জন-দূর্ভোগ লাঘবে নগরবাসীরও সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, নগরীতে যেখানে নাগরিক দুর্ভোগ ও বেসামাল অবস্থা দৃশ্যমান সেগুলোর যথাসম্ভব তাৎক্ষণিক সমাধানে চলমান এ্যাকশন বিরতিহীনভাবে চলবে। চসিক যেখানে সড়ক মেরামত, খানাখন্দ ভরাট, পরিচ্ছন্নতা ও সড়কবাতির কাজগুলো করেছে সেগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যায় সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জনবলের পাশাপাশি নগরবাসীরও সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি পরিদর্শনকালের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এখনো দেখছি বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে আছে। যে খানা-খন্দগুলো মেরামত করা হয়েছে সেগুলোও আগের অবস্থায় ফিরে গেছে এবং সড়কে ও ফুটপাতে বেঁধে দেয়া টাইমফ্রেম ও নিয়ম-নীতি কিছুই যথাযথভাবে মানছে না।

তিনি হকারদের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষের চলাচলের পথে কাঁটা হবেন না। মানুষের চলাচলের পথ সুগম করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি কোনভাবেই পূনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদের পক্ষে নই। তবে মানুষের চলাচলের পথে কোন প্রতিবন্ধকতা সহ্য করা হবে না।

তিনি আজ রবিবার মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড রোড, নিউমার্কেট মোড়, ষ্টেশনরোড, রেলওয়ে কভারস্টোর ফলমুন্ডি বাজার, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গায় হকার, ফুটপাত,বাজার, রাস্তা,অ লস পার্কিং সরেজমিনে পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, অনেক সড়কে নিষেধ সত্বেও হকাররা চৌকি বসিয়ে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী স্থাপনা ও ছাউনী বানিয়ে রেখেছে। রাস্তার যানবাহন ও পথচারী চলাচলের অংশেও তারা ব্যবসা-পাতির পসরা সাজিয়েছেন। ফুটপাতের জায়গায় চলাচলের পথে বড় বড় চৌকি বসিয়েছে- এ আচরণ সয্যের সীমানা অতিক্রম করেছে।

হকারদেরকে আরো স্পষ্ট করে বলেন রাস্তার উপর তাদের নির্মাণ করা স্থাপনা ও চকিগুলো সরিয়ে না ফেললে ওগুলোকে জব্দ করে নিলামে তোলা হবে। কারণ হকার নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমি যে ছাড়গুলো দিয়েছি তা কেউ যদি দুর্বলতা মনে করেন তাহলে তাদের জন্য কঠোর দণ্ড অপেক্ষা করছে।

ষ্টেশন রোডের নুপুর মার্কেটের সামনে দৃষ্টিকটু ও শহরের সৌন্দর্যহানিকর পাবলিক টয়লেটটির নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখা এবং চসিক প্রদত্ত নকশানুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা তা অফিসে এসে দেখানোর নির্দেশ দেন প্রশাসক।

তিনি ফলমুন্ডি বাজারের দোকান-পাটের মালিক ও মালামাল বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলতে পারবেন না। এ জন্য প্রতি দোকানকে ৪টি করে পলি ব্যাগ দেয়া হবে। এই ব্যাগে আবর্জনা ভর্তি করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে আসতে হবে। সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা গাড়িতে তুলে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ডাম্পারে নিয়ে ফেলবে।

প্রশাসক ফল বিক্রেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে নর্দমায় ময়লা ও পঁচা ফলের ভাগাড় দেখতে পেয়ে তা অপসারনের নির্দেশ দিয়ে বলেন, এহেন কাজের জন্য আগামীকাল থেকে চসিকের হেলথ্ ইন্সপেক্টর দ্বারা তদারকি ও জরিমানা করা হবে।

প্রশাসক মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড রোডে দায়িত্বরত ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে ওয়ার্কপ্লান অনুযায়ী কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আগামী সপ্তাহে কি কাজ করবেন এবং পরবর্তী ১৫ দিনে কি কাজ করবেন তার কর্মপরিকল্পনা পূর্বথেকে নির্ধারণ করে ডিসি ফুডের সাথে সমন্বয় পূর্বক কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, রাস্তার কোন অংশেই কোন ধরণের নির্মাণ সামগ্রী রাখা যাবে না। ফুটপাত বা নালা-নর্দমার ওপর স্ল্যাব বসিয়ে দোকান-পাটের আয়তন বাড়ানো চলবে না। যে সমস্ত এলাকা ধুলিময় হয়ে উঠেছে সে সমস্ত রাস্তার দু’পাশে দুই বেলা পানি ছিটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সদরঘাট রোডে অবস্থিত রাস্তার পাশে কাঁচা বাজার ও মাছ বাজারটিকে নিয়মনীতি অনুসরণের তাগাদা দিয়ে বলেন মূল রাস্তায় বাজার বসানো যাবে না।

এবিষয়ে বাজার সংশ্লিস্টদেরকে আগামীকাল প্রশাসকের সাথে সাক্ষাত করে এর দিক নির্দেশনা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স পরিদর্শনের সময় মার্কেটের মুখে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জিনিসপত্র রেখে জনসাধারনের চলাচলের পথ সংকুচিত করার দৃশ্য দেখে প্রশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগামীকালের মধ্যে হাটাচলার পথ থেকে সমস্ত পণ্য সরিয়ে ফেলতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন যে, এই মার্কেটটি একসময় সিডিএ’র গোডাউন ছিলো। পরে সাবেক মেয়র আলহাজ্ব এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে নির্মিত শপিং মলটিতে চলাফেরার রাস্তা,মাঝখানে পার্কিংপ্লেস ও আলো-বাতাস চলাচলের জন্য উম্মুক্ত জায়গা রাখলেও এখন সেখানে দোকান তৈরী করা হয়েছে। ফলে শপিং মলটি ঘিঞ্জি হয়ে উঠেছে। এসব কাঠামো ভেঙ্গে ফেলতে হবে।

পরিদর্শনকালে প্রশাসকের এমন যুগোপযোগি পদক্ষেপ ও মাঠে সরব থাকার বিষয়টিকে উপস্থিত জনসাধারণ সাধুবাদ জানান এবং এই কার্যক্রম চলমান রাখার অনুরোধ জানান। প্রশাসক তাঁর কর্মকাল মানুষের সেবা প্রদান ও দু:খ দুর্দশা লাঘবে উৎসর্গ করবেন বলে মত প্রকাশ করেন।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.