পটিয়ায় কিশোর গ্যাং সস্ত্রাসী হামলা চালিয়ে টাকা ও মোবাইল লুট

0

সিটি নিউজ,পটিয়া : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান মহাসড়কের পটিয়া আমজুর হাট এলাকা ও মুন্সেফ বাজার এলাকায় কতিপয় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে বিশিষ্ট সমাজ সেবক মহসীন মোস্তফাসহ তার কয়েকজন সঙ্গী।মহসীন মোস্তফা গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

জানা গেছে, গত ২০ মার্চ শুক্রবার সকালে মহসীন মোস্তফার ছোট বোন রেখার শ্বশুর বাড়ী জঙ্গলখাইন ৯নং ওয়ার্ডে বসতভিটার একটি সমস্যা নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত একটি সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছিলো। উক্ত বৈঠকে মহসীন মোস্তফা ও তাদের লোকজন বৈঠকে উপস্থিত হয়। বৈঠক চলাকালে প্রতিপক্ষরা অশোভনীয় আচরণ ও বিভিন্ন হুমকি ধমকী শুরু করলে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তখন বৈঠকটি হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে রেখার স্বামী মীর কামরুল ইসলাম আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পটিয়া থানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে আমজুর হাট এলাকায় পৌঁছালে তাদের সিএনজি গাড়ীর গতিরোধ করে মীর গোলাম কিবরিয়া বাবুল এবং মীর বিজয় ইসলাম বাপ্পুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী গাড়ীর গতিরোধ করে গালিগালাজ ও মহসীন মোস্তফাসহ সঙ্গীদের মারধর শুরু করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাদের কাছ থেকে নগদ ৫৭ হাজার টাকা ও ২টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন চিনিয়ে নিয়ে যায়।রাস্তার আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এই ঘটনার পর তারা যখন আবার পটিয়া থানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে মুন্সেফ বাজার পৌঁছলে মীর গোলাম কিবরিয়া বাবুল এবং মীর বিজয় ইসলাম বাপ্পুর ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা আবারও তাদের উপর হামলা চালায় এবং উক্ত হামলায় রেখার বড় ভাই মহসীন মোস্তফা সন্ত্রাসীদের ছুরির আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে যায়। এসময় টহল পুলিশের একটি গাড়ি দেখে সন্ত্রাসীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।

পরবর্তিতে পুলিশের সহযোগীতায় মহসীন মোস্তফা রক্তাক্ত অবস্থায় পটিয়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন এবং তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সন্ত্রাসীরা এতেও ক্ষান্ত হয়নি। তারা প্রতি নিয়ত প্রতিপক্ষের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে। তাদের অব্যাহত হুমকি ধমকির করনে ভীতির মধ্যে রয়েছে।

উল্লেখিত ঘটনা নিয়ে মীর কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে পটিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে পটিয়া মুন্সেফ বাজার এলাকায় মহসীন মোস্তফার উপর সন্ত্রাসীদের হামলার বিষয়টি জানতে চাইলে জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গাজী মো.ইদ্রিস ঘটনাটি স্বীকার করেছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, গাড়ীর কন্ট্রাকটর আবুল কালাম ও বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামে কর্মরত অফিস সহকারী ছৈয়দুর রহমানের ইন্ধনে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান মীর গোলাম কিবরিয়া বাবুল এবং মীর বিজয় ইসলাম বাপ্পুরা এলাকার মদ ও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। গ্রামের মদ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত মীর আবুল কালাম আবু (প্রকাশ-আব্বো) এর বড় ছেলে শীর্ষ তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী, মাদক, চোরা চালান, নারী কেলেঙ্কারিসহ সমাজের নানা অপকর্মের সাথে লিপ্ত পটিয়া মুন্সেফ বাজারের ফুলের দোকানের কর্মচারী মীর গোলাম কিবরিয়া বাবুল এবং ছোট ছেলে গ্রামের শীর্ষ চাঁদাবাজ, অবৈধ ব্যবসা, চুরি, সন্ত্রাসী, অপহরণসহ, বিভন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত। তাদের সব কিছুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছৈয়দুর রহমান ও আবুল কালাম।

এরা এলাকায় কতিপয় কিশোরদের মাধ্যমে একটি গ্যাং সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন। এলাকাবাসী এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনান জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন সিটি নিউজকে জানান, থানায় মামলা দায়ের হলে তদন্ত করে আসামীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, পটিয়া আমজুর হাট এলাকা ও মুন্সেফ বাজার এলাকায় কতিপয় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নিয়ে মীর কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মেডিকেল রিপোর্ট ও থানায় অভিযোগের কপি
এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.