জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবন একটি সংগ্রামী জীবনের উপেখ্যানঃ তথ্যমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন। জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবন একটি সংগ্রামী জীবনের উপেখ্যান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন। সেদিন লক্ষ মানুষের সমাবেশে জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি মা-বাবা-ভাই-ভাবীসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে তাদেরকে খুঁজে পেয়েছেন। এই প্রায় ৪০ বছরের পথ চলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের পাশে থেকেছেন সংকটে, সংগ্রামে, উন্নয়নে, অর্জনে একটিই নাম হয়ে।

আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে জাতীয় প্রেসক্লাব আয়োজিত ‘নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা: বিশ্ব নেতৃত্বে বাংলাদেশ’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ। সেমিনারের প্রতিপাদ্য বিষয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির মূল প্রবন্ধের ওপর আলোকপাত করেন নিউজ২৪ টিভি চ্যানেলের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী।

শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু তিনি বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে কখনো বিচলিত হননি, কখনো দ্বিধান্বিত হননি বরং আরো প্রত্যয়ী হয়ে, আরো দীপ্ত হয়ে বাংলাদেশের মানুষকে তিনি এগিয়ে নিয়ে গেছেন’ বলেন হাছান মাহমুদ। জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি অতুলনীয় গুণ হচ্ছে সমস্ত সংকটের মধ্যে প্রচন্ড ঝঞ্ঝার মধ্যেও তিনি অবিচল থেকে সংকট মোকাবিলা করতে পারেন আর সে কারণেই তিনি অনন্য, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের শেকলবন্দি গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছে, মার্শাল ডেমোক্রেসি থেকে আমরা পূর্ণ গণতন্ত্র পেয়েছি, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার জাদুকরী নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।

এসময় নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজকে পৃথিবীর সামনে উদাহরণ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকার পর্ষদে নারীর জন্য ৩৩ শতাংশ আসন নিশ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশে কেউ কখনো ভাবেনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার বা পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলর বা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান হবে নারী। জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে স্থানীয় সরকার পরিষদ নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। এখন শুধু এসপি নয়, মেজর জেনারেল থেকে শুরু করে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি, সচিব থেকে শুরু করে এমন কোনো পদ নেই যেটি নারী অলংকৃত করেনি।

যখন কোনো বিশ্ব সভায় জননেত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত হন, তখন তিনিই মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুু হন, বিশ্বসভা শেখ হাসিনার উপস্থিতির কারণে আলোকিত হয়, উল্লেখ করেন ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ শুধুমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিই নন, শুধুমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, কর্মদক্ষতা, দুরদৃষ্টি এবং সাফল্যের কারণে তিনি আজ বিশ্বনেত্রীর আসনে আসীন। তিনি চ্যাম্পিয়ান অব দ্যা আর্থ, মাদার অব হিউমেনিটি। জননেত্রী শেখ হাসিনা তার গুণাবলী দিয়ে এই সম্মান অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিনে আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে নেতৃত্ব দিতে পারেন।’

মির্জা ফখরুলকে অতীতের দিকে তাকানোর আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক বক্তব্যের জবাবে বলেন, ‘সিলেটে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর মির্জা ফখরুল সাহেব যেভাবে ঢালাও কথা বলেছেন, সেটিকে রাজনীতিককরণের চেষ্টা করেছেন, সে প্রেক্ষিতে তাকে অনুরোধ জানাবো একটু ২০০১ সালের দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার অপরাধে যেভাবে শেফালীকে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল, ৮ বছরের শিশুকে যেভাবে গণধর্ষনের শিকার হতে হয়েছিল, সেটি মির্জা ফখরুল সাহেবের নিশ্চয় মনে আছে। তিশা, ফাহিমা, মহিমা, অজুফা, কবিরাণী, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুুজাসহ শতশত নারী সেদিন গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল। আওয়ামী লীগে ভোট দেয়ার অপরাধে একটি গ্রাম অবরুদ্ধ করে সেখানে শতশত নারীকে নির্যাতন করা হয়েছিল,গণধর্ষণ করা হয়েছিল। বিএনপি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। বরং তাদেরকে বাহবা দেয়া হয়েছিল।’

‘আমাদের দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে কেউ যদি এ ধরণের অপরাধ করে তাদেরকে সাথে সাথে সেখান থেকে বহিস্কার করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে সরকার এবংআইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ভবিষ্যতেও করা হবে, এখনও কোনো ঘটনা ঘটলে সিলেটের ঘটনাসহ সর্বক্ষেত্রেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট করে বলেছেন, অপরাধী যেই হোক, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা হবে। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকও বলেছেন, আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যেই অপরাধী হোক, তার শাস্তি বিধান করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.