চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে গুলিবিদ্ধ কলেজ ছাত্র হাবিবের মৃত্যু

0

চন্দনাইশ প্রতিনিধিঃ চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গোলাগুলির ঘটনা দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া কলেজ ছাত্র হাবিবুল ইসলাম ৮ দিন পর মারা গেছে।

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় হাবিব।

নিহত হাবিবুল ইসলাম পৌরসভার দক্ষিণ গাছবাড়িয়া শাহ মাছুম ফকির পাড়ার আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে বলে জানা যায়। সে গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র বলে জানিয়েছেন তার মা ছখিনা খাতুন।

উল্লেখ্য যে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গাছবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকেরা গোলাগুলির ঘটনা শুনে দেখতে গিয়ে হাবিবুল ইসলাম (১৮), আনজুমান আরা (৭০) গুলিবিদ্ধ হয়।

হাবিবকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

সেখানে দীর্ঘ ৮ দিন অজ্ঞান অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকাকালে আজ রবিবার তার মৃত্যু হয়। হাবিব এইচএসসি’র শিক্ষার্থী হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সচ্চলতার জন্য ফেরি ও রাজমিস্ত্রির সহকারি হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন তার মা। তার পিতা আনোয়ারুল ইসলাম পাহাড় থেকে কাঠ কেটে বিক্রি করে অতিকষ্টে সংসার চালাতেন। সম্প্রতি তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার অপর ছেলে মো. রাজিব রাজমিস্ত্রির কাজ করে দু’ভাইয়ের আয়ের উপর কোনভাবে চলছিল তাদের সংসার।

তাদের মা লবনের খাঁছা তৈরি করে সংসারে সহযোগিতা করেন। হাবিবের মা ছখিনা খাতুন পুত্র শোকে অনেকটা কাতর। সে আহাজারী করে বলছিল, তার ছেলে হাবিব তার সাথে ৭ নং ওয়ার্ডের পূর্ব চন্দনাইশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে দুপুরে মা’কে নিয়ে বাড়িতে আসে। ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গাছবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোলাগুলির শব্দ শুনে দেখতে গিয়ে সর্বল কাজী মাজার সংলগ্ন পুকুর পাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কের উপর পড়ে থাকে। তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৮ দিন অজ্ঞান অবস্থায় চিকিৎসা নিয়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হাবিব।

এ সময় দুবৃর্ত্তদের গুলিতে সর্বল কাজী বাড়ির মৃত আবদুস সোবহানের স্ত্রী আনজুমান আরা (৭০) ও গুলিবিদ্ধ হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, একজন কাউন্সিলরের সমর্থক হিসেবে দুবৃর্ত্তরা এসে এলোপাতাড়ি গোলাগুলি করে ত্রাসের সৃষ্টি করে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

হাবিব গুলিবিদ্ধ হলেও থানা পুলিশ কোন ধরনের তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছেন থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছির উদ্দীন সরকার। কেন্দ্রে এ ধরনের গোলাগুলির ঘটনাটি বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন রকম পদক্ষেপ গ্রহন না করায় সাধারণ মানুষের মাঝে বিষয়টি নিয়ে কৌতহলের জন্ম দিয়েছে।

তাছাড়া হাবিবের চিকিৎসার জন্য একটি মহল তাকে হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যায় এবং তার পরিবারকে এ ব্যাপারে আর্থিকভাবে সাহায্য করে ঘটনাটি ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে স্থানীয়রা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.