ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত
সিটি নিউজ ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদিবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশ, বিজিবির সাথে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে তারা নিহত হন। তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিহতরা হলেন নন্দনপুরের হারিয়া গ্রামের আবদুল লতিফ মিয়ার ছেলে জুরু আলম (৩৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবিড় মিয়ার ছেলে বাদল মিয়া (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মৈন্দ গ্রামের সুজন মিয়া (২২), বুধল গ্রামের আওয়াল মিয়ার ছেলে কাউসার মিয়া (২৫) ও জুবায়ের (১৪)। জুবায়েরের ঠিকানা জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে নন্দনপুর বাজার এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে মোদিবিরোধী আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পর্যায়ক্রমে ৫ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আবাসিক চিকিৎসক রানা নুরুস শামস সাংবাদিকদের জানান, এখন পর্যন্ত আহত হয়ে আসা ৫ জন মারা গেছেন।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইল উপজেলায় মাদরাসাছাত্র ও স্থানীয়দের বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে। এতে ক্যাম্পে থাকা ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ করে অরুয়াইল বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন মাদরাসাছাত্ররা। এতে স্থানীয় বাসিন্দারাও অংশ নেন। পরে মিছিল থেকে অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে অন্তত ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ হামলাকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরাইল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে গতকাল (শুক্রবার) পুলিশের গুলিতে আশিক (২৫)নামে এক যুবক মারা গেছেন। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলার সময় সে গুলিবিদ্ধ হয় মারা যান। এরপর মাদরাসাছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। বিকেলে কয়েকশ মাদরাসাছাত্র স্টেশনে এসে হামলা চালায়। এসময় তারা প্যানেল টিকিট কাউন্টার, প্যানেল বোর্ড ও যাত্রীদের চেয়ার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সিটি নিউজ/ডিটি