নোয়াখালীসহ সারাদেশে অব্যাহত নারী-শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  নোয়াখালী বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দুর্বত্তদের পাশবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি ও সিলেট এম সি কলেজ সহ খাগড়াছড়ির ধর্ষকদের দ্রুত বিচারের দাবিতে গতকাল ৫ অক্টোবর ২০২০ চেরাগী মোড়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোট চট্টগ্রাম জেলার সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সংহতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি এ্যানি সেন, পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নগরের সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষী অবরোধ।

বক্তব্য রাখেন- ডা.মাহফুজুর রহমান চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র; মাঈদুল ইসলাম শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়); মাসুদ রানা কেন্দ্রিয় সভাপতি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট; রায়হান উদ্দিন সভাপতি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখা; দীপা মজুমদার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট,সহ সভাপতি,চট্টগ্রাম নগর, সিতারা শামীম সিপিবি নারী সেল,চট্টগ্রাম; শীলা দাশগুপ্তা সাধারন সম্পাদক, উদীচী,চট্টগ্রাম; আসমা আকতার ,নারী মুক্তি কেন্দ্র; ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা কেন্দ্রীয় ইনচার্জ,চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র; রেশমী মার্মা হিল উইমেন্স ফেডারেশন; রোনাল চাকমা পিসিপি; নাদিয়া নূর প্রাপ্তি প্রীতিলতা বিগ্রেড; জাহেদুল ইসলাম ,অগ্নিবীণা পাঠাগার।

এছাড়াও সমাবেশে সংহতি জ্ঞাপন করেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জি এইচ হাবিব, বাকবিশিস’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর, সিপিবি জেলা সাধারন সম্পাদক অশোক সাহা, বাসদের মহিন উদ্দিন , বাসদ মার্কসবাদীর শফি উদ্দিন কবির আবিদ।

সমাবেশ নেতৃবৃন্দ বলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে রাতের বেলা ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে অপবাদ দিয়ে তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে একদল যুবক। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বড় খালপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তারা নির্যাতন করবার সময়ের ভিডিওচিত্র ধারণ করে যা আজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ায় ঘটনাটি সবার সামনে প্রকাশিত হয়। অভিযুক্তরা সরকারিদল আওয়ামী লীগ দলের সাথে যুক্ত। বর্বর ঘটনাটির ভিডিওচিত্র দেখে আজ হয়তো অনেকেই ঘুমোতে পারবেন না। এছাড়াও বছরের পর বছর ধরে আদিবাসী নারীদের উপর রাষ্ট্রীয় মদদে চলছে নির্যাতন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে কেন এমন হচ্ছে প্রতিনিয়ত? কেন একের পর এক গণধর্ষণের শিকার হচ্ছে মেয়েরা? কেন একপাল জানোয়ারে পরিণত হচ্ছে আমাদের ছেলেরা? কোন সংস্কৃতি ওদের ধর্ষক হিসেবে তৈরি করছে?

প্রশ্নগুলো সহজ না হলেও উত্তরটা পরিষ্কার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার তার বিভিন্ন স্তরের সংগঠিত শক্তিপ্রয়োগ করে দেশকে আজ এই বর্বরতার সীমানায় এনে দাঁড় করিয়েছে। মানুষকে অমানুষে পরিণত করেছে। কোনো ঘটনার বিচার না করে তৈরি করেছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি, যার ছায়ায় পার পেয়ে যাচ্ছে তাদের সাথে যুক্ত সমস্ত অপরাধী। এই দেশে এখন কোনো অন্যায়ের বিচার তো হয়ই না, বরং রাষ্ট্র নিজেই তাদের সহয়তা করে। ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য এমন হীন কাজ নেই যা তারা আজ করছে না। দেশে ন্যূনতম মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। মাদক, পর্নোগ্রাফি ও যাবতীয় নোংরামিকে চারিদিক থেকে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। নারী-পুরুষের সমমর্যাদাভিত্তিক চিন্তাধারা সমাজ থেকে বিলুপ্ত করা হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, ঘরে ঘরে আমাদের মেয়েরা, আমাদের মায়েরা আজ অসহায়, অনিরাপদ। একটার পর একটা ঘটনা আমাদের যেন পায়ের নিচের মাটি সরিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এই ভোগসর্বস্ব পুঁজিবাদী সমাজে এটাই অনিবার্য। যতদিন না এই ‘অমানুষ’ তৈরির সমাজ আমরা ভাঙতে পারব-এই বর্বরতার শেষ হবে না। তাই আজ প্রয়োজন গণমানুষের সংঘবদ্ধ আন্দোলন। এই পিশাচসম সমাজব্যবস্থাকে ভেঙে গুড়িয়ে দিন। এই ক্রান্তিকালে মানুষের কাছে আমরা সেই লড়াইয়ের আহ্বান জানাচ্ছি।প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.