পটিয়ায় সফল সেলিম চেয়রম্যান মৎস্য পোনা উদপাদন ও সরবরাহেও সফল

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধিঃ  চট্টগ্রামের পটিয়ায় মাছের পোনা উৎপাদন ও বিকিকিনিতে সফল একটি প্রতিষ্ঠান এস জে ফিস প্রডোক্ট।

পটিয়া খানমোহনা রেলষ্টেশন সংলগ্ন বিশাল এলাকায় দক্ষিণ ভুর্ষি ইউনিয়নের বার বার নিবার্চিত সফল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম গত ১৫ বছর আগে ব্যাংক লোন নিয়ে এস জে ফিস মাছের হ্যাচারী করেন।

বর্তমানে অর্ধশতাধিক পুকুরে মাছ ও মাছের রেনু পোনা উৎপাদনে দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছেন বলে একাধিক মৎস্য দপ্তর সুএে জানা যায়।

এস জে ফিস প্রডোক্ট সব ধরনের রেনু পোনা মাছ পাওয়া যায়। পটিয়ার রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন স্পটে প্রতি বর্ষা মৌসুমে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জমে উঠেছে মৎস্য পোনার হাট।

প্রতিদিন এই করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাত ১২টা থেকে এমনকি গভীর রাত পয্যর্ন্ত রেল স্টেশন, থানাহাট, বিওসি রোড, স্টেশন রোড, ডাকবাংলো, কাচারি পুকুর পাড়জুড়ে বসে মৎস্য পোনার হাট। মৎস্য পোনা সংগ্রহকারীরা পছন্দের পোনা সংগ্রহ করে চাঁদের গাড়িতে করে নিয়ে যান।

প্রতিদিন পটিয়ার পোনার বাজারে প্রায় এক হাজার টাকায় একভার পোনা বিক্রয় হয়ে থাকে তবে এবার করোনাভাইরাস এ প্রভাব পড়ার শংকায় রয়েছে। খামারীরা প্রতিটি ভার বিক্রয় করে বিক্রেতারা পেয়ে থাকেন দুই – তিন হাজার টাকা। এতে এ পোনার হাটে প্রতিদিন গড়ে বিক্রয় হয় ১০ থেকেে ১৫ লাখ টাকার পোনা। পোনার হাটে সবচেয়ে বেশি ক্রেতা আসেন কক্সবাজার, মহেশখালী, চকরিয়া, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মিরাসরাই ফটিকছড়ি উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে।

পটিয়ার মাটি ও পানি মৎস্য চাষের উপযোগী হওয়ায় বহুকাল আগে থেকেই এখানে ভালো জাতের পোনা জন্মে। তাই প্রতি বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা পটিয়ায় এসে মৎস্য পোনা বিকিকিনি করে থাকে। রাত যত গভীর হয় মৎস্য পোনা ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনা-গোনায় পটিয়া রেল স্টেশন ও আশপাশের পুরো এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে ।

পোনা ব্যবসায়ী পটিয়া পৌর এলাকার ৩ – ৮ নং ওয়ার্ডের মৎস্যা হ্যাচারির মালিক মো আবজল , মো নজুরুল ইসলাম চৌধুরী ও মো নুরুল আলম (নুরু) জানান, এ হাটে রুই, কাতাল, মৃগেল, পুঁটি, ঘইন্যাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা বিক্রয় হয়। একসঙ্গে তিন প্রকার পোনা বিক্রি করে মিইল্ল্যা (মিশান)। দুটি ডেক্সি নিয়ে একটি ভার হয়। এক ডেক্সি চার কেজি, এক ভারে আট কেজি মৎস্যা পোনা । মিইল্ল্যা (মিশান) প্রতি ভার দেড় হাজার টাকা। কালিগন্যা কেজি ৬০০, সিলভারকার্প কেজি ৫০০ , রুই ৭০০ কাতাল ৮০০, মাল ৫০০ সহ বিভিন্ন দামের বিক্রি হচ্ছে।

পোনা ব্যবসায়ী দক্ষিণ ভুষি ৪নং ওয়ার্ড বাদশা আলী বাড়ীর দীঘিরপাড় বাসিন্দার মো নুরুল আলম (নুরু) জানান, তিনি পটিয়া থেকে পোনা ক্রয় করে রাউজান ও হাটহাজারি সহ বিভিন্ন উপজেলায় মৎস্য পোনা বিক্রয় করতে পোনার ভার বহন করার জন্য তিনি ২০ জন লোক নিয়োগ করেছেন। তাঁদের দৈনিক জনপ্রতি বেতন ৮’শ টাকা ও প্রতিভার ৮ কেজি এতে দৈনিক ১৬০ কেজি মৎস্য পোনা ক্রয় করে, তা বিভিন্ন উপজেলায় বিক্রয় শেষে তাঁর ৩০ – ৩৫ হাজার টাকা লাভ হয়।

পটিয়ার হক ফিশারিজের পরিচালক পটিয়ার খানমোহনা এস জে ফিস হ্যাচারীর মালিক দক্ষিণ ভুর্ষি ইউপি চেয়ারম্যান মৎস্য পোনা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম চেয়ারম্যান জানান, তিনি মনোসেক তেলাপিয়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য পোনা চাষের পোনা প্রতিদিন পটিয়া উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করেন।

গত বছর তিনি ৪০ লাখ টাকার পোনা সরবরাহ করেছি । এ বছর তিনি ৭০ লাখ টাকার পোনা সরবরাহের টার্গেট নিয়েছেন। এ মৌসুমের প্রতিদিন তিনি তাঁর প্রজেক্টের ১০ টি পুকুর থেকে ৫০ ভার মৎস্য পোনা বিক্রয়ের জন্য রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন পোনার বাজারে পাঠান।

সেলিম চেয়ারম্যান আরো জানান, ১৫ বছর আগে তিনি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মৎস্য পোনার হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদনে শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর হ্যাচারির ৫০ টি পুকুরে প্রতিদিন মনোসেক তেলাপিয়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য পোনার চাষের আওতায় রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন পটিয়ার পোনার বাজারে তাঁর হ্যাচারি থেকে ৫০ ভার পোনা বিক্রয়ের হয়। বর্তমানে তাঁর প্রতিদিন পোনার চাহিদা প্রায় ৫০ হাজার টাকা। চলমান বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আশা করছি এ মৌসুমের শেষে রের্কড পরিমাণ পোনা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারব।

এ বিষয়ে পটিয়ার মৎস্য কর্মকর্তা জানান, ‘পটিয়ার মাটি ও পানি মৎস্য চাষের জন্য খুবই উপযোগী। খুব লাভজনক হওয়ার ফলে শতশত পুকুরে রেণু চাষ করে আবার তা রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন স্পটে পোনার বাজারে বিক্রয় করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী। তাঁদের মধ্যে অনেকেই মৎস্য প্রজনন হ্যাচারির মালিক।

প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের এগিয়ে নিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সব মিলিয়ে পটিয়ার দক্ষিণ ভুর্ষি খানমোহনা রেলস্টেশন সংগ্লন এস জে ফিস মৎস্য পোনা উৎপাদনে মুহাম্মদ সেলিম চেয়ারম্যান গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকায় সুনাম খ্যাতি সারা চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.