র‌্যাবের কাছে ৯ জঙ্গির আত্মসমর্পণ

0

সি টি নিউজ ডেস্কঃ ঢাকায় এক দম্পতিসহ ৯ জঙ্গি তাদের জঙ্গি মতাদর্শ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে জঙ্গি মতাদর্শ ছড়ানো ও প্রচার করে আসছিল।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারী) সকালে র‌্যাব সদর দপ্তরের আজাদ মেমোরিয়াল হলে এক দম্পতিসহ নয় তরুণ-তরুণীর একটি দল র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

রাজধানীতে র‍্যাব সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের উপস্থিতিতে তারা আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তাদের পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়।

আত্মসমর্পণ করা ওই নয়জনের মধ্যে দুজন নারী ও সাতজন পুরুষ। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তাদের কাউকে ছয় মাস, কাউকে দুই মাস ধরে অনুসরণ করে আসছিল র‍্যাব। তারা কেউ চিকিৎসক, কেউ তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, কেউ ছাত্র। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সের এই দলের কেউ জেএমবি, কেউ আনসার আল ইসলামের সদস্য হয়েছে। র‍্যাব জঙ্গি সেজেই তাদের সঙ্গে মেশে, পরে নজরদারিতে এনে তাদের পথটি যে ভুল, তা তাদের বোঝানো হয়। পরে তারা আত্মসমর্পণে রাজি হয়।

র‍্যাব বলছে, বিশ্বের অন্য দেশের মতো জঙ্গিদের সঠিক প্রক্রিয়ায় ডি-রেডিক্যালাইজেশন করে জঙ্গিবাদ থেকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন তারা। দীর্ঘ সময় কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাদের উগ্র আদর্শকে ধ্বংস করা হয়েছে। এমন নয়জন আজ আত্মসমর্পণ করে‌ছেন। এদের মধ্যে প্রকৌশলী-চিকিৎসক স্বামী-স্ত্রীসহ আছে নব্য ও পুরাতন জেএমবির সদস্যরা র‌য়ে‌ছেন। র‍্যাবের ভাষ্যমতে, উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িত প্রথম তিন ধাপের ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিয়েছেন তারা। যখন কেউ জঙ্গি বা উগ্রবাদী হয় তখন সে প্রথম দিনেই জঙ্গি হয়ে যায় না। পাঁচ ধাপ শেষ করে একজন ব্যক্তি পূর্ণ জঙ্গিতে পরিণত হয়। প্রথম ধাপে তারা ওই জঙ্গি সংগঠনের প্রতি সহমর্মিতা দেখায়। দ্বিতীয় ধাপে সে হয়ে যায় ওই সংগঠনের সমর্থক। তারপর সে হয় অ্যাক্টিভিস্ট।

এ পর্যায়ে সে বিভিন্ন কার্যকলাপে অংশ নেয়। চাঁদা আদায় করে, দাওয়াত দেয়। তারপর সে হয় এক্সট্রিমিস্ট। নিজের ভেতর উগ্রবাদ ধারণ করে। শেষপর্যায়ে গিয়ে সে পরিবার-জগত থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়। সে অস্বাভাবিক একটা জীবনযাপন শুরু করে। বায়াত গ্রহণ করে। আর যখন বায়াত গ্রহণ করে তারপর তারা জঙ্গিবাদে লিপ্ত হয়ে যায়। প্রথম তিন পর্যায়, সংগঠনের প্রতি সহমর্মিতা, সমর্থন, এবং অ্যাক্টিভিস্ট যারা আছেন, তাদের নিয়ে কাজ করছে র‍্যাব। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ফেরত আনার চেষ্টা করছে। মূলত সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় র‌্যাব তাদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে এখানে সফলতা পাওয়ার পর এটি স্থায়ী রূপ দিতে কাজ করছে র‌্যাব। সমাজে পুনর্বাসিত করার জন্য তাদের ডি-রেডিক্যালাইজেশন করবে। আর তার জন্য র‍্যাব সদস্য, শিক্ষক, আলেম-ওলামাদের নিয়ে একটা টিমও গঠন করেছে এই এলিট ফোর্স।

এতে অংশ নেন একাডেমিশিয়ান, ইসলামি স্কলার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.