দু’বছরের মধ্যে বদলে যাবে চট্টগ্রামের তরুণদের ভাগ্যঃ পলক

0

সিটি নিউজঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ নির্মিত হলে মাত্র দু’বছরের মধ্যে বদলে যাবে চট্টগ্রামের তরুণদের ভাগ্য। এই আইটি পার্কটি হবে চট্টগ্রামের আগামী প্রজস্মের স্বপ্ন পূরণের ঠিকানা। তবে সেখানে সুযোগ থাকবে ৪০ কিংবা ৬০ বছরের বয়স্কদের জন্যও। এই আইটি পার্ক শুধু মাত্র লোহা-ইট-পাথরের কোন অবকাঠামো হবে না।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) চট্টগ্রামে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে গিয়ে এমনটাই জানালেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি জানান, ৬তলা ভবনের এই পার্কটি গড়ে তোলা হবে ৩৬ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গায়। যেখানে প্রতিবছর প্রশিক্ষণ পাবেন ১ হাজারের বেশি প্রশিক্ষণার্থী। তাছাড়া স্টার্টারদের জন্য থাকবে একটা আলাদা ফ্লোর। যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন তাদের সরবারাহ করা হবে ২৪ ঘণ্টার নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ-হাই স্পিড ইন্টারনেট। সেখানে ২৪ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সাররা দেশ বিদেশেরে অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলোতে কাজ করতে পারবেন।

এসবের জন্য ফ্রিল্যান্সারদের কোন অর্থ খরচ হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তার জন্য তারা একটি ল্যাপটপ নিয়ে আসবে। এখানে এসে তারা শুধু প্লাগ ইন করবে। আর মার্কেট প্লেসে কাজ করবে। তাদের কোন পয়সা খরচ করতে হবে না।

মূলতো সার্টিফিকেট নির্ভর চিন্তা ভাবনা থেকে বেরিয়ে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এমন উদ্যোগ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে থাকবে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, থ্রি ডি এডিটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটোমাইজেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং ই-কমার্স, ওয়েবসাইট ডিজাইনসহ বিভিন্ন কোর্স। যা এসএসসি ও এইচএসসি’র পাশের শিক্ষার্থীরা পাবেন ৬ মাসের সার্টিফিকেট কোর্স কিংবা এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স।

বয়স্কদের জন্যও এই সুযোগ থাকবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৮ বছরের জায়গায় যদি ৬০ কিংবা ৪০ বছর বয়সী কেউ হলেও তাদের জন্যও থাকবে একই সুযোগ।’

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ৮টি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দেশের ৮টি স্থানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, নাটোর, কুমিল্লা, নেত্রকোণা, বরিশাল ও মাগুরায় স্থাপন করা হচ্ছে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৫৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নাই। সরকার এজন্যই একটি প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। আমরা দৈনন্দিন অনেক কাজই এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করতে পারছি। আমাদের রপ্তানি খাতেও ডিজিটাল ডিভাইস অবদান রাখতে পারে। এই ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে ট্রেনিং নিয়ে এখানকার তরুণরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন থেকে আর চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না, নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকরি দেবে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ থেকে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম দেশের সেরা ডিজিটাল সিটি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আমারা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, চট্টগ্রামে এতোদিন যে গতানুগতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে এসেছে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের আইটিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতেও এখন চট্টগ্রামবাসীর অবদান রাখার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো। এই আইটি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে আইটি/আইটিইএস খাতে চট্টগ্রামের যুব সমাজের আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ এনডিসি, ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন’ প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মোস্তফা কামাল, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.