চন্দনাইশ তালুকদার পাড়ার কাঠের সাঁকোটি ভেঙ্গে গেছে দীর্ঘদিন ধরে

0

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশঃ চন্দনাইশ পৌরসভার তালুকদার পাড়ার কাঠের ভাঙ্গা সাঁকোয় ভেঙ্গে পড়েছে। ৬ মাসের অধিক সময় ধরে পড়ে থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কেউ। অথচ তালুকদার পাড়াসহ ৩টি পাড়ার ৪ শতাধিক পরিবারের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ কাঠের সাঁকো।

হাজারো মানুষের ভালোবাসার হৃদয়স্পর্শে গড়ে উঠা বঞ্চিত মানুষের কন্ঠস্বর প্রয়াত সাহিত্যিক আহমদ ছফার স্মৃতি বিজড়িত বরুমতি খালের উপর তালুকদার পাড়া এলাকায় দীর্ঘ ৫০ বছরের অধিক পুরনো এ কাঠের সাঁকো। এ সাঁকো ব্যবহার করে তালুকদার পাড়া আবু তালেব মুন্সি বাড়ি, তালুকদার পাড়া, টাওয়ার পাড়ার ৪ শতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ।

খালের পূর্ব পাশে অবস্থানকারী বিশাল জনগোষ্টি এবাদতের জন্য আসেন তালুকদার পাড়া মসজিদে এ কাঠের সাঁকো পার হয়ে। তাছাড়া মসজিদের পাশে একমাত্র কবরস্থানটিতে লাশ আনতে হলে দুই কি: মি: ঘুরে গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট হয়ে তালুকদার পাড়া মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে আসতে হয়।

এ সকল এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্টানে যেতে বর্ষা মৌসুমে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর এ সাঁকোর কাঠ পরিবর্তন করতে হাজার হাজার টাকা ব্যয় হয়। গত বছর ডিসেম্বর মাসে সাঁকোর কাঠগুলি ভেঙ্গে পড়লেও অর্থাভাবে পুনরায় স্থাপন করতে পারেনি এলাকাবাসী। এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় পায়ে হেঁটে বরুমতি খাল পাড়ি দিয়ে মসজিদে যাচ্ছে মুসল্লিরা।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে এলাকায় ভোট চাইতে গেলে কাঠের সাঁকোটি ব্রিজে পরিনত করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে শেষ। নির্বাচিত হওয়ার পর কেউ আর খবরই নেননি বলে অভিযোগ করেছেন কবির আহমদ (৭০)।

তিনি আরো বলেছেন, ২০১৭ সালে স্থানীয়দের চাঁদার ভিত্তিতে ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাকোঁটির ৪ টি পিলার নির্মাণ করা হয়। অর্থভাবে পূর্নাঙ্গ ব্রিজটি করতে না পারায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় বদিউল আলম (৬৫) বলেছেন, অনেক জনপ্রতিনিধির প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে কেউ এগিয়ে না আসায় এলাকাবাসী চাঁদা দিয়ে ৩ বছর আগে ৪টি পিলার নির্মাণ করে। অর্থাভাবে ব্রিজটি নির্মাণ করার সম্ভব হয়নি তাই তিনি সড়কটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। বিশেষ করে কোন রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে বিপাকে পড়তে হয় খালের দুই পাড়ের মানুষের।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৫০ বছরের অধিক পুরনো কাঠের সাঁকোটি এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে বরুমতি খাল পারাপার হয় এলাকার মানুষ। কবির আহমদ (৭০) বলেছেন, তিনি কোনো সময় এই সাঁকো দিয়ে হেঁটে যেতে পারেন নাই। ভয়ে সব সময় বসে বসে পার হতেন।

চন্দনাইশ পৌরসভাটি ২০০২ সালে ঘোষণা হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হলেও হয়নি কাঠের সাঁকোটি ব্রিজ। এ এলাকার মানুষের দুঃখ যেন গুচ্ছে না কোনভাবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর খোরশেদুল আলম সবুজ বলেছেন, বিষয়টি পৌরসভায় একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। অর্থাভাবে ব্রিজটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম খোকা বলেছেন, সাকোঁটি’র দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় ত্রাণ বিভাগ থেকে করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া ব্যবহৃত সড়কটি এলজিডি’র না হওয়ায় তারাও ব্রিজটি করতে পারছেন না। পৌরসভায় এ ধরনের ব্রিজ করার সুযোগ না থাকায় করা সম্ভব হয়নি। তবে ব্রিজটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.