‘পুলিশ-ডাক্তার-সেনা প্রশাসন-সাংবাদিক’ কাজ করে,আর কিছু ‘নেতা’চাল চুরি করে!

0

আমিনুল হক বাবু,সিটি নিউজ : এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে ফেরেশতা হয়ে ডাক্তার, মানবিক হয়ে পুলিশ, তদারকিতে সেনাবাহিনী, সেকেন্ডের খবর বাতাসে ছড়িয়ে দিতে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে চলেছে সাংবাদিক। দ্বিধাহীন চিত্তে বলা যায়, এরা সবাই নিঃস্বার্থ করোনা যোদ্ধা। আর এসব নিঃস্বার্থ এসব মানবিক যোদ্ধার বিপরীতে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে অসহায়দের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার চাল চুরিতে ব্যস্ত কিছু নেতা নামের কুলাঙ্গার। সময় এসেছে এই সব কুলাঙ্গার দের প্রতিহত করার। এদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবি।গুটিকয়েক নেতিবাচক রাজনীতিবিদের কথা বাদ দিলে ইতিবাচক অনেকেই জান হাতে নিয়ে মাঠে।

আমাদের চট্টগ্রামের কথাই যদি বলি, মহানগর আওয়ামী লীগ’এর সাধারন সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি কখনো জীবাণুনাশক পানির ট্যাংক থেকে নিজ হাতে রাস্তায় ছিটিয়ে আবার কখনো ত্রান নিয়ে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের ঘরে, কিংবা চট্টলা বাসীর জন্য করোনা হাসপাতাল তৈরিতে ব্যাস্ত। বসে নেই চট্টগ্রামের আর এক কৃতি সন্তান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

মন্ত্রীর দায়িত্বের পাশাপাশি কখনো করোনা কিট নিয়ে চট্টগ্রামের পথে, আবার শুকনা খাবার নিয়ে অসহায়ের পাশে।এর বাইরে অন্য কোন এমপি কিংবা বড় রাজনীতিবিদকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। জনমুখে শোনা তারা নাকি হোম কোয়ারান্টাইনে!

বলা যায় ডিসেম্বর মাস থেকেই ৩য় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। নীরব প্রাণঘাতী এই যুদ্ধে কেউ কারো প্রতিপক্ষ নই। সবাই আক্রান্ত। যুদ্ধে অস্ত্র একটাই, নাম তার করোনা(কোভিড-১৯)।

বাংলাদেশেও এ যুদ্ধের আঁচ লেগেছে এক মাস হলো। দেশে করোনা ভয়াবহতা ছড়িয়েছে গত পাঁচ দিন। সামনে হয়তো আরো বাড়বে(আল্লাহ না করুক)।

প্রথম থেকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণ নেতৃত্বে একের পর এক সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আবার অনেকে বলছে সরকার যথেষ্ট সময় পেলেও প্রস্ততি নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই যুদ্ধের সেনাপতি হলো ডাক্তার,নার্স তথা চিকিৎসার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। ডাক্তাররা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে আমি মনে করি। তবে অভিযোগ আছে, করোনার এই দুঃসময়ে অনেক ডাক্তার চেম্বার করছে না। যার ফলে অন্যান্য রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর অভিযোগও আমরা গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি।

এত কিছুর পরও এই যুদ্ধে জিততে হলে শেষ আশ্রয়স্থল ডাক্তার। করোনা দেখিয়ে দিলো স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। জনসংখ্যা অনুপাতে নেই প্রয়োজনীয় আইসিইউ যা এই মুহূর্তে খুবই জরুরী। শুধু ডাক্তারকে দোষ দিলে হবে না, তাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী, ইকুইপমেন্টসহ সুযোগ সুবিধা কি আমরা যথাযথ দিতে পারছি?

এই দুঃসময়ে তারা চিকিৎসা দিয়ে যখন পরিবারবিহীন বিশ্রাম নিতে যায় তাদের স্বাস্থ্যকর থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কি আমরা করছি? এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে এখনই।

জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সাহসী এবং যথোপযুক্ত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী।

এই দুঃসময়ে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা দেশের জন্য আশীর্বাদ। পুলিশের মহাপরিদর্শক থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত প্রতিটি সদস্য দায়িত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। নেতিবাচক নামের ভীড়ে সর্বোচ্চ ইতিবাচক ভূমিকায় বাংলাদেশ পুলিশ। করোনায় আক্রান্ত হলে যখন স্বজন পালাচ্ছে তখন পাশে থেকে পরম মমতায় হাসপাতালে নিচ্ছে পুলিশ, অসহায় মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ। লকডাউনের এই দুঃসময়ে চট্টগ্রামে এমন কি টেলিফোনে বাজার থেকে শুরু করে কর্মস্থলেও পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ। এমন কি গর্ভবতী নারী কিংবা রোগাক্রান্ত সিটিজেনকে গভীর রাতে হাসপাতালে পৌঁছানোর দায়িত্ব সেই সাথে চিকিৎসার সুবন্দোবস্তও কাঁধে তুলে নিলো পুলিশ। এগুলো করোনা পরবর্তী সুদিনে দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

এই সব ভালো কিংবা খারাপ সব খবর গুলো তুলে আনছে কলম যোদ্ধা সাংবাদিক। তারাও করোনা যোদ্ধা। কে কখন করোনায় আক্রান্ত হলো, সরকার কখন কি সিদ্ধান্ত দিলো, কে চিকিৎসা পাচ্ছে না কিংবা কোথায় কোন অপকর্মের গন্ধ পেলে সব কিছুই তুলে আনছে সাংবাদিক ভাই বোনেরা। এরা সবাই করোনা যোদ্ধা, সালাম তোমাদের।

এর বাইরে ব্যাংকার, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, সমাজকর্মী সহ আরো অনেকে মাঠে আছেন।

সর্বোপরি জেলা প্রশাসনও বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছে করোনা প্রতিরোধে।সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।জানি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই আঁধার কাটবেই। আলো আসবেই। সেই আলোর পৃথিবী হয়ে উঠুক সাম্যের। ভালোবাসার। প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠুক মানবিক।

লেখক : সিনিয়র ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.