খোন্দকার মোজাম্মেল হক নীতি ও আদর্শের প্রতীক

0

জুবায়ের সিদ্দিকী : খোন্দকার মোজাম্মেল হক আমার শ্রদ্ধাভাজন প্রধান সম্পাদক। গত ২৯ শে জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন পরপারে। না, আমাদের কিছুই বলে যেতে পারেননি। ৩০ বছর চট্টগ্রাম অফিসে আজকের সুর্যোদয়ে কর্মরত থাকলেও তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলাম। কোন সময়ে আমার কোন কাজের জন্য তাঁকে জবাবদিহিতা করতে হয়নি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিষ্ট ছিলেন। প্রত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হয়েও সহকর্মীদের সঙ্গে ছিল বন্ধুত্বের সম্পর্ক।

আদর্শ ও নীতির ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অটল ও বলিষ্ট। একজন নির্ভীক কলম সৈনিক ছিলেন। কর্মক্ষেত্রে তার বিচক্ষনতা ও অভিজ্ঞতা ছিল অত্যন্ত সূক্ষ্ম  ও প্রখর। দুরদর্শিতায় ছিল তাঁর ভাবনা চিন্তা। নিজের আমৃত্ব আঁকড়ে ধরে রাখা নিজের দক্ষতা, সততা ও আপোষহীন মনোভাবের জন্য বিভিন্ন সময় নিস্পেষণ ও হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে। আমার রিপোর্টে চট্টগ্রাম আদালতে পর পর দুইবার মামলা হয়। আমার সাথে তিনিও আসামী। চট্টগ্রাম এলেন আদালতের কাটগড়ায় দাঁড়ালেন।

মামলা শেষ হল। মামলা শেষে বললাম, মোজাম্মেল ভাই আমার জন্য কষ্ট হল আপনার। তিনি বললেন, না, না। এভাবে মামলা হতে পারে। ভয় পাবেন না। আপনি কোন অন্যায় করেননি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা সাংবাদিকের কর্তব্য। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর ও নৈতিকতা মুল্যবোধের প্রতি অবিচল থাকা খোন্দকার মোজাম্মেল হক একজন সাহসী সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের আদর্শ ছিলেন। আজ মনে হয়, এই তো ফোন করে বলবেন,’ আপনি কোথায়? নিউজ কি পাঠালেন? পত্রিকা চলতেছে তো? এমন একজন আদর্শবান সাংবাদিক সমাজে বিরল।

অনেকবার বিদেশে তাঁরসাথে সফরসঙ্গী হয়েছি। একটানা ১৪/১৫ দিন ছিলাম। দুজনে এমনভাবে চলাফেরা করতাম কেউ অনুধাবন করতে পারত না, কে মালিক, কে ষ্টাফ। মোজাম্মেল ভাইয়ের সাথে ৩০ বছরের অনেক স্মৃতি। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাতে বিজয়মঞ্চে অতিথি হয়ে এসে উঠলেন নগরীর সার্কিট হাউজে। সকালে তার কক্ষে গেলে জিজ্ঞেস করলেন। অভিজাত এসব কক্ষের ভাড়া কত? বললাম ২ টাকা। তিনি অবাক হলেন। এ ভাড়াতো নগন্য। ভাড়া আরও বাড়ানো উচিত। কোন অহংকার ছিল না। আমার শ্রদ্ধাভাজন সম্পাদক খোন্দকার মোজাম্মেল হকের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। চলবে…।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.