জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আ.লীগ নেতা কাউন্সিলর তারেক সেলিম !

উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন

0

সিটি নিউজ : চট্টগ্রামে অর্থের অভাবে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার ব্যয় বহন করার আকুতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর খোলা চিঠি লিখেছেন নগরীর আলকরণ ওয়ার্ড থেকে চারবার কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত এই আওয়ামী লীগ নেতা।

চিঠিতে নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা দিয়ে তারেক সোলেমান সেলিম লিখেছেন, ‘প্রাণপ্রিয় নেত্রী আপনি মাদার অব হিউম্যানিটি। আপনার মমতাময়ী মনের রূপ আজ সারা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। ’

‘বর্তমানে আমার এই কষ্টদায়ক পরিস্থিতিতে আপনার মমতাময়ী হাত সদয়ভাবে বাড়িয়ে দেবেন এটা আশা করতে পারি। আমার চিকিৎসা চালিয়ে নিতে আপনার সদয় আর্থিক সহযোগিতায় আমাকে বাধিত করবেন। ’

তারেক সোলেমান সেলিম বর্তমানে ঢাকার ডেল্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দ্রুত তাকে সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, আলকরণ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ছালেহ্’র ছেলে তারেক সোলেমান সেলিম স্কুল জীবনেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি করে রাজপথে মিছিল করেন তারেক সোলেমান সেলিম।

পরে আলকরণ ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে ৭৫ পরবর্তী সময়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া এই এলাকার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করেন তিনি।

১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ নেতা এমএ ওয়াহাব, এমএ মান্নান এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনকে অপহরণ করে আটকে রাখে।

সেদিন তারেক সোলেমান সেলিমসহ ২৫ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী পাল্টা হামলা করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্ধার করেন।

২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারেক সোলেমান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। কয়েকবার হামলার শিকারও হন তিনি।

২০০৪ সালে ২১ আগস্টের নির্মম ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গিয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে নগর আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানান, আওয়ামী পরিবারের সন্তান, সারাজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা তারেক সোলেমান সেলিম টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

‘অথচ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি না করেও দলের পদ-পদবী দখল করে, প্রভাব খাটিয়ে অনেকে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। দলের এই সুসময়ে তারেক সোলেমান সেলিমের মতো দুসময়ের কর্মীরা যাতে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ না করেন। ’

১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তারেক সোলেমান সেলিম। এরপর ২০০০, ২০০৪ এবং সর্বশেষ ২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. জামাল হোসেন জানান, চারবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও টাকার দিকে নজর দেননি তারেক সোলেমান সেলিম। জনগণের পাশে ছিলেন। দলের পাশে ছিলেন।

‘তারেক সোলেমান সেলিম টাকার অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবেন এটি হতে পারে না। আমাদের নেত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে আবেদন- টাকার অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে তারেক সোলেমান সেলিমরা যাতে হারিয়ে না যায়। ’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.