দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিলেন চসিক প্রশাসক সুজন

0

সিটি নিউজঃ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) নব নিযুক্ত নতুন প্রশাসক  খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, কর্মরত যারা দুর্নীতি করছেন তারা আজ থেকে তওবা করুন।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন কর্মকর্তাদের সাথে পরিচিয় পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি কিন্তু উদার না, যারা দুর্নীতি করছে তারা তওবা করে ফেলুন আজ থেকে। যারা দায়িত্বের সাথে বেঈমানি করবেন তাদের ছাড় দেবো না, ক্ষমা করবো না। না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেবো, তবুও অন্যায়ের সাথে আপোষ করবো না।

অপরাধ করাটা অপরাধ না, তা স্বীকার না করা অপরাধ মন্তব্য করে সুজন বলেন, এখানে যারা আছেন সবাই জ্ঞানী-গুণী মানুষ, আপনাদের জ্ঞান-প্রজ্ঞাকে কাজে লাগান। আজ সকালে আসার সময় নিউ মার্কেট জিপিওয়ের সামনে ময়লা দেখেছি সকাল নয়টার সময়। কেন এতো সময় পর্যন্ত ময়লা থাকবে। পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাবো, ভবিষ্যতে এ ময়লা আর দেখতে চাই না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নাছির ভাই অনেক কাজ করছে, সেটা সাকসেসফুল করতে হবে।

তিনি বলেন, যেদিন বৃষ্টি হবে সেদিন আমিও থাকবো, কোথায় পানি জমছে তা সরেজমিনে দেখবো। ঘরে বসে কাজ করার দিন শেষ। আমরা মহিউদ্দিন চৌধুরীর কর্মী, কিভাবে কাজ করতে হয় তা আমরা জানি।

চসিককে দলীয় কার্যালয় বা পারিবারিক করা হবে না জানিয়ে সুজন বলেন, বাড়ি থেকে বের হবার সময় আমার সাথে চসিকের গেইট পর্যন্ত আমার ছেলে এসেছে, তাকে ভিতরে ডুকতে দিই নাই। এখানে তার কোন কাজ নেই, ঘরে বসে তাদের সাথে লুড়ু খেলবো, কিন্তু এখানে আপনারা সব আমার।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একদিনের মিনিস্টার সিনেমায় দেখেছি, আমি ১৮০ দিনের প্রশাসক। প্রত্যেক দিন, মুহুর্তে কাজ করবো চ্যালেঞ্জ নিয়ে। জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার জন্য খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করার জন্য বিএসটিআইকে সাথে নিয়ে কাজ করবো। এক সপ্তাহ দশদিন গেলে বুঝবেন আমি কি করতে পারবো কি পারবো না সেটা।

সুজন বলেন, সবচেয়ে আশার কথা যিনি আমাকে দায়িত্ব দিয়ে এখানে পাঠিয়েছেন তিনিই এ শহরের দায়িত্ব নিয়েছেন। কাজেই উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নাই। আমাকে পুকুরে নামতে দেন, নামার পরে দেখবেন কিভাবে সাঁতরাবো সেটা।

গত ৫ বছর মেয়র নাছির অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন উল্লেখ করে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, মেয়াদ শেষ হলে সবাইকে দায়িত্ব ছাড়তে হবে। কিন্তু কর্মকর্তা যারা আছেন তারা থাকবেন সব সময়। আমাকে সহযোগিতা করবেন আশা করি। প্রশাসক বা মেয়র হচ্ছে শীর্ষ পদ। প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত প্রশাসক হিসেবে সবার কাছে আন্তরিক সহযোগিতা চাচ্ছি। চসিককে দলীয় কার্যালয় বানাবো না, রাজনীতি পার্টি অফিসে। এখানে নগরবাসীকে সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করবো।

তিনি বলেন, আমরা মিলেমিশে আমাদের শৈশব, কৈশোর এ শহরে কাটিয়েছি। পৃথিবীর কাছে এ শহরের গুরুত্ব অনেক, অনেকে আমার কাছে জানতে চান। চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা প্রধান সমস্যা, কিন্তু আমি এ শহরে জলাবদ্ধতা দেখি না, যা হয় সেটা জলজট। কিছুক্ষণ জমে থাকার পর কয়েক ঘন্টা পর তা নেমে যায়। এ জলজট নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশাল বাজেটের কাজ দিয়েছেন, যা সেনাবাহিনী করছে। আশা করি জলজট সমস্যা আগামী বছর থেকে অনেকটা সমাধান হবে।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে আসছি। আগামী ৫ বছর পর এ শহর সিঙ্গাপুরের চেয়ে উন্নত শহর হবে।

গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুজন বলেন, নাগরিক আন্দোলন করার সময় আপনাদের সহযোগিতা পেয়েছি। এখন আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। সমালোচনাকে আমি ভয় পাই না। তবে যৌক্তিক সমালোচনা আশা করবো। নগরের সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন, আমাকে ১৮০ দিন সময় দিয়েছে, এসময়টা কাজে লাগিয়ে কাজ করবো। মানুষ হিসেবে ভুল হতে পারে। তাই ভুলগুলো তুলে ধরবেন আপনারা। আল্লাহ পাক অনেক দিয়েছেন, মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। কেউ আমাকে সন্ত্রাস বা অমুক-সমুক বলে না। এটাই আমার তৃপ্তি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.