ত শেষে শনিবার বিকালে মাটির নীচে পুতে ফেলা হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.