চট্টগ্রামে এপিক হেলথ কেয়ারে ভূয়া রিপোর্ট !

রোগীর গলব্লাডারে পাথর ?

0

গোলাম সরওয়ার,সিটি নিউজ : চট্টগ্রাম নগরে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রোগীকে সেবা দেয়ার নামে ব্যাঙের ছাতার মত অসংখ্য বেসরকারী হাসপাতাল, ডায়গনস্টিক সেন্টার, হেলথ কেয়ার ও ক্লিনিক গড়ে তুলেছে। নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান খুলে বসলেও কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি ঐসব হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তাররাও রোগীদের সাথে চিকিৎসার বিষয়ে সঠিক কোন মতামত দিতে নারাজ।

সম্প্রতি আন্দরকিল্লা এপিক হেলথ কেয়ারের বিরুদ্ধে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় ভূয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মোমিন রোডের বাসিন্দা মিসেস শাহানা আক্তার (৫১) নামে এক মহিলার আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করানোর পর তার গলব্লাডারে পাথর রয়েছে উল্লেখ করে ভূয়া রিপোর্ট দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন।

শাহানা আক্তার সিটি নিউজকে জানান,২০১৮ সালের মে মাসে রাজধানী ঢাকা স্কয়ার হাপসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে তার গলব্লাডারসহ থলিতে জমা পাথর অপসারণ করা হয়েছিলো তাহলে গলব্লাডারে পাথর কিভাবে এলো।এসব ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে সাধারণ রোগীদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্ঠি করছে আন্দরকিল্লা এপিক হেলথ কেয়ার।

তিনি আরো জানান,এপিকের এই রিপোর্ট হাতে পেয়ে আমি ও আমার পরিবার চিন্তিত হয়ে পড়ি। গত সোমবার ১২ অক্টোবর পেঠ ও বুকে ব্যাথা অনুভব করলে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিমলেন্দু চন্দ (বিমল) এর চেম্বারে পরমর্শের জন্য দেখা করি।ডাক্তার বিভিন্ন টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন।পরে ১৩ অক্টোবর আন্দরকিল্লা এপিক হেলথ কেয়ারে টেস্টগুলো করি।রিপোর্টে গলব্লাডারে পাথর রয়েছে উল্লেখ করা হয়। ওই টেস্ট রিপোর্টগুলো দেখানোর পর আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল হয়েছে মনে করেন বলে ডাক্তার বিমল তাকে জানান।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিমলেন্দু চন্দ (বিমল) মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কখনও নামের ভুলে এক রোগীর রিপোর্ট অন্য রোগীর হাতে যাওয়ায় ঘটছে বিপত্তি। কখনও আবার রিপোর্টে তথ্যের গন্ডগোলে মানসিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছেন রোগীর পরিজনেরা। এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের গাফিলতির ক্ষেত্রে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলো সেবার নামে বাণিজ্য করছে অনেক অভিযোগ রয়েছে রোগীদের।

এ বিষয়ে আন্দরকিল্লা শাখার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান বলেন,রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। তবে আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট যিনি দেখেছেন এবং যে ডাক্তারের স্বাক্ষর রয়েছে তার সাথে আলোচনা করতে হবে।

ডাক্তার ফারহানা তাবাচ্ছুমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,রিপোর্টটি আমাকে দেখতে হবে অনেক সময় রিপোর্ট ভুল হয়,ভুলবশতভাবে একজন রোগীর রিপোর্ট আরেকজনের কাছে চলে যায়।অনেক সময় কম্পিউটারে অটো সেট করা থাকলে কিছু এডিট করে সেগুলো প্রিন্ট করা হয়।আগামী বুধবার রোগীকে সবগুলো রিপোর্ট নিয়ে তার চেম্বারে দেখা করার জন্য অনুরোধ জানান।বিষয়টি তিনি গুরুত্বসহকারে দেখবেন।

মিসেস শাহানা আক্তার বলেন, অসুস্থ হলে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। সামান্য ভুলের কারণে একটি পরিবার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।আমার পরিবার এই বিষয় নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিল।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি সিটি নিউজকে বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টটি আমাকে দেখতে হবে কোথায় সমস্যা রয়েছে।এরপর সঠিক বিষয়টি বলতে পারবো।পরে রোগীর নিকট হতে অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তাদের বিরুদ্ধে।

জি.এস / সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.