কাগজপত্র বিহীন পেঁয়াজসহ নিত্যভোগ্যপণ্যের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের দাবি ক্যাবের

0

সিটি নিউজঃ কোন কারন ছাড়াই কিছু দিন পর পর বৈধ আমদানির ছাড়পত্র, এলসি খোলার কাগজপত্র ছাড়া আমদানিকারকের কমিশন এজেন্ট, আড়তদার পরিচয়ে কিছু পেঁয়াজসহ ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী জনগনকে জিম্মি করে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্ঠি করছে অভিযোগ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

ক্যাবের নেতৃবৃন্দরা বলেন, দেশের চাহিদার সিংহভাগ দেশীয় উৎপাদন দিয়ে মেটানো সম্ভব হলেও ব্যবসায়ীরা আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রিতে স্বাচ্ছ্যন্দ। কারন পেপারলেস ব্যবসা হবার কারনে আমদানিকৃত পেয়াঁজ নিয়ে ক্রেতাদের সহজেই বোকা বানানো যায়। যার কারনে বাজারে দেশীয় পেয়াঁজ উদাও। ২০১৯ সালেও এ সমস্ত ব্যবসায়ীরা একই কায়দায় পেয়াঁজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিলো। এবারও তারা একই কায়দায় ক্রেতাদের পকেট কাটছে।

দীর্ঘ দু’সপ্তাহ ধরে এ অস্থিরতা চলমান হলে জেলা প্রশাসন ২/১দিন আগে খাতুনগঞ্জে অভিযান চালালে তাঁরা গতকাল বিক্রি বন্ধ রাখেন। কিন্তু যারা দেশে চোরাচালানী কায়দায় পেপারলেস ব্যবসার নামে জনগনকে জিম্মিকরে ব্যবসা করছে। প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলেই ধর্মঘটসহ নানা হুমকি প্রদান করছে। অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির পরিবর্তে জামাই আদরের কারনে তারা বার বার এ ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে।

তাই এ অবস্থায় জরুরী ভাবে আমদানিকারকের এজেন্ট পরিচয়ে অবৈধ পেপারলেস ব্যবসা বন্ধ, পেয়াজসহ নিত্যভোগ্য পণ্যের ব্যবসায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত, সরকারের বানিজ্য মন্ত্রণালয়, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধি, ক্যাব, গণমাধ্যম ও চেম্বার প্রতিনিধি সমন্বয়ে বাজার তদারকি জোরদার, জাতীয় ও স্থানীয় ভাবে ব্যবসায়ী ও

ভোক্তাপ্রতিনিধিদের সাথে জরুরী সভা করে সম্ভাব্য করনীয় নির্ধারন, বিকল্প উৎস থেকে এ সমস্ত ভোগ্যপণ্য আমদানি নিশ্চিত করা, বিকল্প বাজার হিসাবে টিসিবির মাধ্যমে ভোগ্য পণ্য বিক্রি জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

আজ মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস প্রমুখ উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাজারে অভিযান পরিচালনা করলেই ব্যবসায়ীরা বিক্রি বন্ধ করে ধর্মঘট করে প্রশাসনের সাথে দেনদরারে চলে যান। আর প্রশাসন বড় বড় ব্যবসায়ীদের চাপে এ সমস্ত অসাধু ব্যবসচায়ী চক্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহনে কালক্ষেপন করে থাকেন। আর চোরাচালানী কায়দায় বৈধ কাগজপত্র ছাড়া পণ্য বিক্রি, অর্থ লেন দেনের কারনে মানি লন্ডারিং এর মতো অপরাধ বাড়ছে এবং সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। আর এভাবে অবৈধ ব্যবসা চলমান থাকলে দেশে জঙ্গি ও রাজনৈতিক অস্থিরতাখাতে অর্থায়নবৃদ্দিসহ দেশের জন্য হুমকি হতে পারে। আর এ কারনে দেশের বৃহৎ শিল্প ও ব্যবসায়ী নেতারা প্রতিনিয়তই এই নিত্যভোগ্যপণ্যের বাজারে ঝুুঁকে পড়ছে।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ভারতে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্যে বৃস্টি ও বন্যা সংবাদে দেশে পেয়াঁজের মূল্য হঠাৎ করে ২ সপ্তায় দফায় বাড়লেও বানিজ্য মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন কোন প্রকার উদ্যোগ না নিয়ে নিরব থাকায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অযুহাতে ব্যবসায়ীরা বার বার তাৎক্ষনিক দাম বাড়ালেও বিদেশে দাম কমলে তার প্রতিফলন দেশে হয় না, তখন উল্টো সুর বেশী দামে কেনা, লোকসান দিয়ে বিক্রি করবো নাকি? যে কোন পণ্যের দাম বাড়লে বা কৃত্রিম সংকট তৈরী হলে ইতি পূর্বে বানিজ্য মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন ঐ খাতের ব্যবসায়ী ও ভোক্তা এবং প্রশাসনের লোকজনকে নিয়ে করনীয় বিষয়ে পরামর্শ সভা করে বিকল্প উৎস থেকে আমদানি করা, বাজার তদারকি জোরদার করে মজুতদারী ঠেকানো, টিসিবির মাধ্যমে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়ে অস্থিরতা বন্ধে উদ্যোগ নিয়ে থাকলেও ইদানিং ব্যবসায়ীদের উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়েছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন মানুষের জনদুর্ভোগ লাগবে কার্যকরী ও বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে ভ্রাম্যমান আদালত, সমন্বিত বাজার তদারকি কার্যক্রম একটি উদ্ভাবনী মডেল চলমান ছিলো। যেখানে জেলা-উপজেলা প্রশাসন সফল ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করলেও বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের মতো অতিজনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে প্রশাসনের দৃষ্ঠি না থাকায় তাঁরা সাধারণ জনগনের দুর্ভোগ লাগবে কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে সরকারের অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগের সফল তৃণমূল মানষ উপভোগ করতে পারছে না। অন্যদিকে যে ভাবে পারে লুটপাট করছে, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন নিরব দর্শক। প্রশাসনের নিরবতায় সর্বত্রই মনে হচ্ছে লুটপাটের রাজত্ব। বাজার নিয়ন্ত্রণে বানিজ্য মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের নানা সভার সিদ্ধান্ত শুনা গেলেও তার কার্যকারিতা কতটুকু তা নিরপেক্ষ তদন্ত অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.