বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নের দাবীতে মানববন্ধন

0

সিটি নিউজঃ প্রবীণ সাংবাদিক কামরুল হুদা বলেছেন, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করুন। সব ভাড়াটিয়াদের বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র দিতে হবে। এলাকাভিত্তিক বাড়ি ভাড়া রেট কার্যকর করুন। স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য সরকারি খাস জমিতে হাউজিং প্রকল্প করে কিস্তির ভিত্তিতে বরাদ্দ দেয়ার ব্যবস্থা করুন।

বাড়ি ভাড়ার রশিদও ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করার ব্যবস্থা করাসহ ৪ দফা দাবিতে ২৫ জুলাই শনিবার সকাল ১১ টায় চেরাগী মোড়ে ভাড়াটিয়া ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, সরকারি আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বাড়ির মালিকরা ইচ্ছামতো ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছে। প্রশাসনের নাকের ঢগায় এ ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে আছে। গ্রামের সহজ সরল মানুষ গ্রামে কর্মসংস্থানের অভাব হওয়ায় বেঁচে থাকার তাগিদে শহরমুখী হচ্ছে। এতে আবাসনের তুলনায় জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে নগরীতে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাড়িওয়ালারা ইচ্ছামত ভাড়া বাড়াচ্ছে।

বিশিষ্ট কবি এমডি আবদুল হাকিম বলেন, করোনা ভাইরাসের কবলে সারা পৃথিবী এখন থমকে গেছে। এটা থামাতে আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব কিছু করা উচিত। আমার উপার্যকদের আমি ৩০% মওকুফ করে দিয়েছি।
সাংবাদিক কিরণ শর্মা বলেন, শহরে বসবাসকারী ভাড়াটিয়াদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ অর্থনীতির চাকা সচল থাকুক আর না থাকুক মাস শেষে ভাড়া পরিশোধ করতেই হবে। ভাড়াটিয়ার আয় থাকুক আর না থাকুক মাস শেষে ভাড়া দিতেই হবে। এমতাবস্থায় করোনার কারণে ব্যবসায়ী ও ভাড়াটিয়ারা নানা আতঙ্কে থাকলেও বাড়িওয়ালা ও দোকান মালিকদের চাপে দিশেহারা ভাড়াটিয়ারা।

সাংবাদিক মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতি বছরের ডিসেম্বর থেকে বাড়িভাড়া বাড়ানোর প্রবণতা থাকলেও এ বছর তা আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ২৭ বছর আগে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন করা হলেও সেটি কোনো বাড়ির মালিক মানছেন না। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নতুন বছর ছাড়াও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া বাড়ানো হয়, যা ভাড়াটিয়া জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।

সংগঠক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে আর্থিক সংকটে জীবন-যাপন করছেন ব্যবসায়ী ও নিন্ম আয়ের মানুষ। এরমধ্যে চাপে আছেন বাসা ভাড়া ও দোকান ভাড়া নিয়ে। মালিকদের প্রতিনিয়ত ভাড়া চাওয়া নিয়ে দিশেহারা ব্যবসায়ী ও নিন্ম আয়ের মানুষ।

সংগঠক কামাল উদ্দিন বলেন, মাসের শেষ এবং শুরুতে বাসা বদলের চিত্র নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বছরের শুরুতে তো কথাই নেই। ইচ্ছে না থাকলেও বাড়িওয়ালার বাড়তি ভাড়ার চাপে ছেড়ে দিতে হয় বাড়ি। খুঁজতে হয় নতুন গন্তব্য। কিন্তু ভাড়াটিয়াদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। নতুন যে বাড়িতে ওঠা হয় সেখানেও শুরু হয় একই বিড়ম্বনা। বাড়িভাড়ার এই নৈরাজ্য বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। সবকিছু একটি নিয়মের মধ্যে চললে সবাই উপকৃত হবেন। প্রশ্ন হচ্ছে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে?

সংগঠক কামাল হোসেন বলেন, সারাদেশে বাড়ি ভাড়া দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তদারকির কেউ নেই। ফলে আয়ের অধিকাংশই যাচ্ছে বাড়ি ভাড়ায়। বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। চসিক’র তালিকাও মানছে না কেউ। ভাড়াটিয়ার সঙ্গে চুক্তির নিয়ম ও দু’বছরের মধ্যে ভাড়া বাড়ানোর নিয়ম না থাকলেও হরহামেশাই তা হচ্ছে। ৮০ শতাংশ বাড়িওয়ালারা বাড়ি ভাড়ার আয় দিয়ে চলেন। কোনো কিছুর দাম বাড়লেই ভাড়া বাড়ান বাড়ির মালিকেরা।

বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ওসমান জাহাঙ্গির, কমল দাশ, মাস্টার এস এম কামরুল ইসলাম, ডা. মাহতাব হোসেন মাজেদ, মোজাফফর সিকদার, রোকন উদ্দিন, আমান উল্লাহ বাদশা, মনজু, মো. ইউসুফ, সুমন সেন, দেবাশীষ রাজা, মনিষা সেন, মো. রিয়াদ উল হক প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.