করোনাভাইরাসঃ সংকটের মুখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ

0

সিটি নিউজঃ বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার পর স্বাস্থ্যখাত ও অর্থনীতি নিয়ে যেভাবে আলোচনা হয়েছে শিক্ষাখাত নিয়ে সেভাবে আলোচনা হয়নি। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও শিক্ষাখাতের সমস্যা বা বাস্তবতা নিয়ে তেমন কোন আলোচনা আমাদের চোখে পড়েনি। গত মার্চের পর থেকে শহর ছেড়ে অনেক পরিবার গ্রামে চলে গেছে। একইসাথে এসব পরিবারের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবনের ইতি টেনেছে। এই করোনা বাস্তবতায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষকও এই পেশা থেকে ঝরে পড়ছেন। এতে করে সংকটের মুখে পড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ।

শনিবার সকালে ‘করোনাকালে শিক্ষা বাস্তবতা ও ভবিষ্যতে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন হোসেন জিল্লুর রহমানের বাসভবনে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নগরী ও উপজেলার শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ছাড়াও সমাজকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষাখাত নিয়ে গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় ‘হালখাতা চট্টগ্রাম-৪’ প্রতিবেদন তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেগুলো হচ্ছে- করোনার প্রভাবে শিক্ষা জীবন ব্যাহত হয়েছে কিনা এবং তা কি পরিমাণ হয়েছে; শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং তা সবার জন্য কার্যকর হয়েছে কিনা; ভবিষ্যতে শিক্ষা কার্যক্রম কিভাবে হবে এবং এ নিয়ে নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা। এসব বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

তিনি এ কাজের জন্য উপস্থিত সবার সহযোগিতা কামনা করেন। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছে শিক্ষার্থীদের খুব সামান্য অংশ। গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে না। তবে যে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো, শুধুমাত্র যে সব পরিবারে গৃহশিক্ষক রাখার সক্ষমতা ছিল- তাদের কিছুটা পড়াশুনা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে নগরীর একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ছিল ১০৩ জন। কিন্তু সেখানে রেজিস্ট্রেশন করেছে ৯৪ জন। বাকি শিক্ষার্থীদের ফোন করে জানতে পারি, তাদের মধ্যে অনেকেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। আবার কেউ কেউ গ্রামে চলে গেছে।

ক্লাস ও পরীক্ষা যথাসময়ে না হওয়ায় শিক্ষাজীবন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত মার্চে আমাদের চতুর্থ বর্ষের ভাইভা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে এখনো সে পরীক্ষা হয়নি। ফলে অনার্স সম্পন্ন না হওয়ায় আমরা কোনো চাকুরির আবেদন করতে পারছি না। অন্য এক শিক্ষার্থী চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.