কক্সবাজারে চিকিৎসক ও পুলিষ সদস্যরা করোনা আক্রান্তঃ বাড়ছে উদ্বেগ

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজারঃ দেশের অন্যান্য স্থানের মতো কক্সবাজার জেলায়ও করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগ জনক হারে বাড়ছে। জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত যেসব রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স সহ স্বাস্থ্যকর্মী, র্যাব ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারি অধ্যাপক ডা. রুপস পাল ও তার পরিবারের ৪ জন সদস্য এবং র্যাব ও পুলিশের ৪০ জন সদস্য রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছে, এই হারে স্বাস্থ্যকর্মীরা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আক্রান্ত হলে এবং তাদের সংখ্যা কমে গেলে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ও চিকিৎসকরা তাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন।

কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত র্যাব ও পুলিশের ৪০ জন সদস্য এবং ৫ জন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৫ জনের বেশি মানুষ।

কক্সবাজার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, করোনার এই পরিস্থিতিতে সামনের সারিতে থাকা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারি অধ্যাপক ডা. রুপস পাল ও তার পরিবারের ৪ জন সদস্য, আরো ৫ ডাক্তার এবং র্যাব ও পুলিশের ৪০ জন সদস্য রয়েছেন।

বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যেও থেমে নেই মাদক পাচারকারী ও ব্যবসায়ীরা। আর এসব মাদক পাচার রোধে করোনার এ সংকটেও মাঠে সক্রিয়ভাবে অভিযান পরিচালনা করছে র‌্যাব ১৫। অভিযানের সাফল্যও এসেছে। করোনাকালে প্রায় শতাধিক মাদক পাচার ঠেকিয়ে দিয়েছে তারা।

কিন্তু এসব অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার মর্যাদার এক কর্মকর্তাসহ ৩৫ জন। যাদের মধ্য থেকে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ওই এএসপি।

র‌্যাব ১৫ সুত্রে জানাযায়, করোনার এ মহামারীতেও বসে নেই মাদক পাচারকারী ও অস্ত্রবাজরা। দেশের স্বার্থে এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে র‌্যাব। জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে মরণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। আক্রান্ত সবাই হুম আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহজাহান কবির জানান, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কিছু সদস্যের মধ্যে অসুস্থতা দেখা দিলে কতৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়। এতে তদন্ত কেন্দ্রের এসআই শেখ ফরিদ আলতাফ, শফিউল ইয়াছিন, এএসআই বিলাসসহ ৫ পুলিশ সদস্যের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.ইকবাল হোছাইন বলেন, দেশে করোনা সংকটের শুরু থেকে জেলার বিশাল জনগোষ্ঠীকে করোনার মহামারি থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা দিন রাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে আজ পুলিশ সদস্যরা করোনাক্রান্ত । করোনা সংকট থেকে সম্পুর্ণ উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত জেলা পুলিশ জনগণের পাশে থাকবে ।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের যদি এই হার অব্যাহত থাকে, তাহলে ১৫ থেকে ২০দিন পর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলাও ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে।

করোনার উপসর্গ নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকা একদিনে (১ জুন) তিনজন মারা যান।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, এ পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় সোমবার (১ জুন) একজনসহ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন রোগিঙ্গাসহ ১৩ জন, আক্রান্ত সংখ্যা ৭০৫ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৪২ জন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.