জলে স্থলে রোহিঙ্গা ডাকাতঃ আতঙ্কে বাংলাদেশি জেলেরা

0

গোলাম শরীফ টিটু, সিটি নিউজঃ রোহিঙ্গা ডাকাতদের কবল থেকে বাঁধা অবস্থায় বাংলাদেশী ৭ জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এ ঘটনায় ৫ অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা ডাকাতকে আটক করা হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর ভোর ৩ ঘটিকায় টেকনাফ থানা থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল দুরে সমুদ্রে তাদের আটক করা হয়।

কোস্টগার্ড বাহিনী চট্টগ্রাম পুর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লে.কমান্ডার বিএন এম. হায়াত ইবনে সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় ডাকাতদের নৌকা তল্লাশী করে ২টি দেশীয় একনলা বন্ধুক, ৮ রাউন্ড কার্তুজ, ১০টি বিভিন্ন ধরনের বার্মিজ ধারালো অস্ত্র এবং ১টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ করা হয়। আটককৃত ডাকাত, উদ্ধারকৃত জেলে ও জব্দকৃত অস্ত্র টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কোস্টগার্ড বলছেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এর আওতাভুক্ত এলাকা সমুহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, জননিরাপত্তা রক্ষা ও দস্যুতা-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে কোস্টগার্ড। রোহিঙ্গা ডাকাতদের ভয়ে জেলেরা সমুদ্রে মৎস্য শিকারে যেতে পারছেন না। এরা শুধু কক্সবাজার ও তৎসলগ্ন সমুদ্র এলাকা নয়। পাহাড়ে গড়ে তুলেছে আস্তানা। শুধু বাংলাদেশিদের জন্য আতঙ্কই নয়, রোহিঙ্গারা প্রতিপক্ষ রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে। চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, হত্যা, ডাকাতি, ইয়াবা বাণিজ্যসহ বহু অপরাধে লিপ্ত তারা।

এক সপ্তাহের মধ্যে ৮ জন রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পের মধ্যে হত্যার ঘটনায় আবারও রোহিঙ্গাদের নিয়ে উৎকন্ঠা তৈরী হয়েছে। শরনার্থী ক্যাম্পগুলোতে নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সরকার অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করেছে।

এর আগে বিগত ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ক্যাম্পে খুন হয়েছে ৬১ জন। ধর্ষনের ঘটনা ৩৫টি ও অপহরনের ঘটনা ১৬টি। তিন বছরে ১২ ধরনের অপরাধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৭৩১টি। অপরাধের দায়ে জেলে আছে ৫৬০ জন পুরুষ ও ৪৮ নারী। শুধু বাংলাদেশীদের আক্রান্ত করে ক্ষান্ত হচ্ছে না রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের হত্যা করছে। নেপথ্যে আছে শরনার্থী ক্যাম্পের কাঠামো, আবাস বিন্যাস, ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও অবৈধ মাদক ব্যবসা। টেকনাফ ও উখিয়ায় ৩৪টি ক্যাম্পে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। নিজ দেশে ফেরার আগ্রহে দিন গুনলেও প্রতীক্ষার শেষ হচ্ছে না।

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের এ সংকটের দায়ী হচ্ছে মিয়ানমার। সেখানকার সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যচার ও নিষ্টুর নির্যাতনে প্রাণের ভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা। মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিলেও তারা নিজেদের মধ্যে হত্যাকান্ডের মত ঘটনা ঘটাচ্ছে।

গত ৬ অক্টোবর শরনার্থী ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এবং গোলাগুলিতে ৪জন নিহত হয়। এর আগে ২ অক্টোবর এবং ৩ অক্টোবর বিবদমান দুই রোহিঙ্গা গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা ঘটছে। রয়েছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসার অভিযোগ। এসব ঘটনায় মিয়ানমারের সামরিক গোয়েন্দাদের সহায়তা ও অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.