চট্টগ্রামে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা
সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃতের হার কমলেও সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন নগরবাসী। বিশেষ করে জনসচেতনতার অভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৭২৬ জন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছেন নতুন করে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে সরকারীভাবে প্রচার প্রচারণা খুব একটা চোখে পড়ছেনা। মাস্ক পরা নিয়ে ঢাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলেও চট্টগ্রামে কোন পদক্ষেপ নেই। জনসাধারণও সচেতনভাবে চলাফেরা করছে না। জনসমাগম, যানবহনে নেই করোনা সচেতনতা। সেই আগের মতোই জনসমাগম ও যানবাহন ব্যবহার চলছে। অধিকাংশ মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার কোন বালাই নেই।
গতকাল রবিবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা না গেলেও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮১ জন। যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় তিন গুণ। গত শনিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৩ জন। এনিয়ে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ২২ হাজার ৭২৬ জন। এটি চট্টগ্রামে গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এর মধ্যে ১৬৯ জনই নগরের বাসিন্দা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আশংকা নিয়ে সরকারের তোড়জোড়ের মধ্যেই চট্টগ্রামে হঠাৎ করে করোনা রোগী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলছে।
আজ সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাব ও চট্টগ্রামের ৮টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১১৪টি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ২৮৮টি, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৪৪৬টি এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৬২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এতে চবি ল্যাবে ১৮ জন, বিআইটিআইডিতে ১৪ জন, চমেক ল্যাবে ৯৩ জন এবং সিভাসু ল্যাবে ১১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এছাড়া বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬ জন, শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে সবগুলো নমুনাই পজেটিভ আসে।
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ৮টি নমুনা পরীক্ষা করে কারো শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামে গতকাল রবিবার পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত ২২ হাজার ৭২৬ জন। এদের মধ্যে নগরের রোগী ১৬ হাজার ৮৭৯ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা পাঁচ হাজার ৮৪৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৩১০ জন, যাদের ২১৬ জন নগরের এবং ৯৪ জন উপজেলার। অন্যদিকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ১৮১ জন।