সামাজিক সুরক্ষায় নতুন গরিবদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়ার আহবান-পিপিআরসি

0

সিটি নিউজ :  মহামারীকালে সৃষ্ট নতুন দরিদ্ররা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাস্তবতায় উদ্ভাবনী নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে অগ্রাধিকার দিতে হবে। নতুন দরিদ্রদের সরকার নানাভাবে সহায়তা করলেও তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেয়নি। চলমান এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় এসব কর্মসূচি সামাজিক সুরক্ষা খাতের মূলধারায় নিয়ে আসা দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

শুক্রবার (২৪ জুন) সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে শুরু গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) আয়োজিত ‘কভিডের প্রভাব ও সামাজিক সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক আঞ্চলিক নীতি ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ওয়েবিনারের বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বের প্রায় সবখানেই নগর দরিদ্ররা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে পিছিয়ে আছে।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, নগর দরিদ্রদের আয়ের সুযোগ বেশি হলেও শিশুশিক্ষা, পুষ্টি ও টিকাদানে তারা পিছিয়ে আছে। অন্যদিকে গ্রামীণ দরিদ্রদের আয় কম হলেও সামাজিক সূচকে তারা এগিয়ে। কারণ নগরের মেসো (অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত) অর্থনীতিতে বিপুল কর্মসংস্থান। জিডিপির বড় একটি অংশের জোগান এরাই দিচ্ছে। তাই এই খাতের উন্নয়ন ছাড়া এই মানুষের জীবনে স্থিতিশীলতা আসবে না।

হোসেন জিল্লুর আরো জানান,সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হলো, শহরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় বেড়েছে ৯৮ শতাংশ। এতে মানুষের ঋণ বেড়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব শামসুল আলম বলেন, সব দরিদ্রদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থাকা উচিত। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, নগরে কাজের সুযোগ বেশি, তাই নগরের দরিদ্রদের জন্য আলাদাভাবে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি করা হয় না। আরেকটি কারণ হলো, এতে গ্রামের মানুষের নগরে আসার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। দেশে জাতীয় তথ্যভাণ্ডার নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে দরিদ্র মানুষের তালিকা প্রণয়নে এনজিওগুলো সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, কার কী সমস্যা, তা চিহ্নিত করে সহায়তা করা কঠিন হলেও সেটাই সবচেয়ে কাজের। যেসব পরিবার এককভাবে প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল, তাদের আয় ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এ বাস্তবতায় ব্র্যাক অনেক পরিবারকে ছোট ব্যবসা স্থাপনে সহায়তা করেছে।এছাড়া ৩ লাখ ১৫ হাজার পরিবারকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে নগদ সহায়তা দিয়েছে ব্র্যাক।

নেপাল ও পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদেরা কোভিডের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে আলোকপাত করেন। ইউনিসেফ নেপালের সামাজিক নীতি বিভাগের প্রধান উষা মিশ্র বলেন, নেপালে নতুন দরিদ্রদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। তবে বিদ্যমান সুরক্ষা কর্মসূচির আকার অনেকাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে বিদ্যুতের মতো পরিষেবায় সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। এতে মানুষ উপকৃত হচ্ছে।

ওয়েবিনারে তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও পিপিআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান, ড.হোসেন জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. শামসুল আলম-জিইডি সদস্য (সিনিয়র সচিব), বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন,উগো জেন্টিলিনি-সামাজিক সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব,বিশ্বব্যাংক, কাজি আজমত ইসা- সিইও,পাকিস্তান দারিদ্র্য বিমোচন তহবিল, ঊষা মিশ্র- সামাজিক নীতি, প্রমাণ ও মূল্যায়ন প্রধান নেপাল, আসিফ সালেহ- নির্বাহী পরিচালক, ব্র্যাক বাংলাদেশ।
সিটি নিউজ/ জি.এস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.