পটিয়ার বাইপাস সড়ক ছিনতাইকারীদের যেন স্বর্গরাজ্য

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধিঃ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ক্রাইম জোন হিসেবে সুপরিচিত হয়ে উঠছে চট্রগ্রমের পটিয়ার বাইপাস সড়ক। এই সড়কে প্রতিনিয়ত ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। এ বাইপাস সড়কটি পরিনত হয়েছে ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্যে। করোনা ভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর থেকে প্রায় দেড় মাসের মধ্যে শতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

গত দু’সপ্তাহের মধ্যে বাইপাস সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক ছিনতাইয়ে ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ এ পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তিদের অভিযোগ।

ইতোমধ্যে পটিয়ার বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, অপরহরণ, খুন, গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি, জায়গা দখল, সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে চলেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পটিয়া বাইপাস সড়ক ঘিরে চলছে মাদক, ইয়াবা ব্যবসাও, চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা অহরহ। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক হত্যাকান্ডের ঘটনাও ঘটেছে।

গত ১ মে থেকে ১০ দিনের মধ্যে প্রায় ১০টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। কেউ থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ ১জন ছিনতাইকারীকেও শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে পারেনি। পটিয়া সদরের ছিনতাইকারীদের রয়েছে বিশাল একটি কিশোর গ্যাং, কিশোর গ্যাং এর সিন্ডিকেট রয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া ছাড়াও চন্দনাইশ, আনোয়ারা, বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি অপরাধ চক্র।

এই চক্রের সাথে যুক্ত রয়েছে পটিয়া সদরের হাবিবুর পাড়া, দক্ষিণ ঘাটা, শেয়ানপাড়া, গৌবিন্দারখীলসহ বিভিন্ন এলাকার কিছু বখাটে যুবক। তারা কিশোর গ্যাং নামের পরিচিত।

গত বুধবার রাতে পটিয়া সদরের ইন্দ্রপোলের ব্যবসায়ী কাগজী পাড়ার শেখ আহমদের পুত্র নাজিম উদ্দীন বাড়ি থেকে পটিয়া আসার পথে গলায় ছুরি ধরে এক লাখ ৪ হাজার টাকাসহ মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। একই দিনে উপজেলার কোলাগাও লাখেরা এলাকার ইসকান্দর, ইসমাইল, মোহাম্মদ ইদ্রিসের তিনটি মোবাইল ও নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ফোর এইচ গ্রুপের সামনে, মোহাম্মদ নগর, লাখেরা এলকায় নিয়মিত ছিনতাই, চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।

গত ৩ মে দৈনিক সংবাদ’ পটিয়া প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম পোস্ট অফিসের মোড় থেকে কাগজী পাড়া বাসায় যাওয়ার পথে রাত ১০টা ১০ মিনিটে সিএনজিতে গলায় ছুরি ধরে বাইপাসে বডুয়া পাড়া এলাকায় নিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। একই দিন একই কায়দায় শাহগদী মার্কেট যাওয়ার পথে সিএনজিতে গলায় ছুরি ধরে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়।

এ ঘটনায় সাংবাদিক নজরুল ইসলাম গত ৪ মে পটিয়া থানায় অভিযোগ করেন। সম্প্রতি পটিয়া থানার পৌর বাজারের সামনে খাজা ফার্মেসির মালিক চন্দনাইশের নুরুল করিম, পটিয়ার পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস ওষুধ কোম্পানির এম আর সাজু, ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমানের নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।

উপজেলার কুসুমপুরা বোর্ড অফিসের সামনে আব্দুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহমদ শরীফ আজাদের ছেলে রাশেদ আল করিম সিএনজি সহকারে পটিয়া পৌর সদরের আসার পথে গলায় ছুরি ধরে হরিণখাইন নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে ২০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে বলে আবু তাহের চৌধুরী নামের তার এক নিকটাত্মীয় জানান।

বাইপাস সড়কে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরাধীরা লোকজন ধরে এনে টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে, এলাকার লোকজন দিন রাত ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে বলে ১৩ নং দক্ষিণ ভুষি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্ম সেলিম চেয়ারম্যান জানান।

পটিয়ায় অরাধ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট খুরশীদ আলম বলেন, অপরাধীরা একবার অপরাধ করার পর যদি তাদের শাস্তি না হয় দিন দিন এ অপরাধীরা আরো বেশি অপরাধ করতে উৎসাহিত হচ্ছে । থানার পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে তিনি বলেল ।

এ বিষয়ে কালারপোল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কায়ছার হামিদ বলেন, ছিনতাইয়ের বিষয়ে আমি কিছু জানি না, তবে পটিয়া থানায় অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ হাতে পেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো বোরহান উদ্দীন বলেন, কিশোর গ্যাং, ছিনতাইকারীদের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে শনাক্ত করে কটোর আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ দিন রাত এমনকি গভীর রাত পয্যন্ত র্প্রানপণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ অভিযান অভ্যাহথাকবে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি জোরদাবি জানান

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.