করোনায় মসজিদে নামাজ আদায় প্রসঙ্গে ইসলাম
রানা কিবরিয়া,জার্মান : দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ব্যক্তি এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। করোনার কারণে ইতিমধ্যে সৌদি আরব দেশের নাগরিকদের জন্য ওমরাহ বন্ধ ঘোষণা করেছে। সৌদি আরবের মসজিদগুলোতে শুধু আজান হবে এবং নামাজ বাড়িতে পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে যাতে সাধারণ জনগণের মাঝে এই মহামারী ছড়িয়ে না পরে। এমনকি জার্মানীতেও মসজিদগুলো আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ফেসবুকে অনেক পোষ্ট দেখলাম যেখানে অনেক মুসলিম ভাই/বোন অনেক বিরূপ মন্তব্য করছেন। তাদের উদ্দেশ্যে হাদীসের আলোকে এরকম পদক্ষেপের যথার্থতা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আবু সালামাহ হতে বর্ণিত, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘’কোন সংক্রমণ নেই (আল্লাহ্র নির্দেশ ব্যতীত)। তোমরা সুস্থদেরকে অসুস্থদের সাথে মেশাবে না।‘’ (সহীহ মুসলিম ৪১২৪)।
সা’দ থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘’তোমরা যদি কোন এলাকায় বা দেশে মহামারীর খবর শোন ,তাহলে ওখানে প্রবেশ করবে না। আর তোমরা যেখানে থাক সেখানেই যদি ঘটে, তাহলে সেখান থেকে বের হবে না।‘’ (সহীহ আল-বুখারী ৫৩৯৬, সহীহ মুসলিম ২২১৮)।
উপরোক্ত হাদীসগুলো থেকে বুঝা যায়, কোন সংক্রমণ বা মহামারী থেকে একটি জাতীকে বাঁচানোর জন্য পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া (যেটাকে আমরা বর্তমানে কোয়ারেন্টিন বলি) বা জন সমাগম থেকে আলাদা থাকা ইসলামে আগে থেকেই বলা হয়েছে।
সুতরাং আমাদের উচিত হবে ফেসবুকে কোন বিভ্রান্তিকর পোষ্ট না করে নিজ নিজ জায়গা থেকে একে অপরের জন্য দোয়া করা। বর্তমানে এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাসায় বসে নামাজ পরলেও নামাজ হবে। আপনার দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করাটাই মুখ্য, সেইটা মসজিদে হোক বা বাসায়। পবিত্র হাদীসেই পুরো পৃথিবীটাকে নামাজের স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবু সাই’দ আল-খুদরী বর্ণনা করেছেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “কবরস্থান এবং বাথরুম ব্যতীত সমগ্র পৃথিবীকে নামাজের স্থান করা হয়েছে।” (সুনান আল-তিরমিযী ৩১৭)
লেখক- জার্মান প্রবাসী ।