চট্টগ্রামবাসীর জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে সহসা মুক্তি মিলছে না

0

গোলাম শরীফ টিটু,সিটি নিউজ : চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতার অভিশাপ আপাতত দুর হচ্ছে না। ভুগতে হবে আরও দুই বছর। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে হাতে নেয়া প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার দুটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। নির্ধারিত মেয়াদে দুই প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় নতুন করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ভৌত অবকাঠামোগত কাজ ৫২ শতাংশ ও অপরটির ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

করোনাকালীন সংকট, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না পাওয়া সসহ নানা কারনে এ দুটি প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে এগুচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে ২০২২ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। প্রকল্প দুটি সম্পন্ন হলে নগরীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হবে আশা করা যায়। তার আগ পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিয়েই জীবন কাটাতে হবে নগরবাসীকে।

চলতি বছর বর্ষায় নগরীর আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, শান্তিবাগ, হালিশহর হাউজিং এস্টেট, গোসাইলডাঙ্গা, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, জিইসি মোড়, চকবাজার ও বৃহত্তর পাইকারী বাজার চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জের মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে ভুগেছে। আগ্রাবাদ চসিক নির্বাচনের সময় মেয়র প্রার্থীরা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইতিপুর্বে সবাই ব্যর্থ হয়েছে। প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ১৭ বছর, এর পর বিএনপি থেকে মনজুর আলম ৫ বছর এরপর আওয়ামী লীগ সরকারে থাকা অবস্থায় আ.জ.ম নাছির উদ্দিন ৫ বছর পার করেন।

২৭ বছরে চাক্তাই খাল খনন, তলা পাকাকরন প্রকল্প সহ জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত নানা প্রকল্পে শত শত কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যার কোন সুফল পায়নি মানুষ। তবে ২০১৭ সালে গ্রহন করা তিন বছর মেয়াদী একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এটি জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃহত্তর প্রকল্প। ওই বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে প্রকল্পটি চলতি বছর জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ধীরগতির কারনে তা হয়নি। এদিকে কাজ শেষ না হওয়ায় আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ও এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর।

প্রকল্পের অধীনে ৫টি খালে রেগুলেটর, খালের পাড়ে ১৭৬ কি:মি: রিটেইনিং ওয়াল, ৮৬ কি:মি: রাস্তা নির্মান, ৪২টি সিপ্ট ট্র্যাপ, দুটি পুকুর নির্মান সহ বিভিন্ন কাজ রয়েছে। চউকের প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, তিন বছরে ভৌত অবকাঠামোগত কাজ গত আগষ্ট পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে ৫২ শতাংশ। সুত্র মতে, রেগুলেটরের কাজ ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। করোনার কারনে ৬ মাস কাজ হয়নি বলে জানান তারা।

এ ছাড়া প্রকল্পের অর্থ ছাড়ও চাহিদা অনুযায়ী হচ্ছে না। ২ হাজার কোটি টাকার ভুমি অধিগ্রহন বাদ দিলে অবকাঠামোগত ব্যয় দাড়ায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যা প্রায় ৩৮ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়দা বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্নফুলী নদীর তীর হয়ে কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক ও বাঁধ নির্মানের আরেকটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন করছে চউক। এ প্রকল্পের অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.