বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যমুনা নদীর ওপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। আজ থেকে সেতুর মূল নির্মাণকাজ শুরু হবে।

আজ রবিবার (২৯ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলাদাভাবে আরেকটি সেতু নির্মাণ, এটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনারা জানেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড। অর্থাৎ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্বের মধ্যে সেতুবন্ধ করতে গেলে আমাদের ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে সেতু সংযোগ করতে হবে। ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে—এই দুটি সেতু যদি আমরা সম্পৃক্ত করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরো বাড়বে। ব্যাবসা বাণিজ্য বাড়বে, কর্মসংস্থান বাড়বে, মানুষের যোগাযোগ বাড়বে। আমাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, দেশের অভ্যন্তরীণ সুবিধা সবচেয়ে বড় বিষয়। এর আগে উত্তরবঙ্গে মঙ্গা লেগে থাকতো। আওয়ামী লীগ থেকে তখন আমরা সহযোগিতার জন্য যেতাম। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়াগায় দুর্ভিক্ষ লেগে থাকতো। যোগাযোগ হলে মানুষের অর্থনীতি সচল হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা বাসস এর আগে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে (ভার্চুয়ালি) ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল-লাইন ডুয়েল-গেজ বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা এরই মধ্যে সেতুর প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। নির্মাণ কাজের ইয়ার্ড এবং নিয়োগকর্তা-প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের জন্য স্থাপনা উন্নয়ন দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।

মূল সেতু দুটি প্যাকেজের অধীনে নির্মিত হবে। পূর্ব ও পশ্চিম অংশের নকশা ও অবকাঠামো কাজের জন্য যথাক্রমে জাপানের ওবায়াশি-টোয়া জেএফই এবং আইএইচআই-এসএমসিসি জেভির সঙ্গে পৃথক দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাইয়ে উভয় ঠিকাদারের কাছে জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। নতুন সেতুর ওপর দিয়ে ব্রডগেজ লাইনে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ লাইনটিতে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে রেল চলতে সক্ষম হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মিত হলে ৮৮টি রেল চলাচল করতে সক্ষম হবে। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

ঠিকাদারদের স্থানীয় কর্মীরা এখন নির্মাণের জায়গাটি প্রস্তুত করছে, সাইটটিকে বেড়া দিচ্ছেন এবং শ্রমিকদের আবাসন সুবিধা তৈরি করছেন। ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি ভূমি-সংক্রান্ত বিরোধ এরই মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে।

বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয় হাজার ৭৩৪ কোটি সাত লাখ টাকার অনুমোদিত প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সাত হাজার ৭২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে এবং দুই হাজার ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে আসবে।

এই ডুয়েলগেজ ডাবল-ট্র্যাক সেতুটি দেশের বৃহত্তম ডেডিকেটেড রেল সেতু হবে। সেতুটি রাজধানী ও দেশের পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে অধিক সংখ্যক রেল চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের (বিআর) সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। এটি রেলের যাতায়তের বিলম্ব কমাতেও সহায়তা করবে।

২০১৪ সালের ২৫ থেকে ২৮ মে টোকিও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের সঙ্গে সাক্ষাতকালে জাপানকে এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। পরে, ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে ঢাকা সফরে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি উত্থাপন করেন। খবরঃ বাসস।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.