চসিকে জি কে শামীমের সিন্ডিকেট সক্রিয়-খোরশেদ আলম সুজন
জুবায়ের সিদ্দিকী,সিটি নিউজ : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সকাল থেকে রাত অবদি নগরবাসীর কল্যাণে পরিশ্রম করছেন খোরশেদ আলম সুজন। বছরের পর বছর সংস্কার কাজ চলা সড়কে গিয়ে তাগিদ দেওয়া থেকে শুরু করে দ্রুত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। সাবেক ছাত্রনেতা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজন রাজনীতিতে ছিলেন সব সময় সক্রিয়। ১৯৭০ সাল থেকে আজ অবদি রাজনীতির মাঠে অনেক চড়াই উৎরাই পার করেছেন।
গত শুক্রবার ২৮ আগষ্ট জুমার নামাজের পর কাট্টলীস্থ তার বাসভবনে গিয়ে দেখা গেল মানুষের নানা দূর্দশার কথা শুনছেন।
খোরশেদ আলম সুজন সিটি নিউজ বিডি ডট কমকে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাজনীতি করি মানুষের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যথাযথভাবে আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে করে যাব। কোন রাজনৈতিক চাপ আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে সুজন বলেন না, আমার উপর কোন রাজনৈতিক চাপ নেই।
নগরীর পোর্ট কানেকটিং রোড সম্পর্কে বলেন, কাজ চলছে, আশাকরি মানুষ সুফল পাবে। মানুষকে সেবা দেওয়ার আমার আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। প্রতিদিনের রুটিন ওয়ার্ক করা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ, মশক নিধন, সড়ক সংস্কারসহ জরুরী কাজ করার মতো অর্থও হাতে নেই কর্পোরেশনের। এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ৩৩৩ কোটি টাকা জরুরী বরাদ্ধ চেয়ে চিঠি দিয়েছি। আমি যে কয়দিন আছি কোনরকম দুর্নীতি অনিয়মকে প্রশ্রয় দেবনা। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে থাকবে আমার কঠোর অবস্থান।
সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সেই আস্থার শতভাগ প্রতিদান দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাব।অনিয়ম দুর্নীতি ও জনদুর্ভোগ দূর করতে আন্তরিকভাবে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাব। সুজন বলেন, সিটি কর্পোরেশনে জি কে শামীমের সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করায় কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল ক্ষেপেছে। তারা বলছে, আমার কাজ রুটিন ওয়ার্ক করা।এসব দেখার নয়। সাময়িক সময়ের জন্য দায়িত্ব হলেও দুর্নীতি-অনিয়ম সামনে দেখে নিরব থাকা এটা আল্লাহও ক্ষমা করবেন না। সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকলে কোন চক্রান্ত কাজ হবেনা।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে সুজন বলেন, এটা জলজট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যা সমাধানে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে যে কাজ চলমান এসব প্রকল্প শেষ হলে মানুষ তার সুফল পাবে। নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়ে সুজন বলেন, সাময়িক সময়ের জন্য আমি দায়িত্ব পেয়েছি। জনস্বার্থে লাগবে আমার সব চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কাজ করতে গেলে কোথাও কোন ভুল হতে পারে। কিন্তু মাঠের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি সব সময় যেভাবে কাজ করেছি সেভাবে জনস্বার্থে মানুষের সুখ দুঃখের অংশীদার হতে কাজ করে যাব। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে ভালোবাসেন বলে বিভিন্ন প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকার বরাদ্ধ দিয়েছেন। এর সুফল যেন ভালভাবে নগরবাসী পায় সে চেষ্টা আমার থাকবে। চসিকের ভেতরে বাহিরে গড়ে উঠা কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল নানাভাবে সক্রিয়। তারা চায়না দুর্নীতি বন্ধ হোক। সে জন্য বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। তবে আমি কোন অনিয়ম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবনা।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও সংগঠক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, নগরীতে সৌন্দর্য বর্ধনের নামে সবক’টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ফুটপাত বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেওয়া হয়েছে আইন-বহির্ভূতভাবে। ফুটপাতে দোকান, বাণিজ্যিক অ্যাকুরিয়াম তৈরী করে চলাচলের পথ সঙ্কুচিত করা হয়েছে। যাত্রী ছাউনিতে স্টল, বিপ্লব উদ্যানে দোকান, পার্কিং স্থানে দোকান, গণশৌচাগার ডিজিটাল স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। ষোলশহর বিপ্লব উদ্যান ছিল উন্মুক্ত সবুজ উদ্যান। তাকে রূপান্তর করা হয়েছে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে। সবুজ প্রকৃতিকে হত্যা করে গড়ে তোলা হয়েছে ৩৫ টি দোকান।
সুজন বলেন, সবুজায়নের নামে বাণিজ্যিককরন করে একটি মহল কোটি কোটি টাকা আয় করলেও চসিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটি করে দিয়েছি। এটা করা গেলে চসিকের বিপুল পরিমান আর্থিক সাশ্রয় হবে। এতে আমি মনে করি জনদূর্ভোগ লাগব হবে ও জনগণ উপকৃত হবে। সব কিছু মিলে যাদের আঁতে ঘা লাগছে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে নান চক্রান্তে ব্যাস্ত আছেন। তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় বলছে ভয় পাবার কিছু নেই।