বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ালে তীব্র আন্দোলনঃ রিজভী
সিটি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির আইন পাস হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রিজভী বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বছরে কয়েকবার বৃদ্ধির জন্য সংসদে উত্থাপিত বিলের বিরুদ্ধে শুধু তীব্র নিন্দা নয়, ধিক্কার জানাচ্ছি। সংসদে এ আইন পাস না করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এ করোনাকালের মধ্যেও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
আজ বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, “একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন’ (সংশোধন) বিল-২০২০ উত্থাপন করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ। গত বছর ডিসেম্বরে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। সংসদে অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত এ বিলটির মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, বর্তমান সরকার এক নিষ্ঠুর ও অবিবেচক গণদুশমন।
তিনি বলেন, ২০০৩ সালে পাস হওয়া বিদ্যমান আইনে কোনো অর্থবছরে একবারের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু, গতকাল সংসদে উত্থাপিত আইন কার্যকর হলে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বছরে এক বা একাধিকবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোলসহ আরো জ্বালানির দাম পরিবর্তন করতে পারবে। বছরে বারবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিল পাস মানে গরিবদের সমাধি রচনা করা।’
রিজভী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের আঘাতে দেশে যখন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, মানুষকে মৃত্যুচিন্তা গ্রাস করেছে, চারদিকে শুধু কর্মহীন মানুষের হাহাকার, ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, তখন জনগণের অতি প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর বারবার মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণকে ফতুর করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, সব ব্যবস্থাই করা আছে, তাহলে খাবারের সন্ধানে ও ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ সারিবেঁধে ঢাকা ছাড়ছে কেন? দেশের অর্থনীতি আত্মসাৎ করে স্বার্থলোলুপ ক্ষমতাসীনদের সদলবলে টাকা পাচার, বেগম পল্লী কিংবা সেকেন্ড হোম তৈরির কাহিনি নিরেটভাবে গাঁথা। তাই ফাঁকা অর্থভাণ্ডার পূরণ করতে জনগণকে বুলডোজার দিয়ে পিষে, এখন বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করে টাকা সংগ্রহ করা হবে।
করোনার দুর্যোগকালেও কর্মহীন, আয়হীন মানুষের রক্ত শোষণ করে জনগণকে মৃত লাশ বানিয়ে এরা টাকা আদায় করছে। এমনিতেই বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলের উৎপীড়নে কম আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত, আর তার ওপর বছরে বারবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পাস হলে এক নরকের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হবে দেশকে।
দেশের এ ক্রান্তিকালে জনগণের কাছ থেকে টাকা চুষে নিতে ড্রাগের নেশার মতো পেয়ে বসেছে সরকারকে। আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বছরে কয়েকবার বৃদ্ধির জন্য সংসদে উত্থাপিত বিলের বিরুদ্ধে শুধু তীব্র নিন্দা নয়, ধিক্কার জানাচ্ছি। সংসদে এ আইন পাস না করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায়, এ করোনাকালের মধ্যেও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল জাতীয়তাবাদী যুবদল কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বিপ্লবকে সাদা পোশাকে পুলিশ বাহিনী আলচারার নিজ অফিস থেকে তুলে নিয়ে মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমি জাহিদুল ইসলাম বিপ্লবকে কারাগারে প্রেরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।