আওয়ামী লীগের রাঘব বোয়াল ও মাইম্যান
জুবায়ের সিদ্দিকী/গোলাম শরীফ টিটু : আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলা এবং কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির জট এখনো খুলেনি। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রস্তাবিত কমিটির যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল, সেই কমিটির তালিকা যাচাই বাচাই করার জন্য একটি করে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, পছন্দের লোকজনদের দিয়ে পকেট কমিটি বানানো যাবে না। মাইম্যান রাখা যাবে না।
এমনকি তিনি বলেছেন, বিতর্কিত বা অনুপ্রবেশকারীকে জেলা কমিটিতে রাখা যাবে না। তখন ৮টি কমিটি করে দিয়েছিলেন। এই কমিটিগুলো এখন যাচাই বাচাই করছে। আওয়ামী লীগের একাধিক সুত্র জানিয়েছেন, জেলা কমিটিতে মাইম্যান শুধু জেলার নেতৃবৃন্দ নন, কেন্দ্রীয় নেতৃবর্গও তাদের নিজেদের পছন্দের ও অনুগত লোকজনদের কমিটিতে রাখার চেষ্টা করছে।
এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, শিয়ালের কাছে মুরগী রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারাও মাইম্যান সৃষ্টি করেন। আওয়ামী লীগের জেলা কমিটিগুলো গঠিত হয় সম্মেলনের মাধ্যমে। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের নাম ঘোষনা করা হয়। এরপর সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করার। তখনই সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকরা তাদের পছন্দের লোকদের নিয়ে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করেন।
যার ফলে, তৃনমুলের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাকর্মীরা বাদ পড়ে যায়। এ সময় অনুসারীরা অনুপ্রবেশকারী, সুযোগসন্ধানী, চামচা-চাটুকাররাই প্রাধান্য পায়। এ বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উম্মা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যোগ্যদের নয়, পছন্দের লোকদের দিয়েই জেলা কমিটিগুলোতে পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। যে কারনে শুধু জেলা কমিটিতেই নয়, উপ-কমিটিগুলোতে দেখা গেছে, প্রকৃত যোগ্য লোকদের বদলে অনুগত ও নিজস্ব লোকজনকে কমিটিতে রাখার প্রবনতা তৈরী হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মুলশক্তি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার অনুগত যারা সত্যিকারের ত্যাগী। দু:সময়ে দলের জন্য কাজ করেননি তাদের যদি কমিটিতে রাখা না হয় তাহলে অনুগতদের নিয়ে কমিটি গঠন হবে না।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যদি নির্মোহভাবে কাজ না করে তাহলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে মাইম্যান বন্ধ হবে না বলে মনে করেন তৃনমুলের নেতাকর্মীরা। জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদকের অনেকে এখন চামচা বাহিনী নিয়ে চলাফেরা করে।
নিজেদের মাসলম্যান বা চাটুকার ছাড়া ত্যাগীদের চেনেননা। আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড়ে কমিশন বানিজ্য ও ব্যবসা করে দেশে বিদেশে টাকা পাচার ও সম্পদ গড়ার কাজ করছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন এসব রাঘব বোয়ালদের ঠিকানা বা চেনেন না। নাকি এদের ধরা ছোঁয়া যাবে না।