সাংবাদিক কন্যা ডা. সামিয়া করোনা আক্রান্ত

0

সিটি নিউজঃ বিশিষ্ট সাংবাদিক নাসির উদ্দিন চৌধুরীর কন্যা ডা. সামিয়া নাজনীন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সামিয়ার আশু সুস্থতা কামনা করে তার মুক্তিযোদ্ধা পিতা সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। সামিয়া নাজনীন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি হাসপাতালটির করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন।

আজ বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন চৌধুরী তাঁর ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেন, আমার মেয়ে ডাঃ সামিয়া নাজনীন করোনা আক্রান্ত। সে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত শিশুদের সুস্থ করে তুলতে গিয়ে তাদের সেবায় একাত্ব হয়ে এমনভাবে নিজেকে উৎসর্গ করে যে, সে নিজেই এ রোগের শিকার হয়ে পড়ে।

ক’দিন ধরে গায়ে জ্বর আসাতে বাসায় সে নিজেকে আলাদা রাখে এবং পরে পরিক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।আমার ফুলের মত কোমল মেয়ে। গতরাতে রিপোর্ট পাওয়ার পর কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।ওর মাও কাঁদছে অবিরত । মা মেয়ে কারো চোখে ঘুম নেই । আমি কাঁদতে পারছি না । আমার ভিতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে দলা দলা কান্না পাকিয়ে উঠছে কিন্তু চোখ ফেটে বের হতে পারছে না। আমার মেয়ে তার বাপের খাসলত পেয়েছে ।

জীবনের খাতার হিসেব করে আক্ষেপ করে তিনি আরো লিখেন, আমি সারাজীবন জনসেবা করার চেষ্টা করেছি। অন্যের সেবায় জীবন উৎসর্গ করেছি । রাজনীতি, সাংবাদিকতা যখন যা করেছি সমস্ত মন প্রান দিয়ে করেছি। পরের কাজে জীবনটা বিলিয়ে দিয়েছি, কোন ফাঁকি রাখিনী। নিজের স্বার্থ নিয়ে কোনদিন মাথা ঘামাইনি । যখন যে কাজ করেছি তাতে ষোলআনা উজাড় করে দিয়েছি। নিজেকে এমনভাবে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে কখন জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি টেরই পাই নি । শেষ বেলায় হিসেব করে দেখছি আমার হিসেবের ঘরে ফাঁকি। আমি একজন ব্যর্থ মানুষ । আমার প্লট নেই, ফ্ল্যাট নেই, গাড়ি নেই বাড়ি নেই, ব্যাংক ব্যালান্স নেই। আমার ছেলেমেয়েদের ইউরোপ আমেরিকায় পড়াতে পারি নি।

আমার মেয়েও আমার মত আত্মবিস্মৃত হয়ে করোনা রোগিদের সেবা করতে যেয়ে নিজের শরীরে করোনা ভাইরাস ঢুকিয়েছে।

আমার সকল মুরব্বী, মুক্তিযুদ্ধের সহযোদ্ধা, রাজনৈতিক জীবনের নেতা, রাজনৈতিক সহকর্মী, সিনিয়র, জুনিয়র, বন্ধু, ছোট ভাইয়ের মত আমি যাদেরকে পরিচর্যা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছি, তারা এবং আমার সহযোগি সাংবাদিক-সকলের প্রতি আমার সকরুন মিনতি, আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে তুলতে কারো কোন করনীয় থাকলে, সাহায্যের উদার হস্ত নিয়ে এগিয়ে আসুন, আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। আমার মেয়ে এখন শ্বশুরবাড়িতে কোয়ারান্টাইনে বাস করছে। আমি মুক্তিযুদ্ধে জিতেছি, আশা করি আমার মেয়েও করোনা যুদ্ধে জিতবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.