চন্দনাইশে করোনা মোকাবেলায় তিন দিকপাল

0

সিটি নিউজ, চন্দনাইশঃ চলতি বছর মার্চ মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশে করোনা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে চন্দনাইশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সম্মুখভাগে থেকে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে কাজ করে গেছেন। ফলে চন্দনাইশে ঈদের পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত মাত্র ১২ জন রোগী সনাক্ত হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

বিশেষ করে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে এবং শপিং মল ও দোকানপাট বন্ধ রাখতে সহাকারি কমিশনার ভূমি নিবেদিতা চাকমা দিন রাত পরিশ্রম করে গেছেন। তিনি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দুরুত্ব ও ব্যবসায়ীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৮ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছেন। প্রতিদিন সেনা সদস্য তথা আইনশ্যংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে কোথাও না কোথাও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রেখেছিলেন।

একইভাবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দোকানপাট বন্ধ রাখতে, যানবাহন চলাচল সীমিত রাখতে চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ কেশব চক্রবর্তীর নের্তৃত্বে থানা পুলিশ ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। ফলে চন্দনাইশে ঈদের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত দুই মাসে মাত্র ১২ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছিল।

চন্দনাইশে করোনা ভাইরাস চলাকালে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও জায়গা জমি সংক্রান্ত ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি অব্যাহত ছিল। এ সকল ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা পুলিশ সুপারের দেয়া খাদ্য সামগ্রী, বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে সংগ্রহকৃত খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে গেছেন চন্দনাইশের আনাছে কানাছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আইন শৃঙ্খলা সঠিক রাখার পাশাপাশি সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত পরিবারের একমাত্র ওয়ারিশ মিলন সেনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পাশাপাশি খাদ্য সামগ্রী, কাপড়, নগদ টাকা কয়েক দফায় উপহার দিয়েছেন।

পাশাপাশি চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. শাহীন হোসাইন চৌধুরী ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু রাশেদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২ জনের নমুনা পজিটিভ আসে। কিন্তু তারা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে থেকে বীর দর্পে করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন।

ডা. শাহীন হাসান চৌধুরী কখনো চিকিৎসক হিসেবে হাসপাতালে, কখনো লকডাউন করতে রোগীদের বাড়িতে, কখনো অসহায় মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে দাড়িয়েছেন। একইভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সার্বক্ষণিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগী দেখেছেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু রাশেদ।

একইভাবে করোনা ভাইরাস চলাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চেম্বার করেছেন সাতঘাটিয়া পুকুর পাড় এলাকায় প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার রোগী দেখেছেন নিয়মিত। চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক চিকিৎসক সাপ্তাহিক রোগী দেখার সিডিউল থাকলেও করোনা ভাইরাস চলাকালে এ সকল চিকিৎসকেরা চেম্বারে রোগী দেখতে দেখা যায়নি।

তবে বেসরকারি হাসপাতাল গাছবাড়িয়া পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বরকল আমরা হাসপাতাল নিয়মিত রোগীদের সেবা দিতে দেখা যাচ্ছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মুখভাবে কাজ করে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) আকতারুজ্জামান রবিউল, (ল্যাব) ছোটন কুমার পাল।

এ পর্যন্ত এ দুজন চন্দনাইশের ৩ শতাধিক মানুষের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সৃষ্টিকর্তার অপর কৃপায় এখনো তারা দু’জনই সুস্থ রয়েছেন বলে জানা যায়। অপরদিকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চন্দন দাশ। হঠাৎ করে সরকার লকডাউন শিথিল করার কারণে চন্দনাইশে দু’দিনে ২৩ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। অথচ মার্চ মাস থেকে ঈদের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত চন্দনাইশে করোনা রোগী ছিল মাত্র ১২ জন। বর্তমানে যে হারে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে তা দেখে সাধারণ মানুষ আতংকে রয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.