চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় বাড়ল ৭ মে পর্যন্ত

0

সিটি নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা ৩০ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।  এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগ্রহী শিক্ষার্থীরা ৭ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে চবিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর টাকা জমা দেওয়া যাবে ৯ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে চবি ডিনস কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রেজিস্ট্রার মনিরুল বলেন, সরকার আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে নির্ধারিত সময়ে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারিনি। সার্ভারেও সমস্যা ছিল। সবকিছু বিবেচনা করে আবেদনের সময় এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম জানান, অনলাইনে ভর্তি আবেদন শুরুর পর থেকে বুধবার রাত সোয়া ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪০৫ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৬ হাজার ৬৫৩, ‘বি’ ইউনিটে ৩৮ হাজার ২৫, ‘বি-১’ ইউনিটে ২ হাজার ৮৩১, ‘সি’ ইউনিটে ১২ হাজার ৫৯, ‘ডি’ ইউনিটে ৪৬ হাজার ৯৬৬ ও ‘ডি-১’ ইউনিটে ৩ হাজার ৮৭১ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮টি বিভাগ ও ছয়টি ইনস্টিটিউটে আসন রয়েছে ৪ হাজার ৯২৬টি। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ১ হাজার ২১২টি, ‘বি’ ইউনিটে ১ হাজার ২২১টি, ‘সি’ ইউনিটে ৪৪১টি, ‘ডি’ ইউনিটে ১ হাজার ১৬০টি, ‘বি-১’ উপইউনিটে ১২৫টি ও ‘ডি-১’ উপইউনিটে ৩০টি আসন আছে।

এর আগে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৫ এপ্রিল থেকে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। সারাদেশে বিধিনিষেধ জারি করায় আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়।  পরে ১২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় চবি উপাচার্য দফতর সম্মেলন কক্ষে ভর্তি কার্যক্রম অনলাইনে উদ্বোধন করা হয়।

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ইউনিট/উপইউনিটে আবেদন ফি ৫৫০ টাকা, আবেদন প্রসেসিং ফি ১০০ টাকাসহ সর্বমোট ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত আবেদন ফি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেট অথবা বিকাশ-এর মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। ভর্তিচ্ছুদের চবি’র ভর্তির ওয়েবসাইটের (https://admission.cu.ac.bd) মাধ্যমে প্রচারিত অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় বসতে সর্বমোট চারটি ইউনিট ও দু’টি উপইউনিটে আবেদন করতে ন্যূনতম যোগ্যতা আগের চেয়ে শূন্য দশমিক ৫০ বাড়ানো হয়েছে। বহুনির্বচনি পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০।

ভর্তি পরীক্ষার রুটিন

‘এ’ ইউনিটে ২৮ ও ২৯ জুন, ‘বি’ ইউনিটে ২২ ও ২৩ জুন, ‘সি’ ইউনিটে ৩০ জুন, ‘ডি’ ইউনিটে ২৪ ও ২৫ জুন, ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটে ১ জুলাই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

আবেদনের যোগ্যতা
বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ এবং সমুদ্রবিজ্ঞান ও মৎসবিদ্যা অনুষদের সমন্বয়ে গঠিত ‘এ’ ইউনিটে’ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৮.০০। প্রতিটি পরীক্ষায় আলাদাভাবে জিপিএ ৪.০০ থাকতে হবে।

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ‘বি’ ইউনিট’ ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য মোট জিপিএ ৮.০০ ও প্রতিটিতে নূন্যতম জিপিএ-৩.২৫ থাকতে হবে। তবে মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য মোট জিপিএ ৭.৫০ এবং প্রতিটিতে নূন্যতম জিপিএ ২.৭৫ থাকতে হবে। আর ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য দুই পরীক্ষা মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৮.০০ এবং প্রতিটিতে নূন্যতম জিপিএ ৩.২৫ থাকতে হবে।

‘বি১’ উপইউনিটের অধীনে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ অধিভুক্ত চারুকলা ইনিস্টিউট, নাট্যকলা বিভাগ ও সংগীত বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের জন্যও একই যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ‘সি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৮.০০ এবং প্রতিটিতে আলাদাভাবে জিপিএ ৪.০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ (আংশিক) ও জীববিজ্ঞান অনুষদের দু’টি বিভাগের (আংশিক) সমন্বিত ‘ডি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এখানে আবেদনের যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে মোট জিপিএ ন্যূনতম ৭.৫০ এবং প্রতিটিতে নূন্যতম জিপিএ-৩.৫০ নির্ধারণ করা হয়েছে।

‘ডি১’ উপ-ইউনিটের অধীনে শিক্ষা অনুষদের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে মোট জিপিএ ৭.৫০ এবং প্রতিটিতে আলাদাভাবে জিপিএ ৩.৫ নির্ধারণ করা হয়েছে।

কোন ইউনিটে কোন বিভাগ
‘এ’ ইউনিটে রয়েছে বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ চারটি অনুষদ। এই ইউনিটের অধীন বিভাগগুলো হলো— রসায়ন, পরিসংখ্যান, গণিত, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, পদার্থবিদ্যা, ফার্মেসি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়ো টেকনোলজি, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রণিবিদ্যা, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা, মনোবিজ্ঞান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ, মাইক্রোবায়োলজি, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউট, পরিবেশ বিজ্ঞান, ফিশারিজ, ওশোনোগ্রাফি, মেরিন সায়েন্স। কেবল বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই এই ইউনিটে আবেদন করতে পারবেন।

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ (‘বি’ ইউনিট) উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এই ইউনিটের অধীন বিভাগগুলো হলো— পালি, সংস্কৃত, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, আধুনিক ভাষা শিক্ষা, বাংলাদেশ স্টাডিজ, বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, দর্শন। তবে সংগীত, চারুকলা ও নাট্যকলা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে ‘বি-১’ উপ ইউনিটে আবেদন করতে হবে।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ (‘সি’ ইউনিট) উচ্চ মাধ্যমিকের বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। বিভাগগুলো হলো— হিউম্যান রিসোর্চ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, অ্যাকাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, ফাইন্যান্স, মার্কেটিং।

সব গ্রুপের শিক্ষার্থীরা (সমন্বিত ‘ডি’ ইউনিট) পরীক্ষা দিতে পারবেন। এই ইউনিটের অধীন বিষয়গুলো হলো— অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, সমাজতত্ত্ব, রাজনীতি বিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, নৃবিজ্ঞান, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স, আইন বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসনের সব বিভাগ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগ।

এছাড়াও শিক্ষা অনুষদভুক্ত শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ (‘ডি-১’ উপইউনিট) সব গ্রুপের আগ্রহী শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে আবেদন করতে হবে।

সিটি নিউজ/এসআরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.